বাংলারজমিন

নেই ট্রাফিক ব্যবস্থা যানজটের শহর সান্তাহার

এমএ ইউসুফ, আদমদীঘি (বগুড়া) থেকে

১৬ অক্টোবর ২০২১, শনিবার, ৬:৫৭ অপরাহ্ন

শহরে যানবাহন রাখার কোনো নির্দিষ্ট বৈধ স্ট্যান্ড না থাকায় বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার পৌর শহর এখন যানজটের শহরে পরিণত হয়েছে। পশ্চিম বগুড়া তথা উত্তরাঞ্চলের রেলওয়ের সর্ববৃহত্তম রেল জংশন শহর সান্তাহার। জনগুরুত্বপূর্ণ সান্তাহার পৌর শহরে যানজট নিরসনের কোনো সুষ্ঠু ব্যবস্থা বা জনসাধারণের চলাচলের জন্য ট্রাফিক আইন প্রয়োগ না থাকায় সান্তাহার শহরবাসীর জন্য যানজট নিত্যদিনের সঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ সমস্যার সমাধানে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না। ফলে দীর্ঘদিন ধরে সমস্যাটি স্থায়ী হয়ে দাঁড়িয়েছে।
জানা গেছে, বর্তমানে সান্তাহার  পৌর শহরে প্রায় শতাধিক চার্জার রিকশা, ৩ শতাধিক ভ্যান, ৩ শতাধিক ব্যাটারিচালিত অটো চার্জার ও ৩ শতাধিক সিএনজিসহ শতাধিক ট্রাক ও ট্রাক্টর রয়েছে। এই বিপুল পরিমাণ যানবাহন রাখার জন্য শহরে নেই কোনো টার্মিনাল। পৌর কর্তৃপক্ষ শহরে যানবাহন অবস্থানের জন্য কোনো স্ট্যান্ড তৈরি করতে পারেনি। এ কারণে শহরজুড়ে বিক্ষিপ্তভাবে সকল প্রকার যানবাহন চলাচল করে। ফলে সৃষ্টি হয় ভয়াবহ যানজট। শহর ঘেঁষে একটি বাইপাস সড়ক থাকলেও শহরের প্রায় ২ হাজার স্থানীয় ট্রাক রেলওয়ে মালগুদাম, সিএসডি খাদ্যগুদাম, সাইলো, বাফার সার গুদাম, কেডিসি থেকে প্রতিনিয়ত মালামাল লোড আনলোড করে শহরের মধ্য দিয়ে চলাচল করে। এমনকি পূর্বাঞ্চলের ঢাকা, টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, বগুড়া এবং পশ্চিমাঞ্চলের রাজশাহী, চাঁপাই নবাবগঞ্জ, নওগাঁর ট্রাক সহ সকল প্রকার যানবাহন এ শহরের একমাত্র রেলওয়ের সরু রাস্তা দিয়ে চলাচল করায় প্রতিনিয়ত যানজট সৃষ্টি হয়। অপরদিকে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের চোখের সামনে শহরের জনগুরুত্বপূর্ণ রাস্তার ওপর বাস রেখে যাত্রী তোলার কারণে যানজট আরও প্রকট আকার ধারণ করে। এতে স্থানীয় জনসাধারণ বা পথচারীরা সান্তাহার টাউন পুলিশ ফাঁড়ির কর্মকর্তাকে অবগত করলেও রহস্যজনক কারণে তারা এ বিষয়ে নীরব থাকে।
শহরের জনগুরুত্বপূর্ণ স্থানে স্বল্প সময়ে জন্য পুলিশ থাকলেও ট্রাফিক আইন প্রয়োগ না করার কারণে অবাধে খেয়াল খুশিমতো যানবাহন চলাচল করায় এ শহরের প্রায় সব রাস্তায় সব সময় যানজট লেগেই থাকে। যানজটের কারণে স্কুল, কলেজপড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীরা স্কুল কলেজে সময় মতো পৌঁছতে পারে না। বেশির ভাগ দুর্ভোগের শিকার হতে হয় রেলযাত্রীদের। স্থানীয় সংসদ সদস্য সমস্যাটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অবগত করার পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে যানজট নিরসনের জন্য সান্তাহার টাউন পুলিশ ফাঁড়িতে দুইজন ট্রাফিক নিয়োগ করেন। অজ্ঞাত কারণে কিছুদিন পর তাদের ফিরিয়ে নেয়া হয়। গত ১২ বছর ধরে আলাদা ট্রাফিক ব্যবস্থা বা ট্রাফিক সার্জন না থাকায় এখন পর্যন্ত এ জনগুরুত্বপূর্ণ শহরে ভয়াবহ যানজট লেগে থাকে সব সময়।
এ বিষয়ে সান্তাহার পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক আরিফুল ইসলাম বলেন, আমার পুলিশ সদস্যদের দিয়ে সব সময় যানজট নিরসনের  চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তবে এত বড় একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যস্ত শহরে  ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণে কোনো ট্রাফিক পুলিশ না থাকায় আমরা খুব সমস্যায় আছি। অচিরেই বগুড়া জেলার সুযোগ্য পুলিশ সুপার মহোদয় আমাকে দু’টি ট্রাফিক পুলিশের ব্যবস্থা করে দিবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। তবে এক্ষেত্রে ট্রাফিক পুলিশের পাশাপাশি শহরে নির্দিষ্ট টার্মিনাল ও স্ট্যান্ড থাকতে হবে। যানজটের বিষয়ে সান্তাহার  পৌরসভার মেয়র তোফাজ্জল  হোসেন ভুট্টু বলেন, সান্তাহার শহরকে যানজটমুক্ত শহর হিসেবে তিনিও দেখতে চান। তার পরিকল্পনা রয়েছে সান্তাহারবাসীকে সঙ্গে নিয়ে সবার সহযোগিতায় শহরে একটি টার্মিনাল ও কয়েকটি স্ট্যান্ড তৈরি করার।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status