দেশ বিদেশ

তালেবান কী ভারতে পাকিস্তানের `প্রক্সি যুদ্ধে' লিপ্ত?

অনলাইন ডেস্ক

১৮ অক্টোবর ২০২১, সোমবার, ৪:২৬ অপরাহ্ন

গত আগস্টে তালেবান ক্ষমতা দখলের পর থেকে আফগানিস্তানে ভেতরে বাইরে এমনকি পাকিস্তান-আফগানিস্তান অঞ্চলে একাধিক উন্নয়ন হয়েছে। তালেবানের সহজ জয়ের পর পাকিস্তান প্রথম দেশ যে যুক্তরাষ্ট্র থেকে নিজেদের দূরে সরিয়ে নিয়েছে। খুব সম্ভবত এটা হতে পারে মিত্রদেশ চীনের চাপের কারণে। পাকিস্তানের সঙ্গে চীন, রাশিয়া, ইরানের দ্রুত সম্পর্ক বৃদ্ধির বিপরীতে যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানের সঙ্গে দীর্ঘ সময়ের মিত্রতা হারিয়েছে। তালেবান ক্ষমতায় আসার পর এই কাজটি আরও বেশি হয়েছে।  চীন তালেবানকে সরাসরি সহযোগিতা ও ‘স্বীকৃতির’ মাধ্যমে চীন ইরান ও আফগানিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক পুনরায় জোরদার করেছে।
দুই দশক ধরে নিযুক্ত মার্কিন সেনাদের হঠাৎ প্রত্যাগমনে তালেবানের ‘শক্তি’ও   উন্মোচিত হয়েছে। তাদের এভাবে চলে যাওয়া মিত্রদের হতাশ করে তুলেছে। তারা এমন সময়ে আফগানিস্তান ছেড়েছে যখন  আফগান সৈন্যরা নিজেদেরকে রক্ষা করার জন্য মার্কিন নেতৃত্বাধীন ন্যাটো বাহিনীর সহযোগিতা প্রয়োজন ছিল।
আফগান সাবেক প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানির ভারতের প্রতি আস্থার কারণে পাকিস্তান বেশ সতর্কতায় ছিল। কিন্তু ঘানির কাপুরুষোচিত পালিয়ে যাওয়ার কারণে পাকিস্তান স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে। এটি এখন আফগানিস্তানের বাইরেও মিত্রতা তৈরির চেষ্টা করছে।
আফগান নর্দান অ্যালায়ান্স নেতা আহমদ শাহ মাসুদের ভাইদের মধ্যে সাম্প্রতিক বৈঠকেও এটি স্পষ্ট, যারা এর আগে তালেবান শাসনামলে পাকিস্তানের শত্রু ছিল। কিন্তু এখন তাদের মত পাল্টেছে। গত ১৬ আগস্ট ইসলামাবাদে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশির সঙ্গে তাদের সাক্ষাতে এটি দৃশ্যমান হয়েছে।
সম্ভবত আফগানিস্তানের তালিবান শাসনামলে ভারতকে তার আফগান নীতি পুনর্বিবেচনা করতে হবে। কোনো অবস্থাতেই ভারতের প্রমাণিত আফগান বন্ধুদের কাছে পাকিস্তানের মিত্রতা তৈরির চেষ্টাকে ছেড়ে দেওয়া উচিত হবে না। এই ধরনের যেকোনো পদক্ষেপকে দমানো উচিত।
পাকিস্তান নতুন তালেবান শাসনকে স্বাগত জানিয়ে বেশকিছু জায়গায় ভ্রমণ করেছে। প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান সাম্প্রতিক এক  অনুষ্ঠানে, তালেবান নীতিকে সমর্থন করে বলেন, এটি বিদেশি  শাসনের দাসত্ব থেকে শৃঙ্খলহীন। এই বক্তব্যটির মাধ্যমে অক্সফোর্ড পড়ুয়া, ক্রিকেটার ও রাজনীতিবিদ ইমরান খানের ধর্মীয় চরমপন্থা ও পশ্চাদগামী সামাজিক-রাজনৈতিক মানসিকতাকে বোঝায়।
ভয়ের বিষয় হলো তালেবান কাশ্মীর ও ভারতশাসিত অঞ্চলে মনোযোগ দিবে। সন্দেহ নেই যে আইএসআইএস, আল কায়েদা কর্মীদের তালেবানরা মুক্ত করেছে এবং বিদেশি শক্তিগুলো ভারতকে টার্গেট করতে অবশ্যই তালেবানকে চাপ দিচ্ছে। তবে ভারতের সতর্ক অবস্থান সম্পর্কে তারা সচেতন।
আসল বিপদ হলো, পাকিস্তানের ভূমিকা যারা এখন ভারতে প্রক্সি যুদ্ধ চালানোর জন্য তালেবানদের ব্যবহার করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে। যেকোনো মূল্যে এটি নস্যাৎ করতে হবে।
লেখক : শান্তনু মুখার্জি। একজন অবসরপ্রাপ্ত আইপিএস অফিসার, নিরাপত্তা বিশ্লেষক এবং মরিশাসের প্রধানমন্ত্রীর সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা।
সূত্র : এশিয়ান লাইটস
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status