দেশ বিদেশ

কুমিল্লা ইপিজেড’র বিষাক্ত বর্জ্যের প্রতিকার চেয়ে মন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি

স্টাফ রিপোর্টার

১৩ অক্টোবর ২০২১, বুধবার, ৯:০১ অপরাহ্ন

কুমিল্লা ইপিজেড’র বিষাক্ত তরল বর্জ্যে অর্ধশত গ্রামের ক্ষতি হচ্ছে অভিযোগ করে এর প্রতিকার চেয়ে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী শাহাব উদ্দিনের কাছে স্মারকলিপি দেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কুমিল্লা জেলা সমবায় কৃষক সংহতি পরিষদের নেতৃবৃন্দ মন্ত্রীর কাছে এ স্মারকলিপি প্রদান করেন। এ সময় পরিষদের উপদেষ্টা সিরাজুল হক ও আহ্বায়ক এডভোকেট আকতার হোসেনসহ ১৫ সদস্যের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। মন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি পেশ করার পাশাপাশি কুমিল্লা ইপিজেড এবং এর বাইরের দুইটি শিল্প প্রতিষ্ঠানের রাসায়নিক (বিষাক্ত) তরল বর্জ্য আশপাশের অর্ধশতাধিক গ্রামের ফসলের জমি, খাল-বিল, নদী-নালা ও জলাশয়ের পানিতে মিশে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তারা।  
কুমিল্লা জেলা সমবায় কৃষক সংহতি পরিষদের আহ্বায়ক এডভোকেট আকতার হোসেন বলেন, কুমিল্লা ইপিজেট এবং এর বাইরের দুইটি শিল্প প্রতিষ্ঠানের রাসায়নিক (বিষাক্ত) তরল বর্জ্য আশপাশের অর্ধশতাধিক গ্রামের যে মারাত্মক ক্ষতি করছে এ বিষয়ে মন্ত্রীর কাছে স্মারকরিপি দিয়েছি এবং সার্বিক সমস্যা মৌখিকভাবে উপস্থাপন করেছি। এ সমস্যা সমাধানে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার বিষয়ে মন্ত্রী আমাদের আশ্বস্ত করেছেন।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, তরল বর্জ্যের কারণে জলজ উদ্ভিদ-মাছ মরে যাচ্ছে, কালো পানি থেকে ছড়াচ্ছে উৎকট গন্ধ। আগে কৃষি জমির পানিতে কাজ করলে শরীরে চুলকানি হতো, এখন পচন ধরে। দেড়শ বছরের পুরনো কুমিল্লা শহরের পয়ঃ ও পানি নিষ্কাশণের জন্য আজো স্যুয়ারেজ পদ্ধতি চালু হয়নি। সিটি করপোরেশন প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ বছরেও জলাবদ্ধতায় দুর্ভোগের নিরসন হয়নি। বর্তমানে এ শহরে প্রায় সাড়ে ৪ লাখ বাসিন্দা রয়েছে। এখানকার পয়ঃ ও পানি ৩টি খাল দিয়ে দক্ষিণের ডাকাতিয়া নদীতে প্রবাহিত হয়ে থাকে।
এতে বলা হয়, দখল-দূষণে সরু হয়ে যাওয়া এসব খালের পানির সঙ্গে ইপিজেডের বিষাক্ত রাসায়নিক তরল বর্জ্য দিশাবন্দ, ঢুলিপাড়া, কাজীপাড়া, উত্তর হীরাপুর, শ্রীবল্লভপুর, মোস্তফাপুর, গোপিনাথপুর, দক্ষিণ রামপুর, গোপালনগর, বামিশা, সাতবাড়িয়া, যশপুর, জয়পুর, কদমতলী, শাকতলা, নোয়াগাঁও, সুলতানপুর, দুর্গাপুর, লক্ষ্মীপুর, হোসেনপুর, নোয়াপাড়া, লোলবাড়িয়া, শ্রীনিবাস, উত্তর বিজয়পুর, ছনগাঁওসহ শহরের দক্ষিণাংশের অর্ধশতাধিক গ্রামের কৃষি জমি, খাল-বিল, নদী-নালা ও জলাশয়ের পানিতে মিশছে। এছাড়া দক্ষিণ দুর্গাপুর এলাকার সফিউল আলম স্টিল মিল ও বাতাবাড়িয়া এলাকার সামিট গ্রুপের বিদ্যুৎ প্রকল্পের বর্জ্য এসব এলাকার পানিতে মিশে একাকার হয়ে কৃষি জমির ফসল, গাছ-পালা, বাড়িঘর ও জীববৈচিত্র্যের মারাত্মক ক্ষতি করছে। এছাড়াও বিষাক্ত বর্জ্যে জলজ উদ্ভিদ-মাছ মরে যাচ্ছে, কালো পানি থেকে ছড়াচ্ছে উৎকট গন্ধ। কৃষি শ্রমিকরা জমির পানিতে কাজ করলে শরীরে চুলকানি হতো, এখন পচন ধরে। এর প্রতিকার করা না গেলে শহরের দক্ষিণের অন্তত ৪০ কিলোমিটার এলাকার মানুষজনকে পরিবেশ বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হবে।
এর আগে গত রোববার কুমিল্লা জেলা সমবায় কৃষক সংহতি পরিষদের প্রধান উপদেষ্টা ও সাবেক এমপি মনিরুল হক চৌধুরী ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার সমবায় সমিতির সদস্য এবং কৃষকদের নিয়ে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র মনিরুল হক সাক্কু এবং জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের কাছে ক্ষতিকর বর্জ্যের প্রতিকার চেয়ে স্মারকলিপি প্রদান করেন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status