দেশ বিদেশ

বেড়েই চলেছে নিত্যপণ্যের দাম

অর্থনৈতিক রিপোর্টার

২৫ সেপ্টেম্বর ২০২১, শনিবার, ৮:১৩ অপরাহ্ন

গত কয়েক সপ্তাহ ধরে বেড়েই চলেছে আটা ও ময়দার দাম। একইভাবে বেড়েছে ব্রয়লার মুরগি ও ডিমের দাম। এছাড়া, দাম বাড়ার তালিকায় যুক্ত হয়েছে আদা ও রসুন। নতুন করে ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে কেজিতে ১০ টাকা। এক থেকে দেড় মাসের ব্যবধানে মুরগির দাম বেড়েছে কেজিতে ৫০ টাকার মতো। দেড় মাস আগের ১১৫ থেকে ১২০ টাকা কেজি ব্রয়লার মুরগি এখন কিনতে হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকার বেশি দিয়ে। এদিকে, সরকার দাম নির্ধারণ করে দেয়ার ১৫ দিন পরেও বাজারে চিনির দাম কমেনি। সরকার সয়াবিন তেলের দাম বেঁধে দিলেও বাজারে তার কার্যকারিতা নেই।
সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবির তথ্য বলছে, এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজিতে ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে ১০ টাকা। শুধু ব্রয়লার মুরগি নয়, পাকিস্তানি কক বা সোনালি মুরগির দাম বেড়েছে কেজিতে ১০ টাকা পর্যন্ত।
গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্যবসায়ীরা  পাকিস্তানি কক বিক্রি করছেন ২৯০-৩১০ টাকায়, দুই সপ্তাহ আগে যা ছিল ২২০-২৩০ টাকা।
বাজারের তথ্য বলছে, গত এক মাস ধরে বাড়ছে ডিমের দামও। এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি হালি ডিমের দাম বেড়েছে ২ টাকারও বেশি। এ সপ্তাহে ডিমের দাম বেড়েছে প্রতি ডজন ১০ টাকার মতো। ফার্মের মুরগির এক ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১১৫-১২০ টাকার মধ্যে। আর মুদি দোকানে গত সপ্তাহে এক পিস ডিম বিক্রি হয়েছে ১০ টাকা, এখন তা বেড়ে ১১ টাকা হয়েছে।
এছাড়া গত এক সপ্তাহে দেশি আদার দাম বেড়েছে কেজিতে ৬০ টাকা। গত সপ্তাহে যে আদা বিক্রি হয়েছে ১২০ টাকা কেজি, সেই আদা গতকাল বিক্রি হয়েছে ১৮০ টাকায়। এছাড়া কেজিতে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে আমদানি করা রসুনের। গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পিয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজিতে, আলু ২০ থেকে ২৫ টাকা।
গত এক মাসে বড়দানার মসুর ডালের দাম কেজিতে বেড়েছে ১০ টাকার মতো। গত এক মাসে প্যাকেট ময়দার দাম বেড়েছে কেজিতে ৮ টাকা। একইভাবে প্যাকেট আটার দাম বেড়েছে কেজিতে ৬ টাকার মতো। এদিকে, মোটা চাল প্রতি কেজি ৪৫ থেকে ৪৮ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। একইভাবে চিকন চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬৮ টাকা পর্যন্ত।
গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, খুচরায় চিনি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৭৮ টাকা থেকে ৮০ টাকায়। আর প্যাকেটের সাদা চিনি প্রতি কেজি ৮০ টাকা, লাল চিনি বা আখের চিনি প্রতি কেজি ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মুদি দোকানি ইসলাম আলী বলেন, তিনি মীরপুর-১ নম্বরের পাইকারি বাজার থেকে প্রতি কেজি চিনি ৭৬ টাকা ৬০ পয়সায় কিনেছেন। এখন ৮০ টাকার কমে বিক্রি করলে তার ‘ব্যবসা হবে না’।
সয়াবিন তেলের দাম কেজি ১৪৩ টাকা আর লিটার ১৩৭ টাকা। যদিও গত ৫ই সেপ্টেম্বর লিটার প্রতি সয়াবিন তেলের দাম ১২৯ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। আর গত ৯ই সেপ্টেম্বর প্রথমবারের মতো চিনি প্রতি কেজি ৭৪ টাকা থেকে ৭৫ টাকা ঠিক করে দেয় সরকার।
খোলা সয়াবিন তেলের কেজি ১৪১ টাকা ৬০ পয়সা দরে কেনার কথা জানালেন ইসলাম আলী। খুচরায় তিনি প্রতি কেজি বিক্রি করছেন ১৪৩ টাকায় আর প্রতি লিটার ১৩৭ টাকা দরে।
বাংলাদেশ পাইকারি ভোজ্য তেল ব্যবসায়ী সমিতির জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি মোহাম্মদ আলী ভুট্টো অবশ্য দাবি করছেন, ভোজ্য তেল এখন ‘সরকার নির্ধারিত দরের মধ্যেই’ বিক্রি হচ্ছে।
পাইকারি বাজারে প্রতিমণ খোলা সয়াবিন তেল ৫০৫০ টাকায় বিক্রি হওয়ার কথা দাবি করলেন তিনি। সে হিসেবে প্রতি লিটারের দাম পড়ে ১২৪ টাকা। এর সঙ্গে লাভের অংশ যোগ করে খুচরা বাজারে সয়াবিন তেল বিক্রি হওয়া উচিত মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘বাজারে এখনই সর্বোচ্চ দাম চলছে। সুতরাং খুচরায় সরকার নির্ধারিত সর্বোচ্চ মূল্য ১২৯ টাকা থেকে বেশি দামে সয়াবিন তেল বিক্রির সুযোগ নেই।’
বাজারগুলোতে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সবজির দাম। নিত্যপ্রয়োজনীয় এসব পণ্য কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন সীমিত আয়ের ক্রেতারা। সবকিছুর চড়া দামে হতাশা প্রকাশ করেছেন বেশির ভাগ মধ্যবিত্ত শ্রেণির ক্রেতা।
গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এখন বেশির ভাগ সবজির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকার ওপরে। সবজির বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্যবসায়ীরা গত সপ্তাহের মতো শীতের আগাম সবজি শিমের কেজি বিক্রি করছেন ১২০ থেকে ১৪০ টাকা। গাজর ও টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকায়। এ দুটি সবজির দাম সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত রয়েছে। ঝিঙের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা, করলা ৬০ থেকে ৮০ টাকা, চিচিঙ্গা ৫০ থেকে ৬০ টাকা, পটোল ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ঢেঁড়সের কেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকার মধ্যে এবং বরবটির কেজি ৮০ থেকে ৯০ টাকা। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে সবজির সরবরাহ সাধারণত কম থাকে। এ কারণে সবজির দাম একটু বাড়তি থাকে। এর সঙ্গে এবার বন্যায় অনেক সবজির ক্ষেত নষ্ট হয়েছে, যার প্রভাবে সবজির দাম বেড়েছে।
রুই মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩৮০ টাকা। মৃগেল মাছের কেজি ২৪০ থেকে ২৮০ টাকা। তেলাপিয়া ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা, পাবদা কেজি ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা, পাঙাশ কেজি ১২০ থেকে ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বড় (এক কেজির ওপরে) ইলিশের কেজি ১১০০ থেকে ১৩০০ টাকা। মাঝারি আকারের ইলিশ ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা কেজি। আর ছোটগুলো ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status