অনলাইন

পাচার করা অর্থ ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে নীরবতা নিয়ে হাইকোর্টের প্রশ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

২৪ অক্টোবর ২০২১, রবিবার, ৯:২৭ অপরাহ্ন

দেশ থেকে পাচার করা অর্থ ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন হাইকোর্ট। রোববার ১৪ জন বিবাদীর মধ্য থেকে পুলিশের মহাপরিদর্শকের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে হলফনামা আকারে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। অন্য বিবাদীরা প্রতিবেদন জমা না দেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট।

এর আগে গত ২৮শে ফেব্রুয়ারি বিদেশি ব্যাংকে রাখা পাচার করা অর্থ ফিরিয়ে আনতে কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে, একইসঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নাম ঠিকানা জানাতে বিবাদীদের নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।

বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি এস এম মজিবুর রহমান সমন্বয়ে গঠিত ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চে রোববার শুনানি হয়। এ সময় রাষ্ট্রপক্ষের উদ্দেশে আদালত বলেন, গত ২৮শে ফেব্রুয়ারি রুল দেয়া হয়। এত দিন হয়ে যাচ্ছে। রুলের আদেশটাই যদি বাস্তবায়ন না করেন, তাহলে আর কী বলব? কোনো ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না। এটা কোনো কথা হলো না। সবাই ঘুমিয়ে পড়েছে? এ বিষয়গুলো নিয়ে তো আমাদের ভাবতে হবে, শিখতে হবে। শুধু আসলাম আর গেলাম- তা তো নয়। দেশ ও জাতির জন্য তো কিছু করা দরকার, কিছু করতে হবে। আপনার ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্যই আপনাকে করতে হবে। শুধু সরকারই করবে- এমন তো নয়, সরকারকে সহযোগিতা করা আমাদের দায়িত্ব।

বাংলাদেশের বিভিন্ন ব্যক্তি ও কোম্পানি পাচারের মাধ্যমে বিদেশি ব্যাংকগুলো, বিশেষত সুইস ব্যাংকে গোপনে জমা রাখা বিপুল অর্থ উদ্ধারে অবিলম্বে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা চেয়ে গত ১লা ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আবদুল কাইয়ুম খান ও সুবীর নন্দী দাস ওই রিট আবেদন করেন। রিটের শুনানি নিয়ে গত ২৮শে ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট কয়েকটি বিষয়ে রুলসহ আদেশ দেন। এরপর পুলিশের মহাপরিদর্শকের (আইজিপি) পক্ষ থেকে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) তথ্যাদিসংবলিত প্রতিবেদন হলফনামা আকারে রোববার আদালতে দাখিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আবদুল কাইয়ুম খান। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আমিন উদ্দিন মানিক।

সিআইডির প্রতিবেদনে দেখা যায়, অর্থ পাচারের সাত মামলায় ১২ ব্যক্তি ও একটি প্রতিষ্ঠান এবং অজ্ঞাতনামা ৪৫ জনের কথা উল্লেখ রয়েছে। সাবেক যুবলীগ নেতা ইসমাইল চৌধুরী ওরফে সম্রাটসহ ১২ ব্যক্তি ও একটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ৩১০ কোটি ৮০ লাখ ১৪ হাজার ৭৪৮ টাকা বিদেশে পাচারের তথ্য রয়েছে প্রতিবেদনে। বলা হয়, মামলাগুলো তদন্তাধীন। এ ছাড়া ২০১৬ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির মামলার অগ্রগতি তুলে ধরে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অজ্ঞাত হ্যাকাররা ১০১ মিলিয়ন ডলার হাতিয়ে নেয়। তার মধ্যে ফিলিপাইন ও শ্রীলঙ্কা থেকে ৩৪.৬১ মিলিয়ন ডলার উদ্ধার করা হয়েছে।

শুনানির শুরুতে আদালত বলেন, হলফনামা আকারে একটি প্রতিবেদন (কমপ্লায়েন্স) দেয়া হয়েছে, যেখানে ৮টি কেস শনাক্ত করা হয়েছে। রুল ও অন্তর্র্বতীকালীন আদেশ পড়ে শুনিয়ে রিট আবেদনকারী আইনজীবী আবদুল কাইয়ুম খান বলেন, শুধু পুলিশের মহাপরিদর্শক (১৪ নম্বর বিবাদী) থেকে হলফনামা আকারে প্রতিবেদন এসেছে। রুলের জাবাবও দেয়া হয়নি। রাষ্ট্রপক্ষের উদ্দেশে আদালত বলেন, এই আদালত বিবাদীদের ‘কমপ্লায়েন্স’ দিতে নির্দেশ দিয়েছিল। রিটে ১৪ বিবাদী আছেন। পুলিশের মহাপরিদর্শক ছাড়া কেনো বিবাদী প্রতিবেদন দেননি। অন্যরা নীরব কেন? কেন তারা আদালতের আদেশ প্রতিপালন করেননি?

পরে আদালত হলফনামা আকারে পুলিশের মহাপরিদর্শকের দাখিল করা প্রতিবেদন গ্রহণ করে ২১শে নভেম্বর পরবর্তী দিন রাখেন। এই সময়ের মধ্যে অপর বিবাদীদের প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দেয়া হয়।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status