দেশ বিদেশ

সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল ইতিহাস ও বাস্তবতা

মোহাম্মদ শিশির মনির

১৬ অক্টোবর ২০২১, শনিবার, ৮:১৩ অপরাহ্ন

বাংলাদেশের বিচার বিভাগ দুই স্তরবিশিষ্ট। উচ্চ আদালত ও অধস্তন আদালত। উচ্চ আদালত হাইকোর্ট বিভাগ ও আপিল বিভাগের সমন্বয়ে গঠিত। অন্যদিকে জেলা ও দায়রা জজ এবং তার অধীন আদালতসমূহ নিয়ে অধস্তন আদালত গঠিত। এ ছাড়াও রয়েছে বিশেষ আদালত ও ট্রাইব্যুনালসমূহ। অধস্তন আদালতের বিচারকদের (Judicial Officer) নিয়োগ, পদায়ন ও পদাবসানের জন্য বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস (সার্ভিস গঠন, প্রবেশ পদের নিয়োগ, বরখাস্তকরণ, সাময়িক বরখাস্তকরণ ও অপসারণ) বিধিমালা-২০০৭ ও বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস (শৃঙ্খলা) বিধিমালা-২০১৭ প্রযোজ্য। অপর দিকে উচ্চ আদালতের বিচারকদের নিয়োগ এবং অপসারণের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট কোনো আইন নেই। সাংবিধানিক প্রথা অনুযায়ী প্রধান বিচারপতির সুপারিশের ভিত্তিতে মহামান্য রাষ্ট্রপতি সংবিধানের ৯৫ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বিচারক নিয়োগ করেন। বিখ্যাত ১০ Judges Case,৭ এডিসি ৭২১, মামলায় প্রধান বিচারপতির সুপারিশের প্রাধান্য সাংবিধানিক প্রথা (Constitutional Convention) হিসেবে স্বীকৃতি পায়। এছাড়াও রাগীব রউফ চৌধুরী বনাম বাংলাদেশ, ৬৯ ডিএলআর ৩১৭, মামলায় হাইকোর্ট বিভাগ বিচারক নিয়োগের ক্ষেত্রে ৭ দফা নির্দেশনা প্রদান করে।

বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষেত্রে শারীরিক বা মানসিক অসামর্থ্য এবং গুরুতর অসদাচরণ তদন্ত করার সাংবিধানিক দায়িত্ব সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের ওপর ন্যস্ত। ৭ই সেপ্টেম্বর ২০১৪ তারিখে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর মাধ্যমে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের বিধান বাতিল করা হয়। ৩রা জুলাই ২০১৭ তারিখে আপিল বিভাগ এই সংশোধনীকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করে। ২৪শে ডিসেম্বর ২০১৭ তারিখে ওই রায়ের বিরুদ্ধে সরকার রিভিউ আবেদন দায়ের করে। প্রশ্ন উঠে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের অস্তিত্ব আছে নাকি নেই।

সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠনের ইতিহাস
১৯৭২ সালে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের সংবিধানের যাত্রা শুরু হয়। অনুচ্ছেদ ৯৬-এ অসদাচরণ ও অক্ষমতার কারণে একজন বিচারপতিকে অপসারণের বিধান রাখা হয়। সংসদের দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যের মতামতের ভিত্তিতে মহামান্য রাষ্ট্রপতির ওপর অপসারণের ক্ষমতা ন্যস্ত করা হয়। ২৫শে জানুয়ারি ১৯৭৫ তারিখে সংবিধানের ৪র্থ সংশোধনী পাস করা হয়। এই সংশোধনীর মাধ্যমে বিচারপতিদের অপসারণের সর্বময় ক্ষমতা মহামান্য রাষ্ট্রপতির ওপর ন্যস্ত করা হয়।
১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যার পর সামরিক শাসন জারি হয়। সংবিধানের কার্যকারিতা স্থগিত করা হয়। The Second Proclamation (Tenth Amendment) Order, ১৯৭৭ জারি করে সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৯৬-এ প্রথমবারের মতো সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের বিধান সন্নিবেশ করা হয়। অতঃপর সংসদ পুনরায় অধিবেশনে বসে এবং ৫ম সংশোধনীর মাধ্যমে পূর্বে জারিকৃত সকল আইনের বৈধতা দেয়। ১৯৮২ সালে আবারও সামরিক শাসন জারি হয়। The Martial Law Proclamation (First Amendment) Order, ১৯৮২ প্রণয়ন করে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসককে বিচারপতি অপসারণের ক্ষমতা প্রদান করা হয়। ১৯৮৬ সালে সংসদ পুনরায় অধিবেশনে বসে এবং The Constitution Final Revival Order, ১৯৮৬-এর মাধ্যমে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের বিধান পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে।

২৯শে আগস্ট ২০০৫ তারিখে হাইকোর্ট বিভাগ খন্দকার দেলোয়ার হোসেন বনাম ইটালিয়ান মার্বেল ওয়ার্কস, ৬২ ডিএলআর (এডি) ২৯৮, মামলায় সংবিধানের ৫ম সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে। ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারিতে আপিল বিভাগ ওই সিদ্ধান্ত বহাল রাখে। তবে অধিকতর স্বচ্ছতা ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতার রক্ষাকবচ বিবেচনায় সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের বিধান আদালত বলবৎ রাখে। অত্র রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ রিভিউ আবেদন দায়ের করে। অতঃপর আপিল বিভাগ রিভিউ নিষ্পত্তি করে সামরিক ফরমানে জারিকৃত আইন-কানুনসমূহে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনতে সংসদকে ৩১শে ডিসেম্বর ২০১২ পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয়। ৩০শে জুন ২০১১ তারিখে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের বিধান অপরিবর্তিত রেখে জাতীয় সংসদ পঞ্চদশ সংশোধনী পাস করে।

মাত্র তিন বছর পর ৭ই সেপ্টেম্বর ২০১৪ তারিখে জাতীয় সংসদ সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী পাস করে। বিচারপতি অপসারণের ক্ষমতা পুনরায় সংসদের ওপর ন্যস্ত করা হয়। ৫ই নভেম্বর ২০১৪ তারিখে সুপ্রিম কোর্টের কতিপয় আইনজীবী এই সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট মোকদ্দমা দায়ের করেন। ৫ই মে ২০১৬ তারিখে হাইকোর্ট বিভাগের একটি বৃহত্তর বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামতের ভিত্তিতে ষোড়শ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে। ওই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে সরকার আপিল বিভাগে আপিল দায়ের করে। ৩রা জুলাই ২০১৭ তারিখে আদালত সর্বসম্মতি ক্রমে আপিলটি খারিজ করে দেয় এবং ষোড়শ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে। অতঃপর সরকার রিভিউ আবেদন দায়ের করে, যা শুনানির জন্য অপেক্ষমাণ।

উচ্চ আদালতের দৃষ্টিতে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের বিধান
বাংলাদেশের সাংবিধানিক ইতিহাস উত্থান-পতনে ভরপুর। ১৯৭২ সালে প্রণীত সংবিধান সুবিধামতো বারবার কাটাছেঁড়া করা হয়েছে। কখনো নিয়মতান্ত্রিকভাবে কখনো অসাংবিধানিকভাবে। জরুরি অবস্থার মধ্য দিয়ে উল্লেখযোগ্য সময় কাটাতে হয়েছে। সামরিক শাসনের ব্যাপ্তিকালও উল্লেখযোগ্য। এমনকি এদেশের বিচার বিভাগ সংবিধানকে সামরিক ফরমানের অধীন হিসেবে ব্যাখ্যা করেছে। একদলীয় শাসন ব্যবস্থাও আমাদের সংবিধানের অংশ হয়ে গিয়েছিল। উচ্চ আদালত সামরিক শাসনের সকল পদচিহ্ন মুছে দিয়েছে। কিন্তু সামরিক ফরমান বলে প্রতিষ্ঠিত সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের বিধান আমাদের বিচার বিভাগ সব সময় অটুট রেখেছে।  

বিখ্যাত মাসদার হোসেন মামলায়, ৫২ ডিএলআর (এডি) ৮২, সুপ্রিম কোর্ট বিচার বিভাগীয় স্বাধীনতার ওপর দীর্ঘ রায় প্রদান করে। রায়ে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের ভূমিকা উল্লেখ করা হয়। আদালত মন্তব্য করেন, সংবিধান উচ্চ আদালতের বিচারকগণের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছে এবং তাদের পদের অবসান হবে 'yonly after being tried by their own peers in the Supreme Judicial Council'। আদালত কানাডার সুপ্রিম কোর্টের বিখ্যাত Walter Valente Vs. The Queen, (1985) 2 R.C.S. 673,মামলার সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করে। ওই রায়ে কানাডার সুপ্রিম কোর্ট বিচার বিভাগীয় স্বাধীনতার তিনটি শর্ত বর্ণনা করে। তন্মধ্যে রাষ্ট্রের নির্বাহী বিভাগের হস্তক্ষেপ থেকে বিচারকদের চাকরির নিরাপত্তা অন্যতম।

খন্দকার দেলোয়ার হোসাইন বনাম ইটালিয়ান মার্বেল ওয়ার্কস, ৬২ ডিএলআর (এডি) ২৯৮, মামলায় সংবিধানের ৫ম সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা হয়। অত্র মামলার রায়ে আপিল বিভাগ সামরিক শাসনামলে জারিকৃত অধ্যাদেশ, রেগুলেশন ও আদেশসমূহ অবৈধ ঘোষণা করে। সামরিক ফরমানে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের বিধান সংবিধানে সন্নিবেশ করা হলেও তা অক্ষুণ্ন রাখা হয়। আদালত মন্তব্য করে যে, ওই কাউন্সিলের বিধান 'more transparent procedure than that of the earlier ones and also safeguarding independence of judiciary'।

বাংলাদেশ বনাম এডভোকেট আসাদুজ্জামান সিদ্দিকী, ৭১ ডিএলআর (এডি) ৫২, মামলায় আপিল বিভাগ সর্বসম্মতিক্রমে ষোড়শ সংশোধনীকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করে। অত্র মামলার শুনানিকালে ১০ জন দেশ বরেণ্য আইনজীবী এমিকাস কিউরি হিসেবে আদালতকে সহযোগিতা করেন। রায়ে উল্লেখ করা হয়, 'The Supreme Judicial Council now a part of our constitution is the safety valve against the executive onslaughts...and this safety valve cannot be allowed to be fused by any logic and under any circumstances'। সুপ্রিম কোর্ট ষোড়শ সংশোধনীকে Colorable Legislation হিসাবে আখ্যা দেয়।

সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের কার্যাবলি
অনুচ্ছেদ ৯৬(৪) অনুসারে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের দুই ধরনের দায়িত্ব রয়েছে। ১) বিচারকদের জন্য আচরণবিধি (Code of Conduct) প্রণয়ন এবং ২) বিচারকগণের আচরণ ও সামর্থ্য সংক্রান্তে তদন্ত করা। বিগত ৭ই মে ২০০০ তারিখে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি জনাব লতিফুর রহমান, বিচারপতি জনাব বি বি রায় চৌধুরী ও বিচারপতি জনাব এ এম মাহমুদুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল প্রথমবারের মত আচরণবিধি প্রণয়ন করেন। এছাড়াও, আপিল বিভাগ ষোড়শ সংশোধনী মামলায় ৩৯টি এবং মো. ইদ্রিসুর রহমান বনাম সৈয়দ শাহিদুর রহমান, ৬৮ ডিএলআর (এডি) ২৫৮, মামলায় ৪০টি আচরণবিধি নির্ধারণ করেন। ইদ্রিসুর রহমান মামলায় আদালত উল্লেখ করে যে, প্রদত্ত আচরণবিধিসমূহ চূড়ান্ত নয় বরং ব্যাখ্যামূলক ও উদাহরণ স্বরূপ। একজন বিচারককে শতবছরের প্রতিষ্ঠিত নিয়ম-কানুন ও নীতি-নৈতিকতা দ্বারা পরিচালিত হতে হবে।
এ যাবৎকালে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল একজন বিচারপতির বিরুদ্ধে আচরণবিধি ভঙ্গের তদন্ত করেছে। ২০০৩ সালের অক্টোবর মাসে হাইকোর্ট বিভাগের তখনকার বিচারপতি সৈয়দ শাহিদুর রহমানের বিরুদ্ধে অসাদু উপায়ে অর্থ গ্রহণের অভিযোগ ওঠে। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির তৎকালীন সভাপতি ও সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ সৈয়দ শাহিদুর রহমানের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ প্রকাশ্যে আনেন।  রাষ্ট্রপতি সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলকে বিষয়টি তদন্ত করতে নির্দেশ দেন। তৎকালীন প্রধান বিচারপতি কেএম হাসানের নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল বিষয়টি তদন্ত করে। তদন্ত শেষে কাউন্সিল অভিযোগের সত্যতা পায় এবং রাষ্ট্রপতির নিকট তার পদচ্যুতির সুপারিশ করে। অতঃপর রাষ্ট্রপতি তাকে পদচ্যুত করেন। রাষ্ট্রপতির সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে বিচারক একটি রিট আবেদন দায়ের করেন যা আপিল বিভাগ পর্যন্ত গড়ায়। মো. ইদ্রিসুর রহমান মামলায়, পূর্বোক্ত, আপিল বিভাগ সৈয়দ শাহিদুর রহমানের পদচ্যুতি বহাল রাখে।

২০১৯ সালের আগস্ট মাস থেকে হাইকোর্ট বিভাগের তিনজন বিচারপতিকে বিচারকাজ থেকে দূরে রাখা হচ্ছে। সে সময় সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়, রাষ্ট্রপতির সঙ্গে পরামর্শ করে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ওই বছর ২২শে আগস্ট অনলাইন সংবাদমাধ্যম বাংলানিউজে প্রকাশিত খবরে বলা হয়,  ‘রাষ্ট্রপতির সঙ্গে পরামর্শক্রমে প্রাথমিক অনুসন্ধানের পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের ৩ বিচারপতিকে বিচারকাজ থেকে বিরত রাখার সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে। পরে সেই তিন বিচারপতি ছুটির আবেদন করেন। এ তথ্য জানান হাইকোর্ট বিভাগের স্পেশাল অফিসার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান। নিজ কার্যালয়ে সুপ্রিম কোর্টের এ কর্মকর্তা  বলেন, ‘তিনজন বিচারপতির বিরুদ্ধে প্রাথমিক অনুসন্ধানের পরিপ্রেক্ষিতে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে পরামর্শক্রমে তাদের বিচারকাজ থেকে বিরত রাখার সিদ্ধান্তের কথা অবহিত করা হয় এবং পরবর্তীতে তারা ছুটির প্রার্থনা করেন।’ তবে তাদের বিরুদ্ধে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল অথবা ভিন্ন কোনো কর্তৃপক্ষ তদন্ত করছে কি-না তা নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন কোনো সুনির্দিষ্ট বক্তব্য প্রদান করেনি।

ইতিপূর্বে আরও দুটো ঘটনায় সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল পদক্ষেপ গ্রহণের পূর্বেই সংশ্লিষ্ট দুজন বিচারপতি পদত্যাগ করেন। হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি লতিফুর রহমান ও সাবেক প্রেসিডেন্ট জেনারেল এরশাদের ফোনালাপ মানবজমিন পত্রিকায় ফাঁস হয়। ঘটনাটি ক্যাসেট কেলেঙ্কারি নামে অধিক পরিচিত। অতঃপর, বিচারপতিকে দীর্ঘদিন বেঞ্চ থেকে সরিয়ে রাখা হয় এবং তিনি পদত্যাগ করেন। রাষ্ট্র বনাম এডিটর, মানবজমিন, ৫৭ ডিএলআর ৩৫৯, মামলায় এই ঘটনার দীর্ঘ আলোচনা রয়েছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ হাইকোর্ট বিভাগের একজন বিচারপতির সার্টিফিকেট নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করে। এ ঘটনায় নানা বিতর্কের এক পর্যায়ে ওই বিচারপতি পদত্যাগ করেন।

শেষ কথা
ষোড়শ সংশোধনী মামলার রায় অনুযায়ী সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের বিধান পুনঃপ্রতিষ্ঠিত (Restored) হয়েছে। পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হওয়ার পর সরকার রিভিউ আবেদন দায়ের করে। এই আবেদন মাননীয় চেম্বার জজের আদালতে শুনানির জন্য উপস্থাপন করা হয়নি। কোনো স্থগিতাদেশ বলবত নেই। সরকার সংবিধানের নতুন সংস্করণও প্রকাশ করেনি। এমতাবস্থায় নিঃসঙ্কোচে বলা যায়, সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল বর্তমানে কার্যকর আছে। তবে ৩ বিচারপতি বিরুদ্ধে তদন্তের বিষয়টি অস্পষ্টতার মোড়কে ঢাকা।

 [লেখক: সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী। সহযোগিতায়
শাইখুল ইসলাম ইমরান।
এলএলবি, এলএলএম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।]
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status