শেষের পাতা

দ্বিতীয় পরীক্ষা আজ

গুচ্ছ পরীক্ষা নিয়ে একগাদা অভিযোগ

পিয়াস সরকার

২৪ অক্টোবর ২০২১, রবিবার, ৯:৩৭ অপরাহ্ন

ফাইল ছবি

৪১৮ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে পরীক্ষা দিতে গেছেন উম্মে জান্নাত। রংপুর থেকে বাবার সঙ্গে গেছেন গোপালগঞ্জে। রংপুরের আশেপাশে পরীক্ষায় অংশ নেয়ার ইচ্ছা পোষণ করলেও তার সিট পড়েছে ভিন্ন বিভাগে।

শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি নিরসনে গুচ্ছ পদ্ধতিতে সমন্বিত পরীক্ষার আয়োজন করে ২০ সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। প্রথমবারের মতো এই পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি লাঘব হলেও আছে নানা অভিযোগ। ১৭ই অক্টোবর বিজ্ঞান বিভাগের ‘ক’ পরীক্ষা দিয়ে যাত্রা শুরু হয় গুচ্ছ পরীক্ষার। আজ রোববার অনুষ্ঠিত হবে মানবিক বিভাগের ‘খ’ পরীক্ষা। যাতে অংশ নেবেন ৬৭ হাজার ১১৭ পরীক্ষার্থী। ভর্তির সুযোগ পাবেন ৬ হাজার ১২৯ শিক্ষার্থী। একেকটি সিটের বিপরীতে লড়বেন নয়জন পরীক্ষার্থী। সব ইউনিট মিলে এক সিটের বিপরীতে লড়ছেন ১১ জন পরীক্ষার্থী। বাণিজ্য বিভাগের ‘গ’ পরীক্ষা হবে ১লা নভেম্বর।

সম্প্রতি প্রকাশ করা হয়েছে বিজ্ঞান বিভাগের ফল। তরশা রহমান বলেন, পরীক্ষা শেষে মিলিয়ে দেখি আমার পাওয়ার কথা ৪১.৭৫ কিন্তু পেয়েছি ৩১.৫। ইংরেজিতে পাবার কথা ৮ কিন্তু পেয়েছি ৫। গণিতে ৫ পাবার কথা থাকলেও পেয়েছি ০।

ফলাফলের অসন্তোষের বিষয়ে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার আয়োজক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, পরীক্ষার্থীদের ফল পুনঃনিরীক্ষার সুযোগ দেয়া হবে। এর জন্য অফেরতযোগ্য এক হাজার টাকা ফি দিতে হবে।

ভোগান্তি অনেকাংশে লাঘব হলেও অসন্তোষ আছে শুরু থেকেই। দাবি আদায়ে রাজপথ থেকে আদালতের দ্বারস্থও হয়েছেন শিক্ষার্থীরা। রাহুল রায় নামে কুমিল্লার এক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা অটোপাস পেয়েছি। আমাদের মেধার মূল্যায়ন হয় নাই। বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রহসন করা হয়েছে। প্রথমে বিজ্ঞানে জিপিএ সাত থেকে বাড়িয়ে আট চাওয়া হলো। এরপরও সিলেকশনের মাধ্যমে স্বল্প সংখ্যক শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় বসতে দেয়া হলো না। আমার প্রশ্ন অটোপাস পাওয়া শিক্ষার্থীদের হয়নি মেধার মূল্যায়ন- এরপর কেন তারা সিলেকসন পদ্ধতিতে গেল?

আশিকুর রহমান জয়, রংপুরের এই শিক্ষার্থী বলেন, বিভাগ পরিবর্তনকারী ইউনিট হঠাৎ করে বাদ দেয়া হলো। আমরা যারা ডি ইউনিটের প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম হঠাৎ সিদ্ধান্তে তাদের বঞ্চিত করা হলো না? আবার পাস-ফেলের কোনো ব্যবস্থা রাখা হলো না। মেধার যাচাই করবেন তারা কি করে? বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের ফল নিয়েও আছে প্রশ্ন। সেখানে খাতা পুনঃনিরীক্ষার জন্য ফি রাখা হবে এক হাজার টাকা। আবার প্রথমে আবেদন ফি ধরা হলো ৬০০ টাকা। এরপর হঠাৎ বাড়িয়ে করা হলো ১২০০ টাকা। ভার্সিটিতে ভর্তি ইচ্ছুকদের আবার ফি দিতে হবে।

সাজিয়া মাসুদ নামে দিনাজপুরের এক শিক্ষার্থী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের রিকোয়ারমেন্টগুলো কেন পরীক্ষার পর দেয়া হলো। অনেকেরই তো বিশ্ববিদ্যালয় ভেদে পছন্দ থাকতে পারে। এটা আগে জানলে আমরা সেভাবে প্রস্তুতি ও পরীক্ষা দিতাম।

রাজধানীর শিক্ষার্থী সামিয়া তাসনিম রাফি বলেন, গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় যেহেতু একবার সুযোগ আর এক পরীক্ষায় যেহেতু ২০ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাগ্য পরীক্ষা। দ্বিতীয়বারের সুযোগ আমরা চাই। আর পরীক্ষাগুলো কর্মদিবসে ফেলা হলো কেন? যানজটের মাঝে ফেলার জন্য?

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা সংক্রান্ত টেকনিক্যাল কমিটির আহ্বায়ক ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মুনাজ আহমেদ নূর বলেন, ৯৮ শতাংশ শিক্ষার্থী সন্তুষ্ট। আমাদের প্রক্রিয়া ঠিকমতো চলমান রাখবার চেষ্টা করছি। এই ভর্তি পরীক্ষার কার্যক্রমে কিছু শিক্ষার্থীর মনমতো হয়নি। কিন্তু তাদের সংখ্যা হয়ত ২ শতাংশ। সার্বিকভাবে আমি মনে করি সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা এগুচ্ছে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status