বাংলারজমিন

লক্ষ্মীপুরে অতিরিক্ত দামে সার বিক্রি, ক্ষুব্ধ কৃষকরা

লক্ষ্মীপুর সংবাদদাতা

১৫ অক্টোবর ২০২১, শুক্রবার, ৮:৩৯ অপরাহ্ন

লক্ষ্মীপুরে সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অতিরিক্ত দামে সার বিক্রির অভিযোগ উঠেছে বিসিআইসি ডিলারদের বিরুদ্ধে। নির্দিষ্ট স্থানে সার বিক্রি না করে চড়া দামে অন্যত্র বিক্রি করা হয় বলে অভিযোগ করছেন চাষিরা। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে ডিলাররা বলছেন, নির্ধারিত মূল্য ও এলাকার বাইরে গিয়ে কোনো সার বিক্রি করা হচ্ছে না। সার কারসাজি ও কৃষকদের হয়রানির প্রমাণ পেলে ডিলারদের লাইসেন্স বাতিলসহ আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলছেন, জেলা কৃষি বিভাগ। লক্ষ্মীপুরে আমনের ভরা মৌসুমে দেখা দিয়েছে রাসায়নিক সারের সংকট। এতে ব্যাহত হচ্ছে ধানের আবাদ। উপায় না পেয়ে বেশি দামে কিনতে হচ্ছে ইউরিয়া, টিএসপিসহ অন্যান্য সার। যে কারণে বাড়তে পারে ধানের উৎপাদন খরচ। জেলা কৃষি সম্প্রাসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ৫টি উপজেলার ৫৮টি ইউনিয়ন, ৪টি পৌরসভায় বিসিআইসি ও বিএডিসির সার ডিলার রয়েছে ৯০ জন। এর বাইরে খুচরা ডিলার রয়েছে ৪৪৭ জন। ২০২০-২১ অর্থবছরে ইউরিয়া, টিএসপিসহ অন্যান্য সারের চাহিদা রয়েছে প্রায় ৪০ হাজার টন। এবার জেলার ৫টি উপজেলায় আমন ধানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৭৬ হাজার ৫শ’ হেক্টর জমিতে। যা গত বছরের চেয়ে ৫ হাজার হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে বেশি। ৮১ হাজার ৭শ’ হেক্টর জমিতে আমন ধান আবাদের আশা করছেন কৃষি বিভগ। এদিকে; কৃষকরা অভিযোগ করে বলেন, প্রান্তিক কৃষকদের সুবিধার্থে সরকার প্রতিটি এলাকায় ডিলার নিয়োগ করলেও তা কোনো কাজে আসছে না। এখান থেকে খুচরা ডিলার ও প্রান্তিক কৃষকরা সরকার নির্ধারিত মূল্যে সার কেনার কথা। কিন্তু তা হচ্ছে না। প্রতি কেজি সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে ৪-৭ টাকা বেশি দরে কিনতে হচ্ছে। এতে করে ধানের উৎপাদন খরচ বাড়ার আশঙ্কা করছেন তারা। দ্রুত এসব বিষয়ে ব্যবস্থা না নিলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে চাষিরা। চররুহিতার কৃষক তোফায়েল আহমদ, চররমনী মোহনের দেলোয়ার হোসেনসহ কয়েকজন কৃষক বলেন, বিসিআইসি ডিলারদের কাছ থেকে সার কিনে এনে খুচরা বিক্রি করা হয়। সরকার নির্ধারিত মূল্যে প্রতি কেজি ইউরিয়া ১৬ টাকা, টিএসপি ২২ টাকা, এমওপি (পর্টাস) ১৫ টাকা, ডিএপি (ড্যাব) ১৬ টাকা। কিন্তু ডিলাররা সরকার নির্ধারিত মূল্যে সার বিক্রি না করে প্রতি কেজি ৪-৭টাকা অতিরিক্ত মূল্যে কিনতে বাধ্য করছে। বর্তমানে প্রতি কেজি ইউরিয়া সারসহ অন্যান্য সারে সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে অতিরিক্ত দামে বিক্রি করার অভিযোগ করেছেন কৃষক ও খুচরা বিক্রেতারা। এদিকে; রামগতির বড়খেরী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. হাসান মাহমুদ নিজাম বলেন, ডিলাররা একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সারগুলো অন্যত্র বিক্রি করে দেয়।
এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দেয়া হয়েছে। ডিলারের কাছে খুচরা বিক্রেতা ও কৃষকরা জিম্মি হয়ে পড়েছে। সত্যিকার অর্থে কোনো ডিলার ঠিকমত  কৃষকদের কাছে সার বিক্রি না করে গোপনে অন্যত্র বিক্রি করে দেয়। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে রামগতির ডিলার মো. শাখাওয়াত হোসেনসহ কয়েকজন ডিলার বলছেন, নির্ধারিত মূল্যে ও এলাকার বাইরে গিয়ে কোনো সার বিক্রি করা হচ্ছে না। সরকার নির্ধারিত মূল্যে সার বিক্রি করা হচ্ছে। একটি গোষ্টি এসব বিষয়ে ষড়যন্ত্র করছে। ব্যবসায়ীরা ষড়যন্ত্রের শিকার। লক্ষ্মীপুর কৃষি সম্প্রাসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মো. জাকির হোসেন বলেছেন, জনবল সংকটের কারণে অনেক কাজ করা যাচ্ছে না। তারপরও সার কারসাজি ও কৃষকদের হয়রানির প্রমাণ পেলে ডিলারদের লাইসেন্স বাতিলসহ আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ বিষয়ে কোনো ছাড় দেয়া হবে না।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status