বাংলারজমিন

দাড়াইন নদীর উজানের অংশ খনন না হলে ৫০ কোটির কাজ অর্থহীন

শাল্লা (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি

২৬ সেপ্টেম্বর ২০২১, রবিবার, ১০:৪৬ পূর্বাহ্ন

ফাইল ফটো

সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলায় বহমান দাড়াইন নদীর ৫০ কিলোমিটারের মধ্যে দুই বছর আগে চামতি নদী নামে খনন হয়েছে নদীর শেষ প্রান্তের শ্রীহাইল এলাকা থেকে ছব্বিশা গ্রাম পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার। আর এতে ব্যয় হয়েছে মোট ৫০ কোটি টাকা। নদীর উজানের ৩০ কিলোমিটার অংশ খনন না হওয়ায় ৫০ কোটি টাকার কাজ মানুষের কোন কাজেই আসছে না।
নদী খননকৃত এলাকার বড় কৃষক সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুস ছাত্তার বললেন, দিরাই ও শাল্লা উপজেলার ভান্ডার, ছায়া, উদঘল, বরাম ও চাকোই হাওরকে অকাল বন্যা থেকে রক্ষা করতে দুই বছর আগে উপজেলার শ্রীহাইল থেকে ছব্বিশা পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার নদী খনন করা হয়। প্রকৃতপক্ষে এই নদী দিরাইয়ের ধলের কালনী নদীর মুখ পর্যন্ত খনন করা জরুরি। কালনী নদীর মুখ পর্যন্ত খনন না করায় এই ২০ কিলোমিটার খননে হাওরের বা এলাকাবাসীর কোন কাজে আসছে না। ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ই অর্থহীন হয়ে আছে। সরেজমিনে যাচাই করলেও এর সত্যতা পাওয়া যাবে। তিনি বলেন, নদী উজানের ৩০ কিলোমিটার খনন করা গেলে দুই পাড়ের বড় হাওরগুলোতে জলাবদ্ধতা তৈরি হবে না, ঢলের পানি দ্রুত নিষ্কাশন হবে, অকাল বন্যার আশঙ্কাও দূর হবে। হাওরে বেড়িবাঁধ দিয়ে মাছের বিচরণক্ষেত্রও নষ্ট করা লাগবে না।
বাহাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বিধান চৌধুরী বললেন, উপজেলা পরিষদের বিগত সমন্বয় সভায় এই নদী খনন নিয়ে আলোচনা হয়েছে । আমি বলেছি, নদীর উপরের অংশ খনন না হলে, খননকৃত নদীর অর্থ ব্যয় অর্থহীন হবে, হাওরগুলো ঝুঁকির মধ্যেই থাকবে।
শাল্লা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অবনী মোহন দাস বললেন, চামতি নদীর যে অংশ খনন হয়েছে, এর উপরের অংশ অর্থাৎ দিরাই উপজেলার ধল বাজার পর্যন্ত খনন করা না হলে, যেটুকু খনন হয়েছে, সেই অর্থ অপচয় হিসাবেই ধরে নিতে হবে।
ধলের বাসিন্দা গণমাধ্যম কর্মী দোলন চৌধুরী বললেন, ছব্বিশা থেকে নোয়াগাঁও হয়ে কালনীর মুখ পর্যন্ত নদী খনন না হলে, কেবল শাল্লার হাওর নয় দিরাইয়ের বরাম ও টাংনির হাওর অকাল বন্যার ঝুঁকিতে থাকবে। এই নদী খনন হলে হেমন্তেও দিরাই-শাল্লার নৌপথ সচল থাকবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, দুই বছর আগে দাড়াইন নদীর ২০ কিলোমিটার অংশ খনন হয়েছে। ৫৮ কোটি টাকার বরাদ্দ ছিল ওখানে। কাজ শেষে ঠিকাদার বিল পেয়েছে ৫০ কোটি ৩৮ লাখ টাকা।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শামসুদ্দোহা বললেন, দুই বছর আগে ৫০ কোটি ৩৮ লাখ টাকায় চামতি নদী খনন হয়েছে। এই নদীর উপরের অংশও খনন করা জরুরি, সেটি আমরাও উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। সুনামগঞ্জের ৩২৭ কিলোমিটার নদী খনন প্রকল্পের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল, এরমধ্যে ওই নদীও ছিল। গেল ২৯ আগস্ট পানিসম্পদ মন্ত্রীর সঙ্গে এই নিয়ে বৈঠক হয়েছে। সেই সভার নির্দেশনা অনুযায়ী পুনর্গঠিত প্রকল্প প্রস্তাবনা পাঠানোর বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। প্রকল্প প্রস্তাবনা পাঠানোর পর অনুমোদন সাপেক্ষে নদী খনন প্রকল্পের দরপত্র প্রক্রিয়া হবে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status