বিশ্বজমিন
ব্রাজিলের প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে সিনেটরদের মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ
মানবজমিন ডেস্ক
২১ অক্টোবর ২০২১, বৃহস্পতিবার, ১২:০০ অপরাহ্ন
করোনা মহামারির সময়ে মানবতা বিরোধী অপরাধ করেছেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জায়ের বোলসনারো। তাকে এ অভিযোগে অভিযুক্ত করেছে দেশটির সিনেট কমিটি। তাতে বলা হয়েছে, দেশে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের সময়ে সরকারের ভুলের জন্য প্রধানত তিনিই দায়ী। তার ভুলের কারণে ব্রাজিলে কমপক্ষে ৯৫ হাজার মানুষ মারা গেছেন। করোনা মহামারি যেভাবে মোকাবিলা করেছেন তাতে তার বিরুদ্ধে মানবতা বিরোধী এবং অন্যান্য অভিযোগে অপরাধ সুপারিশ করেছে সিনেট কমিটির রিপোর্ট। কিন্তু ৬৬ বছর বয়সী এই প্রেসিডেন্ট এসব রিপোর্টের পরোয়া করেন না। সঙ্গে সঙ্গে তিনি অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন। বলেছেন, কোনো কিছুর জন্যই তিনি দোষী নন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা।
করোনা ভাইরাসে ব্রাজিলে এ পর্যন্ত মারা গেছেন কমপক্ষে ৬ লাখ মানুষ। যুক্তরাষ্ট্রের পরেই বিশ্বে সবচেয়ে বেশি মানুষ মৃত্যুর রেকর্ড এটি। কিন্তু এমন ভয়াবহতা সত্ত্বেও তা গায়ে লাগাননি প্রেসিডেন্ট বোলসনারো। এমনকি তিনি করোনার টিকার বিষয়ে উদাসীন। ফলে তার বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ করা হয়েছে। এখন তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উত্থাপন করা হয়েছে, তা নির্ভর করবে ব্রাজিলের প্রসিকিউটর-জেনারেলের ওপর। এসব পদে যাদেরকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে তারা বোলসনারোর মিত্র এবং তিনিই তাদেরকে নিয়োগ দিয়েছেন।
প্রেসিডেন্ট বোলসনারো করোনা ভাইরাস মহামারির হুমকি একেবারেই গায়ে মাখেননি। এ জন্য সারা বিশ্বে তার পরিচিতি আছে। তিনি মিথ্যা তথ্য ছড়িয়েছেন এবং আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য বিষয়ক যেসব গাইডলাইন্স তার বিপরীতে অপ্রমাণিত চিকিৎসা পদ্ধতি প্রচলন করেন। জনসমক্ষে মুখে মাস্ক পরাকে অনুৎসাহিত করেন। এ অবস্থায় সিনেটের ১১ সদস্যের একটি প্যানেল তার কর্মকা-কে পরীক্ষা করতে বসেন। তারা যাচাই করে দেখেন প্রেসিডেন্ট বোলসনারোর এসব কর্মকা-ের কারণে অনেক মানুষের মৃত্যু ঘটেছে। কমিটি প্রায় ১২০০ পৃষ্ঠার রিপোর্ট দিয়েছে। তাতে তাকে তারা ভ-ামি এবং সরকারি অর্থের অপচয় এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত করেন। রিপোর্টে বলা হয়েছে, করোনা মহামারির বিরুদ্ধে সরকারের একমাত্র নীতি ছিল ম্যালেরিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইনের মতো ওষুধের ব্যবহার। রিপোর্টে আরো বলা হয়, ব্রাজিলে করোনা ভাইরাস বিস্তারে দৃঢ় ভূমিকা রেখেছেন জায়ের বোলসনারো। ফেডারেল সরকার যে ভুল করেছে তার জন্য তিনি সবচেয়ে বেশি দায়ী।
তবে উগ্র ডানপন্থি এই প্রেসিডেন্ট সিনেটের এই তদন্তকে উচ্চ মাত্রায় রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং তার বিরুদ্ধে স্যাবোটাজ বলে আখ্যায়িত করেছেন। বলেছেন, তিনি কোনো অন্যায় করেননি। উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য সিয়েরা থেকে তিনি বলেছেন, আমি জানি কোনো কিছুর জন্য আমরা দায়ী নই। একেবারে শুরুর সময় থেকেই আমরা সঠিক কাজ করেছি। অন্যদিকে প্রসিকিউটর জেনারেল অগাস্টো আরাস-এর অফিস থেকে একটি বিবৃতি দেয়া হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, তারা রিপোর্ট পাওয়ার পর খুব সতর্কতার সঙ্গে তা বিশ্লেষণ করবেন। উদ্বেগ দেখা দিয়েছে প্রেসিডেন্ট বোলসনারোর ধামাধরা হিসেবে পরিচিত আরাস এই যাত্রায় প্রেসিডেন্টকে অভিশংসনের হাত থেকে রক্ষাকবজ হয়ে উঠতে পারেন। এমন অবস্থায় সিনেট প্যানেলটির চেয়ার সিনেটর ওমর আজিজ বলেছেন, প্রেসিডেন্ট বোলসনারোকে জেলে নেয়ার মতো পর্যাপ্ত তথ্যপ্রমাণ আছে। যদি এটর্নি জেনারেল কিছুই না করেন, তাহলে আমরা সুপ্রিম কোর্টে যাবো। হেগে অবস্থিত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে যাবো। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় আমরা অব্যাহতভাবে চাপ দিয়ে যাবো।
সিনেট কমিটির রিপোর্টে অভিযোগ করা হয়েছে প্রেসিডেন্ট বোলসনারোর বর্তমান ও সাবেক কিছু সদস্যের বিরুদ্ধে, কয়েক ডজন মিত্রের বিরুদ্ধে, প্রেসিডেন্টের তিন ছেলের বিরুদ্ধে এবং দুটি কোম্পানির বিরুদ্ধে। এখানে উল্লেখ্য, প্রেসিডেন্টের তিন ছেলেও রাজনীতিক। রিপোর্টে কমিটি বলেছে, তারা পর্যাপ্ত তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করেছে। এতে দেখা যায়, সরকার খুব কঠিন সময়ে নীরব ছিল। সিনেট কমিটির এই রিপোর্ট অনুমোদন দেয়ার জন্য সিনেটরিয়াল কমিটিতে দেয়া হবে। এর ওপর আগামী ২৬ শে অক্টোবর ভোট হওয়ার কথা। প্রসিকিউটর জেনারেল অফিসে এই রিপোর্ট পাঠাতে হলে কমিটির অনুমোদন প্রয়োজন হবে। তাহলে কি প্রেসিডেন্টকে অভিশংসিত করা হবে? এমন প্রশ্ন সামনে চলে এসেছে। রিপোর্টে যেসব অভিযোগ করা হয়েছে, তাতে বিভক্তি সৃষ্টিকারী এই প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে সমালোচনাকে তীব্র করে সামনে তুলে ধরা হয়েছে। আগামী বছর নতুন নির্বাচন হওয়ার কথা সেখানে। কিন্তু তার মধ্যেই তার অ্যাপ্রুভাল রেটিং কমে গেছে। রাজনৈতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান আরকো এডভাইসের পরিচালক থিয়াগো ডি আরাগাও বলেছেন, এই তদন্তের বড় প্রভাব হলো রাজনৈতিক। কারণ, এতে টনকে টন খবর জমায়েত করা হয়েছে, যা আগামী বছর নির্বাচনী কৌশল হিসেবে ব্যবহার করা হবে।
৬ মাস ধরে সিনেট কমিটি শুনানি করেছে। এ সময়ে তারা হাজার হাজার ডকুমেন্ট সংগ্রহ করেছে। কমপক্ষে ৬০ জনের সাক্ষ্য নিয়েছে। ফল হিসেবে প্রেসিডেন্টের স্ক্যান্ডাল সামনে চলে এসেছে। এর মধ্যে রয়েছে করোনা ভাইরাসের টিকা কেনা নিয়ে যে দুর্নীতি হয়েছে, তাতে প্রেসিডেন্ট ছিলেন চোখ বন্ধ করে।
সোমবার পিতামাতা হারানো গিওভান্না গোমেজ মেন্ডেজ দা সিলভা (১৯) কান্নায় ভেঙে পড়েন। বলেন, এ অবস্থায় তার ১০ বছর বয়সী বোনকে দেখাশোনা করতে হচ্ছে। কথা বলতে গিয়ে তিনি আবেগ থামাকে নিজের সঙ্গে যেন লড়াই করেন। সিনেটরদের কাছে তিনি বলেন, আমরা আমাদের সবচেয়ে প্রিয়জনদের হারিয়েছি।
করোনা ভাইরাসে ব্রাজিলে এ পর্যন্ত মারা গেছেন কমপক্ষে ৬ লাখ মানুষ। যুক্তরাষ্ট্রের পরেই বিশ্বে সবচেয়ে বেশি মানুষ মৃত্যুর রেকর্ড এটি। কিন্তু এমন ভয়াবহতা সত্ত্বেও তা গায়ে লাগাননি প্রেসিডেন্ট বোলসনারো। এমনকি তিনি করোনার টিকার বিষয়ে উদাসীন। ফলে তার বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ করা হয়েছে। এখন তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উত্থাপন করা হয়েছে, তা নির্ভর করবে ব্রাজিলের প্রসিকিউটর-জেনারেলের ওপর। এসব পদে যাদেরকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে তারা বোলসনারোর মিত্র এবং তিনিই তাদেরকে নিয়োগ দিয়েছেন।
প্রেসিডেন্ট বোলসনারো করোনা ভাইরাস মহামারির হুমকি একেবারেই গায়ে মাখেননি। এ জন্য সারা বিশ্বে তার পরিচিতি আছে। তিনি মিথ্যা তথ্য ছড়িয়েছেন এবং আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য বিষয়ক যেসব গাইডলাইন্স তার বিপরীতে অপ্রমাণিত চিকিৎসা পদ্ধতি প্রচলন করেন। জনসমক্ষে মুখে মাস্ক পরাকে অনুৎসাহিত করেন। এ অবস্থায় সিনেটের ১১ সদস্যের একটি প্যানেল তার কর্মকা-কে পরীক্ষা করতে বসেন। তারা যাচাই করে দেখেন প্রেসিডেন্ট বোলসনারোর এসব কর্মকা-ের কারণে অনেক মানুষের মৃত্যু ঘটেছে। কমিটি প্রায় ১২০০ পৃষ্ঠার রিপোর্ট দিয়েছে। তাতে তাকে তারা ভ-ামি এবং সরকারি অর্থের অপচয় এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত করেন। রিপোর্টে বলা হয়েছে, করোনা মহামারির বিরুদ্ধে সরকারের একমাত্র নীতি ছিল ম্যালেরিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইনের মতো ওষুধের ব্যবহার। রিপোর্টে আরো বলা হয়, ব্রাজিলে করোনা ভাইরাস বিস্তারে দৃঢ় ভূমিকা রেখেছেন জায়ের বোলসনারো। ফেডারেল সরকার যে ভুল করেছে তার জন্য তিনি সবচেয়ে বেশি দায়ী।
তবে উগ্র ডানপন্থি এই প্রেসিডেন্ট সিনেটের এই তদন্তকে উচ্চ মাত্রায় রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং তার বিরুদ্ধে স্যাবোটাজ বলে আখ্যায়িত করেছেন। বলেছেন, তিনি কোনো অন্যায় করেননি। উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য সিয়েরা থেকে তিনি বলেছেন, আমি জানি কোনো কিছুর জন্য আমরা দায়ী নই। একেবারে শুরুর সময় থেকেই আমরা সঠিক কাজ করেছি। অন্যদিকে প্রসিকিউটর জেনারেল অগাস্টো আরাস-এর অফিস থেকে একটি বিবৃতি দেয়া হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, তারা রিপোর্ট পাওয়ার পর খুব সতর্কতার সঙ্গে তা বিশ্লেষণ করবেন। উদ্বেগ দেখা দিয়েছে প্রেসিডেন্ট বোলসনারোর ধামাধরা হিসেবে পরিচিত আরাস এই যাত্রায় প্রেসিডেন্টকে অভিশংসনের হাত থেকে রক্ষাকবজ হয়ে উঠতে পারেন। এমন অবস্থায় সিনেট প্যানেলটির চেয়ার সিনেটর ওমর আজিজ বলেছেন, প্রেসিডেন্ট বোলসনারোকে জেলে নেয়ার মতো পর্যাপ্ত তথ্যপ্রমাণ আছে। যদি এটর্নি জেনারেল কিছুই না করেন, তাহলে আমরা সুপ্রিম কোর্টে যাবো। হেগে অবস্থিত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে যাবো। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় আমরা অব্যাহতভাবে চাপ দিয়ে যাবো।
সিনেট কমিটির রিপোর্টে অভিযোগ করা হয়েছে প্রেসিডেন্ট বোলসনারোর বর্তমান ও সাবেক কিছু সদস্যের বিরুদ্ধে, কয়েক ডজন মিত্রের বিরুদ্ধে, প্রেসিডেন্টের তিন ছেলের বিরুদ্ধে এবং দুটি কোম্পানির বিরুদ্ধে। এখানে উল্লেখ্য, প্রেসিডেন্টের তিন ছেলেও রাজনীতিক। রিপোর্টে কমিটি বলেছে, তারা পর্যাপ্ত তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করেছে। এতে দেখা যায়, সরকার খুব কঠিন সময়ে নীরব ছিল। সিনেট কমিটির এই রিপোর্ট অনুমোদন দেয়ার জন্য সিনেটরিয়াল কমিটিতে দেয়া হবে। এর ওপর আগামী ২৬ শে অক্টোবর ভোট হওয়ার কথা। প্রসিকিউটর জেনারেল অফিসে এই রিপোর্ট পাঠাতে হলে কমিটির অনুমোদন প্রয়োজন হবে। তাহলে কি প্রেসিডেন্টকে অভিশংসিত করা হবে? এমন প্রশ্ন সামনে চলে এসেছে। রিপোর্টে যেসব অভিযোগ করা হয়েছে, তাতে বিভক্তি সৃষ্টিকারী এই প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে সমালোচনাকে তীব্র করে সামনে তুলে ধরা হয়েছে। আগামী বছর নতুন নির্বাচন হওয়ার কথা সেখানে। কিন্তু তার মধ্যেই তার অ্যাপ্রুভাল রেটিং কমে গেছে। রাজনৈতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান আরকো এডভাইসের পরিচালক থিয়াগো ডি আরাগাও বলেছেন, এই তদন্তের বড় প্রভাব হলো রাজনৈতিক। কারণ, এতে টনকে টন খবর জমায়েত করা হয়েছে, যা আগামী বছর নির্বাচনী কৌশল হিসেবে ব্যবহার করা হবে।
৬ মাস ধরে সিনেট কমিটি শুনানি করেছে। এ সময়ে তারা হাজার হাজার ডকুমেন্ট সংগ্রহ করেছে। কমপক্ষে ৬০ জনের সাক্ষ্য নিয়েছে। ফল হিসেবে প্রেসিডেন্টের স্ক্যান্ডাল সামনে চলে এসেছে। এর মধ্যে রয়েছে করোনা ভাইরাসের টিকা কেনা নিয়ে যে দুর্নীতি হয়েছে, তাতে প্রেসিডেন্ট ছিলেন চোখ বন্ধ করে।
সোমবার পিতামাতা হারানো গিওভান্না গোমেজ মেন্ডেজ দা সিলভা (১৯) কান্নায় ভেঙে পড়েন। বলেন, এ অবস্থায় তার ১০ বছর বয়সী বোনকে দেখাশোনা করতে হচ্ছে। কথা বলতে গিয়ে তিনি আবেগ থামাকে নিজের সঙ্গে যেন লড়াই করেন। সিনেটরদের কাছে তিনি বলেন, আমরা আমাদের সবচেয়ে প্রিয়জনদের হারিয়েছি।