খেলা

দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চাইলেন ফুটবলাররা

স্পোর্টস রিপোর্টার, মালে (মালদ্বীপ) থেকে

২০২১-১০-১৫

ম্যাচের ৮৬তম মিনিটে নেপালকে উজবেকিস্তানের রেফারি যে পেনাল্টি ‘উপহার’ দিয়েছেন, সেটি যেকোনো বিচারেই বিতর্কিত। ম্যাচ শেষে নেপাল কোচের ‘নো কমেন্টস’ সেই বির্তক আরো বাড়িয়েছে। তামাং গুরুংয়ের ক্রস বাংলাদেশের গোলমুখে উড়ে এলে অঞ্জন বিষ্টা হেড করতে লাফিয়েছিলেন। বিশ্বনাথ ঘোষ ও সাদউদ্দিন অঞ্জনকে হেডে বাধা দেয়ার চেষ্টা করেছেন কেবল। তাদের কারো সঙ্গেই ধাক্কা লাগেনি এই নেপালি ফরোয়ার্ডের। এ সময় ডাইভ দিয়ে মাটিতে পড়ে যান অঞ্জন বিস্টা। বেশ দুরে দাঁড়িয়েই অঞ্জনের সেই পড়ে যাওয়ার পেছনে বিশ্বনাথের দায় খুঁজে পান রেফারি। তাকে হলুদ কার্ড দেখিয়ে বাঁশি বাজান পেনাল্টির। সিদ্ধান্তটির পর ক্ষোভে ফেটে পড়েন বাংলাদেশের খেলোয়াড়েরা।  ম্যাচ শেষে মালদ্বীপের পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা সরিয়ে নেন রেফারিকে। রেফারির এই ভুলেই শেষ পর্যন্ত পুড়তে হয়েছে স্বপ্নভঙ্গের যন্ত্রণায়। ১৬ বছরের অপূর্ণ সেই যন্ত্রণায় ছটফট করা ফুটবলাররা ক্ষমা চেয়েছেন দেশবাসীর কাছে। ম্যাচ শেষে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজেদের কষ্ট-যন্ত্রণা প্রকাশ করেছেন অনেকেই। ডিফেন্ডার তপু বর্মণ লিখেছেন, ‘আমরা দুঃখিত, ক্ষমাপ্রার্থী আপনাদের কাছে। সব ভক্ত, বিশেষ করে মালদ্বীপের প্রবাসী ভক্তদের ভালবাসার প্রতিদান দিতে পারিনি। কতটা খারাপ লাগছে আমাদের বলে বোঝাতে পারবো না। কঠিন সময় সবাই পাশে থাকবেন, এই প্রার্থনা করি।’ নেপাল ম্যাচে চোখের নিচে আঘাত পেয়েছেন বিপলু আহমেদ। ম্যাচ শেষে তাকে যেতে হয়েছে হাসপাতালে।  সেখানে বসেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি লিখেছেন, ‘ডান চোখের নিচে তিনটি সেলাই দিতে হয়েছে। ডাক্তার বিশ্রামে থাকতে বলেছে। কিন্তু আমি ও আমার দলের সবাই ঘুমহীন রাত অতিবাহিত করেছি।’ অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া সমর্থকদের ধন্যবাদ জানিয়ে লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের সব সমর্থককে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমি সবাইকে ভালোবাসি। যদি তাদের হাতে পুরো বিশ্ব তুলে দিতে পারতাম... যেভাবে তারা আমাকে ও পুরো দলকে ভালোবাসা দিয়েছে। তবে এই ফলে আমি হতাশ। আমরা ফাইনালে যেতে পারিনি। দুঃখিত সমর্থক! আশা করছি, আমরা আরও শক্তিশালী হয়ে ফিরে আসতে পারবো।’ জাতীয় দলের ম্যানেজার সত্যজিত দাশ রুপুও ব্যথিত। গতকাল টিম হোটেল জোনে তিনি বলেন, ‘এভাবে আমাদের বিদায় নিতে হবে, চিন্তাও করতে পারিনি। বাজে রেফারিংয়ের কারণে ফাইনালে জায়গা করে নিতে পারলাম না। রাতে সেভাবে আমরা ঘুমাতেই পারিনি। ছটফট করেছি শুধু। চিন্তা করেছি এ কী হলো!’ দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশের বিপক্ষে বাজে রেফারিং হচ্ছে জানিয়ে রুপু বলেন, গত এসএ গেমসেও আমাদের একটি নিশ্চিত গোল বাতিল করেছিল রেফারি। ওই গোলটি হলে আমরা এসএ গেমসের ফাইনাল খেলতাম। মাঠের খেলার পাশাপাশি আমাদের এদিকে নজর না দিলে এই অবস্থা চলতেই থাকবে। প্রবাসী সমর্থকদের কাছে ক্ষমা চেয়ে গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকু বলেন, ‘আপনারা মাঠে এসে যেভাবে আমাদের সমর্থন যুগিয়েছেন, সত্যিই আমরা অভিভুত। আমাদের ক্ষমা করবেন। আমরা আপনাদের প্রত্যাশা মেটাতে পারিনি। সত্যি বলতে রেফারি আমাদের স্বপ্নকে গলা টিপে হত্যা করেছে।  দীর্ঘ ১৬ বছর পর ফাইনালে ওঠার দোরগোড়ায় এসে এভাবে বিদায় নেয়াটা যে অনেক কষ্টের, ব্যথার!
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status