বাংলারজমিন

সাক্ষীর বর্ণনার পরও তদন্ত রিপোর্ট থেকে প্রধান আসামির নাম উধাও

স্টাফ রিপোর্টার, নোয়াখালী থেকে

২৭ সেপ্টেম্বর ২০২১, সোমবার, ৯:০৬ অপরাহ্ন

 নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার মহবুল্লাপুর গ্রামে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় তদন্ত রিপোর্টে প্রধান আসামি জাহাঙ্গীর আলমের নাম বাদ দেয়া হয়েছে। এতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন মামলার বাদী মোশারফ হোসেন রতন ও সাক্ষীরা। তারা বলছেন, মামলার তদন্তকালে সিআইডি কর্মকর্তার নিকট আসামি জাহাঙ্গীর আলমের জড়িত থাকার বিষয়টি বর্ণনা করেছেন। তারপরও সিআইডি’র তদন্ত রিপোর্ট থেকে জাহাঙ্গীর আলমের নাম বাদ দেয়া হয়। ভুক্তভোগী মো. মোশারফ হোসেন রতন বলেন, জাহাঙ্গীর আলম সরকারি চাকরির তথ্য গোপন করে আমেরিকান লাইফ ইন্স্যুরেন্সে (আলিকো) ফাইন্যান্সিয়াল এসোসিয়েট পদে চাকরি করেন। বিষয়টি আলিকোর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানার পর তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে জাহাঙ্গীর আলম আমার নিকট ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। আমি তার চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে ২০১৯ সালের ২০শে জানুয়ারি আমার বাড়িতে সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে হামলা চালায়। এ ঘটনায় আদালতে ৫ জনকে আসামি করে অপহরণমূলক হত্যা চেষ্টা ও চাঁদাবাজির একটি মামলা করি। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে প্রথমে পিবিআই নোয়াখালীকে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ প্রদান করেন। পিবিআইয়ের তদন্ত রিপোর্টে প্রধান আসামি জাহাঙ্গীর আলমকে ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত না দেখিয়ে তার স্বভাব-চরিত্র ভালো নয় মর্মে তদন্তকারী কর্মকর্তা উল্লেখ করেন। পরে ভুক্তভোগী ওই তদন্ত রিপোর্টের প্রতি অনাস্থা প্রদান করেন। ফলে আদালত পুনরায় অধিকতর তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন জমা দেয়ার জন্য মামলাটি সিআইডি নোয়াখালীকে নির্দেশ প্রদান করেন। ২০২০ সালের ২০শে অক্টোবর সিআইডি মামলাটির তদন্তভার গ্রহণ করে দীর্ঘ প্রায় ৯ মাস পর চলতি বছরের ১৪ই জুন আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। ওই প্রতিবেদনেরও এজাহারে অভিযুক্ত প্রধান আসামি জাহাঙ্গীর আলমকে বাদ দেয়া হয়। মামলার অপর আসামিদের নাম যুক্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। এতে মামলার সাক্ষীরা জানান, আমাদের বাড়িতে তদন্তকালে আমরা মামলার প্রধান আসামি জাহাঙ্গীর আলমসহ অন্যান্য আসামিদের নাম, ঠিকানা ও তাদের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের বিশদ বর্ণনা দিয়েছি। কিন্তু সিআইডি’র তদন্ত রিপোর্টে দেখলাম সকল আসামির নাম ও অপরাধের সঠিক বর্ণনা থাকলেও ঘটনার প্রধান হোতা জাহাঙ্গীর আলমের নাম নেই। অথচ পুরো ঘটনাটি ঘটিয়েছে জাহাঙ্গীর আলম। ভুক্তভোগী আরও জানান, সিআইডি’র এই তদন্তের প্রতি আমি পূর্ণ আস্থা রাখতে পারছি না। প্রতিবেদন থেকে প্রধান আসামির নাম বাদ দেয়ায় সে আমাদের হুমকি দিয়ে আসছে। তার হুমকিতে আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর আলম জানান, এ ঘটনার সঙ্গে আমি জড়িত নয়, তা গোয়েন্দা সংস্থার তদন্তের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। আমি কাউকে হুমকি কিংবা মতবিরোধেও জড়ায়নি। ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্টের (সিআইডি) নোয়াখালী জেলার বিশেষ পুলিশ সুপার মো. বশির আহম্মদ জানান, এ ঘটনায় তদন্তের মাধ্যমে চেষ্টা করেছি সকল আসামির সংঘটিত অপরাধগুলোর সঠিক ও নির্ভুল তথ্য তুলে ধরতে। সাক্ষী প্রমাণের ভিত্তিতে পর্যালোচনা করে আমরা তদন্ত প্রতিবেদন প্রেরণ করেছি। মামলার বাদী যদি মনে করেন আমাদের রিপোর্ট সঠিক হয়নি তাহলে তিনি ন্যায়বিচারের স্বার্থে বিজ্ঞ আদালতে নারাজি দিতে পারবেন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status