অনলাইন

নানাকে হত্যা করে লাশ মেঝেতে পুঁতে রাখে নাতি

স্টাফ রিপোর্টার, ময়মনসিংহ থেকে

১৮ অক্টোবর ২০২১, সোমবার, ১:১৬ অপরাহ্ন

শাসন ও অনুরাগ সইতে না পেরে নানা আব্দুর রশিদ (৬৫)কে হত্যা করে লাশ ঘরের মেঝেতে পুঁতে রাখে বড় কন্যার ওরসের নাতি মঞ্জুরুল ইসলাম বিজয় বাবু (১৯)। বাবুকে কোলে পিঠে করে অতি আদরে লালন-পালন করেছিলেন নানা আব্দুর রশিদ। ময়মনসিংহ জেলার মুক্তাগাছা থানার হরিপুর দেউলী থেকে গত ১১ই অক্টোবর আবদুর রশিদ (৬৫) নিখোঁজ বলে চারদিকে আত্মীয়-স্বজনরা খোঁজাখুঁজি শুরু করে। ১৪ই অক্টোবর সকালে আব্দুর রশিদ (৬৫) এর ঘরের চারদিকে পচা দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়লে প্রতিবেশী ও আত্মীয় স্বজনরা এসে ঘরের তালা ভেঙে দেখতে পায় যে, মাটিতে পুঁতে রাখা আব্দুর রশিদ (৬৫) এর লাশ।

ডিবির ওসি সফিকুল ইসলাম জানান, মুক্তাগাছায় মাটিতে পুঁতে রাখা বৃদ্ধ আব্দুর রশিদ (৬৫)এর লাশ উদ্ধারের মামলাটি ময়মনসিংহ পুলিশ সুপার আহমার উজ্জামান-এর নির্দেশে মুক্তাগাছা থানা পুলিশের সহায়তায় নৃশংস হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটনে যুক্ত করেন ময়মনসিংহ ডিবি পুলিশকে। আব্দুর রশিদ (৬৫) এর নৃশংস হত্যার রহস্য উদঘাটন ও হত্যাকারীকে খুঁজে বের করার জন্য ধারাবাহিক অভিযান চালায় ডিবি পুলিশ। ডিবির এসআই আজগর আলী, সঙ্গীয় অফিসার ফোর্স অভিযান চালিয়ে হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন ও হত্যাকারী মঞ্জুরুল ইসলাম বিজয় বাবু (১৯)কে গতকাল গ্রেফতার করে।

নিহত আব্দুর রশিদ (৬৫) দীর্ঘদিন ধরে বিপত্নীক জীবন যাপন করেন। আসামি বাবুর বাবা-মায়ের বিচ্ছেদের কারণে অনাদরে থাকা তার মেয়ের দিকে নাতি বাবু (১৯)কে আদরে-যত্ন, কোলে-পিঠে করে লালন-পালন করেন আবদুর রশিদ। বিপত্নীক আব্দুর রশিদ বিগত প্রায় ১ বছর পূর্বে বাবু (১৯)কে বিয়ে করিয়ে নাতি বৌ ঘরে তুলে আনেন। উপার্জন বিহীন বেকার নাতিকে উপার্জনের তাগিদ দিলে বাবু (১৯) ক্ষেপে গিয়ে তার নববধূকে বাপের বাড়ি পাঠিয়ে দিয়ে জমি বিক্রি করে টাকা দেয়ার জন্য আব্দুর রশিদ (৬৫) কে উল্টো চাপ প্রয়োগ করে।

আব্দুর রশিদ (৬৫) জমি বিক্রি করে টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে বাবু (১৯) তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। নিহত রশিদের বড় মেয়ে সাবিনা ইয়াসমিনের ছেলে মঞ্জুরুল ইসলাম বিজয় @ বাবু (১৯),কে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে হত্যাকা-ের বিষয়ে স্বীকারোক্তি প্রদান করে এবং ঘটনাটি স্ব-বিস্তারে বর্ণনা করে। আসামি বাবু গত ১০ অক্টোর রাত অনুমান ৯টায় খাওয়া দাওয়া শেষে আব্দুর রশিদ এর সাথে ঘুমিয়ে পড়ে। পূর্ব পরিকল্পনা মতে আসামি বাবু (১৯) হত্যার করার জন্য গভীর রাতে ঘরে রক্ষিত লোহার শাবল দিয়ে ঘুমিয়ে থাকা আব্দুর রশিদ (৬৫) এর মাথায় ও শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে উপর্যুপরি আঘাত করে। আব্দুর রশিদ অচেতন ও আঘাতের কারণে নিথর হয়ে পড়লে বাবু মৃত্যু নিশ্চিত হয়ে হত্যাকান্ডটি লোক চোখের আড়ালে নিতে ও নিজেকে হত্যার দায় মুক্ত হতে নিহত আব্দুর রশিদ (৬৫) এর লাশটি মাটি খুঁড়ে ঘরের মধ্যে মাটিচাপা দিয়ে রাখে। রাত শেষ হলে আব্দুর রশিদ (৬৫) এর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি নিয়ে মোছাঃ ফাতেমা খাতুন (২১) এর নিকট বিক্রি করে। ডিবির এসআই আজগর আলী আসামির দেওয়া স্বীকারোক্তি মতে ঘটনাস্থল হতে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত শাবল ও নিহত আব্দুর রশিদ এর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করে। আসামি মামলার ঘটনার বিষয় বিজ্ঞ আদালতে স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status