বাংলারজমিন
টাকা চুরির কথা বলে দেয়ায় শিশুকে পিটিয়ে হত্যা
স্টাফ রিপোর্টার, সাভার থেকে
১৯ অক্টোবর ২০২১, মঙ্গলবার, ৭:৫৪ অপরাহ্ন
সাভারের আশুলিয়ায় টাকা চুরির কথা বলে দেয়ায় ১১ বছরের এক শিশুকে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ১ জনকে আটক করেছে আশুলিয়া থানা পুলিশ। গতকাল এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সামিউল ইসলাম। এর আগে গত রোববার দিবাগত রাত ১২টার দিকে আশুলিয়ার বাইপাইল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে ভোর সাড়ে ৪টার দিকে আশুলিয়ার বাইপাইল এলাকা থেকে মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহতের নাম মো. ফেরদৌস (১১)। সে শেরপুর জেলার সদর থানার মুন্সিপাড়া গ্রামের বাসচালক রইচ উদ্দিনের ছেলে। ফেরদৌস আশুলিয়ার পল্লীবিদ্যুৎ বালুর মাঠ এলাকায় পরিবারের সঙ্গে ভাড়া বাসায় থেকে আশুলিয়া ক্লাসিক পরিবহনে হেলপার হিসেবে কাজ করতো। নিহতের বড় বোন রুবিনা বেগম বলেন, আমার বাবা আশুলিয়া ক্লাসিক পরিবহনের চালক। ছোট ভাই ফেরদৌস একটু চঞ্চল প্রকৃতির হওয়ায় তিনদিন আগে তাকে আশুলিয়া ক্লাসিক পরিবহনে কাজে পাঠায়। গত রোববার সকালে বাইপাইল এলাকার রাস্তা থেকে আমার ভাইয়ের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বাসের হেলপার ও কন্ডাক্টর মিলে আমার ভাইকে হত্যার পর লাশ সড়কে ফেলে রেখে তারাই আবার পুলিশকে খবর দেয়। থানা পুলিশ জানায়, রাত ১২টার দিকে আব্দুল্লাহপুর থেকে বাস নিয়ে বাইপাইল পৌঁছায়। পরে গাড়ির মধ্যে কন্ডাক্টর হৃদয় ও হেলপার পারভেজ ঘুমিয়ে পড়ে। এ সময় শিশু ফেরদৌসও গাড়িতে ছিল। ঘুম ভাঙলে হৃদয় দেখতে পায় তার পকেট থেকে ৫০০ টাকা খোয়া গেছে। এ সময় শিশু ফেরদৌস তার পকেট থেকে পারভেজ টাকা চুরি করেছে বলে জানায়। এক পর্যায়ে পারভেজ ও হৃদয়ের মধ্যে টাকা নিয়ে বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। টাকা চুরির বিষয়ে বলে দেয়ার ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে পারভেজ শিশু ফেরদৌসকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরে পারভেজ ও হৃদয় মিলেই নিহত ফেরদৌসের লাশ সড়কে ফেলে রেখে পুলিশকে দুর্ঘটনার খবর দেয়। খবর পেয়ে সাভার হাইওয়ে পুলিশ প্রথমে ঘটনাস্থলে পৌঁছলেও মরদেহে দুর্ঘটনার কোনো চিহ্ন না পাওয়ার বিষয়টি থানা পুলিশকে অবহিত করে। পরে ভোর রাতে আশুলিয়া থানা পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে। এ সময় হৃদয়কে আটক করা গেলেও পারভেজ পালিয়ে যায়। আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সামিউল ইসলাম বলেন, রাতেই এ ঘটনায় আশুলিয়া ক্লাসিক পরিবহনের কন্ডাক্টর হৃদয়কে আটক করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে ৫০০ টাকা চুরির ঘটনা দেখে ফেলায় এবং তা বলে দেয়ায় ওই শিশুকে হত্যা করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে। তিনি আরও বলেন, নিহতের মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় একটি হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।