বাংলারজমিন

বাঁধ দিয়েও ঠেকানো গেল না মেঘনার ভাঙন

কমলনগর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি

২৬ সেপ্টেম্বর ২০২১, রবিবার, ১:৪৭ অপরাহ্ন

মেঘনার ভাঙন থেকে বাঁচতে এলাকাবাসীর নিজস্ব উদ্যোগে জঙ্গলা বাঁধ দিয়ে রক্ষা করতে পারলো না লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার নাসিরগঞ্জ বাজার। মেঘনার ভয়াবহ ভাঙনে ওই বাজারের প্রায় শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ব্যবসা-বাণিজ্য হারিয়ে চরম ক্ষতির মধ্যে পড়েছে ব্যবসায়ীরা।
সরজমিন ঘুরে জানা যায়, উপজেলার চরকালকিনি ইউনিয়নের মতিরহাটের পরে এ নাসিরগঞ্জ বাজার ছিল ব্যবসা-বাণিজ্যের মধ্যে দ্বিতীয় কেন্দ্র। প্রতিদিন প্রায় ৫০ লক্ষাধিক টাকার পণ্য ক্রয়-বিক্রয় হতো ওই বাজারে। বর্তমানে ৪-৫টি দোকান ছাড়া সবই নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বর্তমানে ভিটেমাটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হারিয়ে মানবেতন জীবন যাপন করছেন ওই বাজারের ব্যবসায়ীরা।
জানা যায়, উপজেলার চরকালকিনি ইউনিয়নের দ্বিতীয় ব্যবসায়িক কেন্দ্র এ নাসিরগঞ্জ বাজার মেঘনার ভাঙনে হুমকির মধ্যে পড়লে স্থানীয়দের উদ্যোগে বাজার রক্ষায় গত বছর বর্ষা মৌসুমের আগে প্রায় এক কিলোমিটার ব্যাপী মেঘনা নদীর পাড়ে একটি জঙলা বাঁধ দেয় এলাকাবাসী। তাদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে স্থানীয় সাংসদ মেজর (অব:) আব্দুল মান্নান, নিজস্ব উদ্যোগে সামান্য সহযোগিতা করলে পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে কোন সহযোগিতা করা হয়নি। ওই সময় থেকে রামগতি-কমলনগরের বিভিন্ন স্পটে পানি উন্নয়ন বোর্ড আপদকালীন বরাদ্দ দিলেও নাসিরগঞ্জ বাজার রক্ষায় তারা কোন পদক্ষেপ নেয়নি। চলতি মৌসুমেও পানি উন্নয়ন বোর্ড কমলনগর-রামগতির ১০টি স্পটে আপদকালীন বরাদ্দের নামে জিও টিউবে ডাম্পিংয়ের জন্য প্রায় দেড় কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়। কিন্তু কমলনগরে ৫টি স্পটের মধ্যে নাসিরগঞ্জ বাজারের জন্য কোন বরাদ্দ দেওয়া হয়নি।
সাধারণ মানুষের দাবি যে সব জায়গা পানি উন্নয়ন বোর্ড আপদকালীন বরাদ্দ দিয়েছে; ওই স্পটগুলো নাসিরগঞ্জ বাজারের থেকে গুরুত্বপূর্ণ নয়। যে সব জায়গায় বরাদ্দ দিয়েছে হয়তো ওই সব জায়গায় লুটপাটের সুযোগ রয়েছে। অথচ জরুরী প্রয়োজনে নাসিরগঞ্জ বাজারের জন্য কোন বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। অনন্ত একটি স্পটে নাসিরগঞ্জ বাজারের জন্য দু’শ জিও টিউবে ডাম্পিং করা হলে হয়তো বাজারটি রক্ষা পেতো। বর্তমানে ওই বাজার সংলগ্ন হুমকির মধ্যে রয়েছে তালতলী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, নাসিরগঞ্জ দারুল আরকান নুরানী কাওমী মাদ্রাসা ও নাসিরগঞ্জ বাজার জামে মসজিদ। য়ে মুহুর্তে বিলীন হয়ে যেতে পরে ওই প্রতিষ্ঠানগুলো।
নাসিরগঞ্জ বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি আবুল কাশেম হাওলাদার জানান, স্থানীয়দের উদ্যোগে জঙ্গলা বাঁধ দিয়ে বাজার রক্ষায় শত চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন তারা। তাদের সাথে পানি উন্নয়ন বোর্ড একটি নজর দিলে বাজারটি বিলীন হতো না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের খামখেয়ালীপনার কারণে বাজারটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ওই বাজারের তার চারটি দোকানঘরসহ বড় একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নদীগর্ভে বিলীন হয়ে তিনি প্রায় ৫০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এ ছাড়াও মো. হানিফ, হোসেন আহমদ স্বপন ও মজনুসহ প্রায় ৫০-৬০ জন ব্যবসায়ী সহায় সম্বল হারিয়ে মানবেতন জীবন যাপন করছেন।
লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ফারুক আহমেদ বলেন, রামগতি ও কমলনগরে মেঘনা নদীর তীর রক্ষায় একটি প্রায় ৩ হাজার একশ’ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন হয়েছে। কাজের টেন্ডারগুলো প্রক্রিয়াধীন। আশা করি ভাঙন ঠোকাতে দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ শুরু হবে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status