বাংলারজমিন

মির্জাপুর পোস্ট অফিসে টাকার জন্য হাহাকার

মো. জোবায়ের হোসেন, মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) থেকে

১৪ অক্টোবর ২০২১, বৃহস্পতিবার, ৮:১১ অপরাহ্ন

নানা প্রয়োজনে পোস্ট অফিসে গচ্ছিত অর্থ উত্তোলন করতে চান অসংখ্য আমানতকারী। কিন্তু দিনের পর দিন পোস্ট অফিসে গিয়ে টাকা উত্তোলন করতে পারছেন না আমানতকারীরা। টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে টাকা উত্তোলন নিয়ে এমন ভোগান্তিতে পড়েছেন আমানতকারীরা।
গতকাল সোমবার সরজমিনে মির্জাপুর পোস্ট অফিস কার্যালয়ে দেখা গেছে, অন্তত শতাধিক আমানতকারী টাকা উত্তোলনের জন্য ভিড় জমিয়েছেন। তাদের চোখে-মুখে ক্ষোভ, হতাশা আর উৎকণ্ঠা লক্ষ্য করা গেছে। আমানতকারীরা সময়মতো টাকা উত্তোলনে ব্যর্থ হওয়ায় তাদের মধ্যে পোস্ট অফিস নিয়ে এক ধরনের নেতিবাচক ধারণা তৈরি হচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পোস্ট অফিসে কর্মরত একজন বলেন, ৩৫ কোটি টাকার চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। প্রতিদিন আরও প্রায় কোটি টাকার চাহিদা তৈরি হচ্ছে কিন্তু আমরা টাকা পাচ্ছি না। গত ১লা অক্টোবর থেকে কর্তৃপক্ষ প্রতিদিন ১ কোটি টাকা সরবরাহ করলেও তা আবার বন্ধ হয়ে গেছে। আমানতকারীরা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে। কিন্তু আমরা কি করবো। গত জুলাই মাস থেকে এমন পরিস্থিতি হয়েছে বলে তিনি জানান। এদিকে অধিকাংশ কর্মদিবসেই মির্জাপুর পোস্ট অফিসের পোস্টমাস্টার অফিসে আসেন না বলে অভিযোগ করেন আমানতকারীরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে না পেরে পোস্টমাস্টার নিজেকে আড়ালে রাখার চেষ্টা করেন বলে আমানতকারীদের ধারণা। এক বিধবা নারী বলেন, ‘পোস্ট অফিসে ৬ লাখ টাকা রাখছিলাম। এহন জমি কিনুম কিন্তু টাকা উঠাতে পারছি না। দুই মাস ধইরা ঘুরতাছি কিন্তু টাকা দিতাছে না। টাকার জন্য আমি জমির দলিল করতে পারছি না।’ শামছুল আলম নামের আরেক আমানতকারী বলেন, ‘পোস্ট অফিসে ৫ লাখ টাকা রাখছিলাম। একটা জমির বায়না করছি কিন্তু টাকার জন্য দলিল করতে পারছি না। তিন মাস হলো টাকার জন্য ঘুরছি। পোস্ট অফিসের লোক আজকে আসেন, কালকে আসেন, টাকা শেষ হইয়া গেছে এরকম বলছেন। ফজল দেওয়ান নামের এক ব্যক্তি ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, আমার মেয়ে ২ লাখ টাকা রাখছে পোস্ট অফিসে। মেয়ে এতদিন ঘুরছে। আমিও ১৫-২০ দিন ধইরা ঘুরতাছি কিন্তু টাকা উঠাইয়া পারতাছি না। খালি তারিখ দেয় কিন্তু টাকা দেয় না। একই রকম অভিযোগ করেছেন আরও একাধিক আমানতকারী।’ পোস্ট অফিস সংলগ্ন বাসিন্দা ফজলু মিয়া বলেন, বিগত ৩০ বছরে পোস্ট অফিসের এমন অবস্থা দেখিনি। প্রতিদিন মানুষ টাকার জন্য পোস্ট অফিসে এসে কান্নাকাটি করে। আমি বাসায় নিয়ে তাদের মাথায় পানি দেই। কারও কারও হার্ট ফেইল করার উপক্রম হয়। সরকারের কাছে দাবি জানাই যেন দ্রুত এই সমস্যার সমাধান করা হয়। এ ব্যাপারে জানতে পোস্টমাস্টার আবদুর রাজ্জাকের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তার মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status