এক্সক্লুসিভ
হিংসার বলি কৃষক লিয়াকত আলী
স্টাফ রিপোর্টার, সিলেট থেকে
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২১, সোমবার, ৯:১২ অপরাহ্ন
সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জের কৃষক লিয়াকত আলী হিংসার বলি হয়েছেন। তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেছে পরিবার। হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে আদালতে দাখিলকৃত মামলার এজাহারেও এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে উল্লেখ করেছেন তার ছেলে নুরুল ইসলাম। গত ১৬ই সেপ্টেম্বর দুপুরের দিকে সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার সুলতানপুর গ্রামের হাওরে একই গ্রামের মৃত উসমান আলীর ছেলে মাতাব মিয়া ও তার দলবলের হামলায় মারাত্মক আহত হন একই গ্রামের লিয়াকত আলী। প্রথমে ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গত ১৯শে সেপ্টেম্বর সিলেটের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট চতুর্থ আদালতে ৯ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন লিয়াকতের ছেলে নুরুল ইসলাম। মামলায় মাতাব উদ্দিনকে প্রধান আসামি করা হয়। এজাহারে উল্লেখ করা হয়; হাওরে নিজের ধানক্ষেতে কাজ করতে গিয়েছিলেন লিয়াকত আলী ও তার ছেলে নুরুল ইসলাম। লিয়াকত সারাদিন কৃষি নিয়েই ব্যস্ত থাকেন। সেদিন তিনি নিজের ক্ষেতে গিয়ে দেখেন পাশে নিজের জমিতে ৮-১০ জন শ্রমিক নিয়ে কাজ করছেন মাহতাব। তিনি তার ধান কেটে লিয়াকতের ক্ষেতে রেখেছিলেন। এতে তার অনেক ধান নষ্ট হয়ে যায়। এর কারণ জানতে চাইলে উভয়পক্ষে শুরু হয় কথা কাটাকাটি। নুরুল তাদের কাটা কিছু ধান রাখতে বাড়িতে যাচ্ছিলেন। এ সময় মাহতাব ও তার লোকজন লিয়াকতের ওপর হামলা করে। তাদের মারধরে মারাত্মক আহত ও রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন লিয়াকত। কিন্তু তখনো আসামিরা তাকে কিল ঘুষি ও লাথি মারতে থাকে। এক পর্যায়ে নুরুল ও উপস্থিত অন্যান্যের বাধার মুখে হামলাকারীরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। তার পারিবারিক সূত্রের দাবি, লিয়াকতের মূল বাড়ি পাশের মানিককোনায়। সুলতানপুরে তিনি নতুন বাড়িসহ কিছু জমিজমা ক্রয় করেছিলেন। পাশাপাশি আরও প্রচুর জমি লিজ বা বর্গা নিয়েও তিনি চাষ-বাস করে জীবন চালিয়ে যাচ্ছিলেন। আর মাহতাবের বাড়ির পাশেও তিনি জমি চাষ করতেন। বিষয়টি তারা সহ্য করতে পারতেন না। এ নিয়ে প্রায়ই তাদের মধ্যে ঝগড়াঝাটি হতো। মূলত এমন হিংসা থেকেই তাদের মধ্যে আগে থেকেই বিরোধ ছিল বলে জানা গেছে। এদিক হত্যাকাণ্ডের ৬ দিন পর মামলার প্রধান অভিযুক্ত মাহতাব ও তার ছেলে মামুনকে গ্রেপ্তার করেছে ফেঞ্চুগঞ্জ থানা পুলিশ। পরে আদালতের নির্দেশে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।