অনলাইন

আতাউস সামাদ স্মৃতি পুরস্কার পেলেন ফটো সাংবাদিক রফিকুর রহমান

স্টাফ রিপোর্টার

২৭ সেপ্টেম্বর ২০২১, সোমবার, ৯:৩৮ অপরাহ্ন

প্রথমবারের মতো আতাউস সামাদ স্মৃতি ‘২০২১’ পুরস্কার পেয়েছেন বার্তা সংস্থা রয়র্টাসের ফটোসাংবাদিক এবিএম রফিকুর রহমান। রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আতাউস সামাদ স্মৃতি পরিষদ আয়োজিত এক স্মরণ সভায় তাকে এই পুরস্কার দেয়া হয়।
সারা বছর কাজের গুরুত্ব ও মর্যাদা বিবেচনায় দেশের বরেণ্য এই ফটোসাংবাদিককে এই সম্মাননা দেয়া হয়। বাংলাদেশের কোনো ফটোসাংবাদিক হিসেবে রফিকুর রহমানই প্রথম পেলেন এই স্বীকৃতি ও সম্মাননা। রয়র্টাসের সঙ্গেই তার যুক্ততা ৪০ বছর।
দীর্ঘ ৫১ বছরের সাংবাদিকতা জীবনে রফিকুর রহমান ক্যামেরাবন্দি করেছেন দেশে ও বিদেশের উত্তাল, রোমহর্ষক অজস্র সব ঘটনাপুঞ্জ। আর রাজনৈতিক বাঁকবদল, উত্থান- আন্দোলন, প্রলয়ংকরী ঝড়-ঝঞ্ঝা, বন্যা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ- মানবিকতাসহ নানা বিষয়ে তোলা তার স্থিরচিত্র এবং ভিডিও পাঠক-দর্শকের সংবাদক্ষুধা নিবৃত্ত করেছে।
স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, আজকের সকল পেশার মধ্যে বিভক্তি এসেছে। পুলিশদের এসোসিয়েশন হয়েছে, চিকিৎসকদের এসোসিয়েশন হয়েছে, অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিসের লোকেরা বিবৃতি দেন এবং সামরিক বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত অফিসারদেরও এসোসিয়েশন আছে। কোনো অন্যায় হলে তারাও বিবৃতি দেন।
সাংবাদিকদের স্বাধীনতা রক্ষা করার জন্য তাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়া দরকার মন্তব্য করে তিনি বলেন, আমরা জানি, সাংবাদিকরা এখন কি বিপদের মধ্যে রয়েছে। কারণ সংবাদপত্রের স্বাধীনতা মালিক হরণ করছে, অন্যদিকে রাষ্ট্রও হরণ করছে। তখন সাংবাদিকদের স্বাধীনতা রক্ষা করার জন্য ঐক্যবদ্ধ হওয়া দরকার।
তিনি বলেন, আমরা দেখছি, শীর্ষ সাংবাদিক সংগঠনের নেতাগুলোর বিরুদ্ধে অপমানজনক তৎপরতা চলছে। তাদের বিরুদ্ধে আপনারা যে রকম ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন- আমরা মনে করি আপনাদের এই ঐক্য স্থায়ী হওয়া দরকার।
আতাউস সামাদের প্রতি স্মৃতিচারণ করে সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমাদের সকলেরই স্মরণীয় আছে, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার সময় তিনি পাকিস্তান অবজারভারের সংবাদদাতা ছিলেন। কিন্তু তিনি আরেকটা বড় কাজ করেছিলেন। সেটা হচ্ছে, শেখ মুজিবুর রহমানের চিঠি মাওলানা ভাসানীর কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন। এটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটা কাজ ছিলো। এই যে কাজ, এটা তো অন্য কোনো সাংবাদিক করতে পারলেন না।
এরকম ঘটনা একজন সাংবাদিকের জীবনে সবসময় আসে না। আমরা তাকে দেখেছি ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান সময়, একাত্তরের যুদ্ধের সময় এবং এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের সময়। এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের সময় তিনি কারাভোগ করেছেন। এটা ঐতিহাসিক ঘটনা।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, আতাউস সামাদ যখন একটি রিপোর্ট কনসেপ্ট করতেন, সেটি ডেলিভারি হওয়া পর্যন্ত তিনি শান্তি পেতেন না। কিছুতেই শান্ত হতেন না। মাঝে মধ্যে ফোন করলে তিনি এক ঘন্টার মত কথা বলতেন। এর কারণ হচ্ছে, তিনি সেখানে খবরটা বের করতে চান এবং বের করতেন।
আজকের পত্রিকার সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. গোলাম রহমান বলেন, আতাউস সামাদ সত্যের উপর ভিত্তি করে সাংবাদিকতা করেছেন। তিনি সবদিক থেকে তথ্যকেই মর্যাদা দিয়েছেন। তিনি ছিলেন সত্যান্বেষী, এটাই তার সবচেয়ে বড় চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদের সভাপতিত্বে ও কবি হাসান হাফিজের সঞ্চালনায় স্মরণ সভায় সাংবাদিক নাঈমুল ইসলাম খান, কবি হেলাল হাফিজ, বিএফইউজে মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমদ, দি নিউনেশন সম্পাদক মোস্তফা কামাল মজুমদার, দি ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেসের যুগ্ম সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ, মুন্নী সাহা, একেএম মহসিন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status