বাংলারজমিন

পোকা ও রোগের আক্রমণে দিশাহারা কৃষক

চিলমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি

১৯ অক্টোবর ২০২১, মঙ্গলবার, ১:৪৭ অপরাহ্ন

বন্যায় হানায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার আগেই রোগের হানা আর পোকা আক্রমণে দিশাহারা। চোখের জল শুকানোর আগেই আবারো কষ্টের সাগরে ভাসছে চিলমারীর কৃষক। বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক ছিটিয়েও লাভ হচ্ছে না। মাঠে দেখা বা সাহায্য মিলছে না দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের অভিযোগ কৃষকের। কৃষি বিভাগের সেবা থেকে বঞ্চিত কৃষক। তবে কৃষি কর্মকর্তাদের দাবি, তারা সবকিছু পর্যবেক্ষণ করছেন।
জানা গেছে, উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলা নদী ভাঙ্গন আর বন্যায় প্রতিবছর ক্ষতিগ্রস্ত হয় এই অঞ্চলের কৃষক। চলতি মৌসুমে টানা বন্যার পানি কয়েক হাজার আমন ক্ষেত নষ্ট করে দেয়। আবারো চড়া মূল্যে চারা ক্রয় করে মাঠে নামে কৃষক ক্ষতি পুষিয়ে নিতে। কিন্তু সব আশা আর স্বপ্নে হানা দিয়েছে রোগ বালাই আর পোকার আক্রমণ। বন্যার পর হঠাৎ আমন ক্ষেতে পোকার আক্রমণ ও রোগ-বালাইয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন চিলমারীর কৃষক। এ পরিস্থিতিতেও কৃষি বিভাগের সহযোগিতা চেয়েও সময় মতো সাহায্য পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ কৃষকদের। সরেজমিন গেলে বিভিন্ন এলাকার কৃষকরা জানান, বন্যার ক্ষতিকে পুষিয়ে নিতে আমনের বাম্পার ফলনের আশায় বুক বেঁধেছিলেন তারা। কিন্তু ক্ষেতের ধানে হঠাৎ করে খোলপচা ও গোড়াপচা বিভিন্ন রোগের পাশাপাশি কারেন্ট পোকা, লেদা পোকা, ও পাতা মোড়ানোসহ বিভিন্ন পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে উপজেলা বিভিন্ন স্থানে। বাজারের কীটনাশক দিয়েও এসব পোকার আক্রমণ ও রোগ ঠেকাতে পারছেন না কৃষকরা। অনেক এলাকায় বের হওয়া নতুন শিষও কালো আবার কোথাও লাল হয়ে যাচ্ছে। এ উপজলায় ধানের ফলন লক্ষ্যমাত্রার কম হওয়ার আশঙ্কা করছেন চাষিরা। গবেরতল এলাকার কৃষক মমিন, গোলজার বলেন, হাজার হাজার টাকা খরচ করি চাষ করলাম কিন্তু ফল পাওয়ার আগেই পোকা আর রোগ সব নষ্ট করে দিচ্ছে, বড় বিপদে আছি ভাই। চোখ ছল ছল করছিল কাচু শেখের চৌধুরী পাড়া এলাকার জমিতে বসে কি যেন ভাসছিলেন, কথা বলতেই কান্না জনিত কন্ঠে বলেন, খুব কষ্ট করে ১২ কাটা (৩৬ শতক) জমিতে আবাদ করছিনু, কিন্তু পোকা আর কি যেন রোগ হইছে ধানের গাছ গুলে নষ্ট হবার নাগছে, কি যে হইবে মোর বাহে। এছাড়া এলাকার আমিন সহ অনেকে কৃষি বিভাগের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে ধরে বলেন, বাহে বিএস (উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা) দের কথা বাদদেন, এমরা মাঠে তো আইসেনা। পরামর্শ চাইলে যা পরামর্শ দেয় তা কামত নাগে না। আবারো অনেকে বলেন, যদিও ভয় ভবিষ্যত আইসে ওমার সাথে ভালো পরিচয় থাকা মানুষ বা কৃষদের সাথে কথা কয়য়া চা, পান খায়য়া চলি যায়। কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে আমনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৮ হাজার ১৫০ হেক্টর। কৃষি কর্মকর্তা ও বিভাগের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা কৃষি অফিসার প্রণয় কুমার বিষাণ দাস বলেন, আমাদের লোকজন সঠিক সময় সঠিক পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। তিনি আরো বলেন, কৃষকরা পরামর্শ অনুযায়ী কাজ করলে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status