বাংলারজমিন

কেসিসি’র আউট সোর্সিং শ্রমিকদের বেতনের টাকা আত্মসাতের ঘটনায় তদন্ত কমিটি

স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা থেকে

১৫ অক্টোবর ২০২১, শুক্রবার, ৯:১৫ অপরাহ্ন

খুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি) আউট সোসিং (বহিরাগত) শ্রমিকদের ভুয়া হাজিরাসহ বেতনের টাকা আত্মসাতের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয় বলে জানান কেসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. আজমুল হক। গঠিত তদন্ত টিমের সদস্যরা হলেন-প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা (সিআরও) মো. মনোয়ার হোসেন, বাজেট কাম একাউন্ট অফিসার (বিএও) এমএম হাফিজুর রহমান ও ভেটেরিনারি অফিসার (ভিও) ডা. রেজাউল করিম। তবে কত দিনে তদন্ত শেষ করতে হবে তা তিনি বলতে পারেননি। তবে যুগ যুগ ধরে তদন্ত চলবে না, বিধি মোতাবেক তদন্ত শেষ করতে হবে বলে তিনি জানান।
কেসিসির সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, হাফিজুর রহমান। তার মূলপদ ট্রাক শ্রমিক। বর্তমানে তিনি আউট সোর্সিং শ্রমিকদের সুপারভাইজার দায়িত্ব পালন করছেন। তার বিরুদ্ধে শতাধিক আউট সোর্সিং শ্রমিকের বেতনের টাকা কম দেয়া, ভূয়া হাজিরা দেয়া, কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া শ্রমিকদের হাজিরা টিপ সই নিয়ম ব্যবহার করাসহ নানা অভিযোগে তাকে গত ৯ই মে শোকজ করা হয়। তিনি ১৬ই মে শোকজের জবাব দেন। জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় গত ২৭শে মে কর্তৃপক্ষ কেসিসির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাজিবুল আলমকে অভিযোগ তদন্তের দায়িত্ব দেন। তদন্তে শ্রমিকদের স্বাক্ষর ব্যতীত টিপসই দিয়ে বিল প্রদান করা হয়েছে। এতে করে হাফিজুর শ্রমিকদের বেতন কারচুপি করে নিজে আত্মসাৎ করেছে বলে প্রমাণিত হয়। গত ১৭ই জুন তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। এরই প্রেক্ষিতে গত ৩১শে আগস্ট হাফিজুরের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হয়। এ মামলা দায়েরের পর হাফিজুর গত ১৫ই সেপ্টেম্বর জবাব দাখিল করেন। তারই প্রেক্ষিতে নতুন করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে কেসিসির ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রধান মো. আজমুল হক জানান। তিনি বলেন, প্রাথমিক তদন্তে হাফিজুরের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। এখন চূড়ান্ত প্রতিবেদনের জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ রিপোর্টে সে যদি দোষী সাব্যস্ত হয় তবে বিধি অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান। এদিকে অনিয়মের দায়ে হাফিজুরকে ওই পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। এখন ওই পদে দায়িত্ব পালন করছেন আনোয়ার হোসেন নামের একজন কর্মচারী।
অন্যদিকে তার স্ত্রী বিউটি বেগম কেসিসির মাস্টাররোল ঝাড়ুদার শ্রমিক। ২০নং ওয়ার্ডে তার ঝাড়ু দেয়ার দায়িত্ব থাকলেও তিনি বর্তমানে দেন না। তার পরিবর্তে অন্য একজন আউট সোর্সিং শ্রমিককে দিয়ে ঝাড়ুর কাজটি করিয়ে নেয়া হয়। এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশের পর টনক নড়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। অবশেষে হাফিজুরের স্ত্রী ঝাড়ুদারের কাজ শুরু করেছেন। তিনি নিয়মিত ডিউটি পালন করছেন বলে হাফিজুর দাবি করেন।
এছাড়া আউট সোর্সিং শ্রমিকরা চার মাসের বেতন না পেয়ে আন্দোলনে নামেন। বিষয়টি মেয়র জানার পর তাদের বেতনের ব্যবস্থা করে দেন। বেতন না পাওয়ার জন্য আউট সোর্সিং শ্রমিকরা তখন হাফিজুরকে দায়ী করছিলেন। কারণ শ্রমিকদের দৈনিক হাজিরা চারশত টাকা হলেও তিনি তাদের হাজিরা দিতেন ৩৫০ টাকা করে।
আউট সোর্সিং সুপার ভাইজার হাফিজুর রহমান বলেন, তার স্ত্রী অসুস্থ। এ জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তার অনুমতি সাপেক্ষে অন্য লোককে দিয়ে ঝাড়ুদারের কাজ করিয়েছি। এখন সুস্থ হয়ে তার স্ত্রী নিয়মিত ডিউটি পালন করছেন বলে তিনি দাবি করেন। তার ছেলের বয়স ২১ বছর। সে কলেজে পড়ে। সে ১৮নং ওয়ার্ডে আউট সোর্সিং শ্রমিক হিসেবে কাজ করে। যা ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নিজ প্যাডে কাজ করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, কোনো টাকা আত্মসাৎ করা হয়নি। সিস্টেমে ভুল। শ্রমিকদের হাজিরা টিপসই অনেক আগ থেকে নেয়া হয়েছে। তখন কোন কর্মকর্তা এ ব্যাপারে আপত্তি করেননি। এখন করলে তার কিছু করার নেই বলে তিনি দাবি করেন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status