বাংলারজমিন

রবি’র ১৪ শিক্ষার্থীর চুল কর্তন

প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত কমিটি সেই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

২৬ অক্টোবর ২০২১, মঙ্গলবার, ৮:৩২ অপরাহ্ন

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের একে একে ১৪ জন শিক্ষার্থীর চুল কেটে দেয়ার প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত কমিটি। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষক ফারহানা ইয়াসমিনকে অভিযুক্ত করে তার বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করেছে কমিটি।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২৬শে সেপ্টেম্বর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষা হলে প্রবেশপথে অভিযুক্ত শিক্ষক ফারহানা ইয়াসমিন নিজ হাতে ১৪ শিক্ষার্থীর চুল কেটে দেন। এদিকে শিক্ষক ফারহানাকে স্থায়ীভাবে বরখাস্তের দাবিতে আবারো তিনদিন যাবৎ উত্তাল হয়ে উঠেছে রবি’র ক্যাম্পাস। রোববার সকালে সিরাজগঞ্জ পৌর শহরের বিসিক মোড় এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পাসের একাডেমিক ভবন ও কান্দাপাড়া এলাকায় প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়ে বাইরে অবস্থান নেন তারা। এ সময় দুপুর ২টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে রেজিস্ট্রারসহ ৩০ জন শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী একাডেমিক ভবন-১ এ অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। এতে ৮ ঘণ্টা ধরে একটি ভবনে অবরুদ্ধ ছিলেন ৩০ জন শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারী। পরে পুলিশের সহযোগিতায় অবরুদ্ধ থেকে মুক্ত হন শিক্ষক- কর্মচারীরা। দুপুরের দিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র শামীম হোসেন বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। তাকে শাহজাদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যদিকে একই বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র আবিদ হাসান নামের আরেক ছাত্র ব্লেড দিয়ে হাত কেটে আত্মহত্যার চেষ্টা করলে অন্যেরা তাকে নিবৃত্ত করেন। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের বিষয়ে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের রুটিন দায়িত্বে থাকা কোষাধ্যক্ষ আবদুল লতিফ বলেন, রেজিস্ট্রার নিজে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সার্বিক বিষয় নিয়ে কথা বলছেন। আমরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনার চেষ্টা করছি।
প্রসঙ্গত, গত ২৬শে সেপ্টেম্বর রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের প্রথম বর্ষের ১৪ শিক্ষার্থীকে জোর করে চুল কেটে দেয়ার অভিযোগ ওঠে শিক্ষক ফারহানা ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে। এর প্রতিবাদে ২৮শে সেপ্টেম্বর থেকে শিক্ষার্থীরা সব পরীক্ষা বন্ধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। ৩০শে সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ফারহানাকে সাময়িক বরখাস্ত করে। এই ঘটনার তদন্তের জন্য রবীন্দ্র অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান লায়লা ফেরদৌসকে চেয়ারম্যান করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কমিটি সরজমিন তদন্ত করে গত বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার সোহরাব আলীর কাছে প্রতিবেদন জমা দেয়। তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২৬শে সেপ্টেম্বর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষা হলে প্রবেশপথে অভিযুক্ত শিক্ষক ফারহানা ইয়াসমিন নিজ হাতে ১৪ শিক্ষার্থীর চুল কেটে দেন। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন সম্পর্কে জানতে অভিযুক্ত শিক্ষক ফারহানা ইয়াসমিনের বক্তব্য নেয়ার জন্য একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তদন্ত প্রতিবেদনের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার সোহরাব আলী মানবজমিনকে বলেন, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পেয়ে গত শুক্রবার সিন্ডিকেট সভা ডাকা হয়েছিল। সেখানে আইনগত বিষয়গুলো পর্যালোচনার জন্য ১০ কার্যদিবস সময় নিয়ে সভা মুলতবি করা হয়েছে। এ ছাড়া ২৭শে অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) একটি তদন্ত দল বিষয়টি তদন্ত করতে ক্যাম্পাসে আসবে। তারপর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এদিকে ৩য় দিনের মতো আবারো ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়ে বসে আছে শিক্ষার্থীরা।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status