বিশ্বজমিন
আসিয়ানের সিদ্ধান্তে মিয়ানমারে সামরিক জান্তার ক্ষোভ
মানবজমিন ডেস্ক
২৩ অক্টোবর ২০২১, শনিবার, ১২:০৬ অপরাহ্ন
আসিয়ান সম্মেলনে অরাজনৈতিক নেতৃত্বকে আমন্ত্রণ জানানোর সিদ্ধান্ত নেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা। কে হবেন মিয়ানমারের সেই অরাজনৈতিক প্রতিনিধি, তা এখনও স্পষ্ট জানা যায়নি। আগামী ২৬ থেকে ২৮ শে অক্টোবর ব্রুনাইয়ে হতে যাচ্ছে ১০ সদস্য বিশিষ্ট এসোসিয়েশন অব সাউথইস্ট এশিয়ান নেশন্সের (আসিয়ান) বার্ষিক সম্মেলন। মিয়ানমার এর সদস্য হওয়া সত্ত্বেও জোর করে ক্ষমতায় আসা সামরিক জান্তাকে এতে আমন্ত্রণ না জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আসিয়ান নেতারা। এতে ক্ষোভ জানিয়ে শুক্রবার বিবৃতি দিয়েছে সামরিক জান্তা সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তাতে বলা হয়েছে, আসিয়ানের অন্য ১০টি সদস্য যেসব অধিকার ভোগ করে, সম্মেলনে যোগ দেয়ার অধিকার ভোগ করে, মিয়ামনারের সরকার প্রধানেরও সেই সমান অধিকার আছে। এতে আরো বলা হয়েছে, আসিয়ান সনদের বিধিবিধান, উদ্দেশ্য ও লালিত নীতির বিরুদ্ধে যেকোনো আলোচনা এবং সিদ্ধান্ত মেনে নেবে না মিয়ানমার। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা।
গত ১লা ফেব্রুয়ারি অং সান সুচির বেসামরিক সরকারকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করে সিংহাসনে বসে সেনাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লাইং। তিনি নিজেকে দেশের শাসক ঘোষণা দিয়ে বসেন। তখনকার স্টেট কাউন্সেল অং সান সুচি, তার প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টসহ এমপি, রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের আটক করে জান্তা সরকার। একের পর এক মামলা দিতে থাকে সুচির বিরুদ্ধে। এর প্রতিবাদে জেগে ওঠেন মিয়ানমারের গণতন্ত্রকামী মানুষ। তারা সংঘবদ্ধ হয়ে সামরিক জান্তার বিরোধিতায় মাঠে নামেন। এতে নিরাপত্তা রক্ষাকারীদের গুলিতে কমপক্ষে এক হাজার বেসামরিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। জাতিসংঘের হিসাবে আরো বলা হয়েছে, এ সময়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে হাজার হাজার মানুষকে। এর প্রেক্ষিতে সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক পর্যায় থেকে নিন্দার ঝড় বইতে থাকে। চাপ আসতে থাকে। সামরিক সরকারের নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অবরোধ দেয় যুক্তরাষ্ট্র। তার সঙ্গে সর্বশেষ যুক্ত হয়েছে আসিয়ানের অবস্থান। তারা কার্যত আসিয়ান সম্মেলনে মিয়ানমারের সামরিক জান্তার কোনো প্রতিনিধিকে আমন্ত্রণ না জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কারণ, গত এপ্রিলে মিয়ানমার আসিয়ানে যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সহিংসতা বন্ধে পদক্ষেপ নেয়া। মানবিক সহায়তা দেয়ার পথ উন্মুক্ত করা এবং বিরোধীদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করা। এর মধ্যে কোনোটিই বাস্তবায়ন করেনি সামরিক জান্তা।
ফলে গত সপ্তাহে আসিয়ানের আসন্ন সম্মেলন নিয়ে জোটের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা জরুরি বৈঠকে বসেন। তাতেই সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হয়- মিয়ানমারের সামরিক জান্তার কোনো প্রতিনিধিকে আমন্ত্রণ জানানো হবে না। আমন্ত্রণ জানানো হবে অরাজনৈতিক প্রতিনিধিকে। আসিয়ানের মূলমন্ত্র এক দেশ অন্য দেশের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবে না- হলেও গ্রুপটি এমন পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের ওই বৈঠকের পর মিয়ানমারের সামরিক জান্তা বলেছে, এই সিদ্ধান্ত আসিয়ানের দীর্ঘদিনের আচরিত নীতিবিরোধী।
ওদিকে মিয়ানমারে মানবাধিকার বিষয়ক জাতিসংঘের স্পেশাল র্যাপোর্টিউর টম অ্যানড্রুজ জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের কাছে আর্জি জানিয়েছেন। বলেছেন, মিয়ানমারের সামরিক জান্তার অর্থ, অস্ত্র এবং বৈধতাকে জিম্মি করে রাখা উচিত। তাদের কর্মকা-কে অস্বীকার করা উচিত। মিয়ানমারের কাছে অস্ত্র বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়ার একটি রেজ্যুলুশন পাস করাতে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। আরো বলেন, এসব পদক্ষেপ নেয়া জরুরি। কারণ, অস্ত্র এবং প্রযুক্তির দ্বৈত ব্যবহারের ফলে জান্তা সরকারের কাছে অস্ত্র বিক্রি হচ্ছে এবং তা তাদের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে। এ ছাড়া মিয়ানমারের তেল ও গ্যাস বিষয়ক উদ্যোক্তাদের বিরুদ্ধে অবরোধ দেয়ার আহ্বান জানান টম অ্যানড্রুজ। তিনি উল্লেখ করেন, এসব খাত থেকে সামরিক সরকারের কাছে সবচেয়ে বড় অংকের রাজস্ব আসছে। সতর্কতা দিয়ে তিনি আরো বলেন, মিয়ানমারে আরো রক্তপাত হওয়ার আশঙ্কা আছে। কারণ, সরকার দেশটির উত্তরাঞ্চলে হাজার হাজার সেনা সদস্য, ভারি অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম পাঠাচ্ছে। ওই অঞ্চলে সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করছে বিদ্রোহীরা। তাদেরকে শায়েস্তা করতে এমন উদ্যোগ নিয়েছে সামরিক জান্তা। তার ভাষায়, দুর্ভাগ্যজনক হলো আমরা আরেকটি ভয়াবহ বিপর্যয়ের দ্বারপ্রান্তে। এতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নিরপরাধ মানুষের প্রাণ যেতে পারে। ব্যাপকভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন হতে পারে। একই সঙ্গে চিন এবং কায়া রাজ্যে সেনাবাহিনীর এই অগ্রযাত্রার বিষয়ে সতর্ক করেছে বিরোধীদের সরকার ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট (এনইউজি)।
গত ১লা ফেব্রুয়ারি অং সান সুচির বেসামরিক সরকারকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করে সিংহাসনে বসে সেনাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লাইং। তিনি নিজেকে দেশের শাসক ঘোষণা দিয়ে বসেন। তখনকার স্টেট কাউন্সেল অং সান সুচি, তার প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টসহ এমপি, রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের আটক করে জান্তা সরকার। একের পর এক মামলা দিতে থাকে সুচির বিরুদ্ধে। এর প্রতিবাদে জেগে ওঠেন মিয়ানমারের গণতন্ত্রকামী মানুষ। তারা সংঘবদ্ধ হয়ে সামরিক জান্তার বিরোধিতায় মাঠে নামেন। এতে নিরাপত্তা রক্ষাকারীদের গুলিতে কমপক্ষে এক হাজার বেসামরিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। জাতিসংঘের হিসাবে আরো বলা হয়েছে, এ সময়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে হাজার হাজার মানুষকে। এর প্রেক্ষিতে সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক পর্যায় থেকে নিন্দার ঝড় বইতে থাকে। চাপ আসতে থাকে। সামরিক সরকারের নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অবরোধ দেয় যুক্তরাষ্ট্র। তার সঙ্গে সর্বশেষ যুক্ত হয়েছে আসিয়ানের অবস্থান। তারা কার্যত আসিয়ান সম্মেলনে মিয়ানমারের সামরিক জান্তার কোনো প্রতিনিধিকে আমন্ত্রণ না জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কারণ, গত এপ্রিলে মিয়ানমার আসিয়ানে যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সহিংসতা বন্ধে পদক্ষেপ নেয়া। মানবিক সহায়তা দেয়ার পথ উন্মুক্ত করা এবং বিরোধীদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করা। এর মধ্যে কোনোটিই বাস্তবায়ন করেনি সামরিক জান্তা।
ফলে গত সপ্তাহে আসিয়ানের আসন্ন সম্মেলন নিয়ে জোটের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা জরুরি বৈঠকে বসেন। তাতেই সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হয়- মিয়ানমারের সামরিক জান্তার কোনো প্রতিনিধিকে আমন্ত্রণ জানানো হবে না। আমন্ত্রণ জানানো হবে অরাজনৈতিক প্রতিনিধিকে। আসিয়ানের মূলমন্ত্র এক দেশ অন্য দেশের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবে না- হলেও গ্রুপটি এমন পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের ওই বৈঠকের পর মিয়ানমারের সামরিক জান্তা বলেছে, এই সিদ্ধান্ত আসিয়ানের দীর্ঘদিনের আচরিত নীতিবিরোধী।
ওদিকে মিয়ানমারে মানবাধিকার বিষয়ক জাতিসংঘের স্পেশাল র্যাপোর্টিউর টম অ্যানড্রুজ জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের কাছে আর্জি জানিয়েছেন। বলেছেন, মিয়ানমারের সামরিক জান্তার অর্থ, অস্ত্র এবং বৈধতাকে জিম্মি করে রাখা উচিত। তাদের কর্মকা-কে অস্বীকার করা উচিত। মিয়ানমারের কাছে অস্ত্র বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়ার একটি রেজ্যুলুশন পাস করাতে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। আরো বলেন, এসব পদক্ষেপ নেয়া জরুরি। কারণ, অস্ত্র এবং প্রযুক্তির দ্বৈত ব্যবহারের ফলে জান্তা সরকারের কাছে অস্ত্র বিক্রি হচ্ছে এবং তা তাদের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে। এ ছাড়া মিয়ানমারের তেল ও গ্যাস বিষয়ক উদ্যোক্তাদের বিরুদ্ধে অবরোধ দেয়ার আহ্বান জানান টম অ্যানড্রুজ। তিনি উল্লেখ করেন, এসব খাত থেকে সামরিক সরকারের কাছে সবচেয়ে বড় অংকের রাজস্ব আসছে। সতর্কতা দিয়ে তিনি আরো বলেন, মিয়ানমারে আরো রক্তপাত হওয়ার আশঙ্কা আছে। কারণ, সরকার দেশটির উত্তরাঞ্চলে হাজার হাজার সেনা সদস্য, ভারি অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম পাঠাচ্ছে। ওই অঞ্চলে সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করছে বিদ্রোহীরা। তাদেরকে শায়েস্তা করতে এমন উদ্যোগ নিয়েছে সামরিক জান্তা। তার ভাষায়, দুর্ভাগ্যজনক হলো আমরা আরেকটি ভয়াবহ বিপর্যয়ের দ্বারপ্রান্তে। এতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নিরপরাধ মানুষের প্রাণ যেতে পারে। ব্যাপকভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন হতে পারে। একই সঙ্গে চিন এবং কায়া রাজ্যে সেনাবাহিনীর এই অগ্রযাত্রার বিষয়ে সতর্ক করেছে বিরোধীদের সরকার ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট (এনইউজি)।