অনলাইন

নদী দূষণকারী প্রতিষ্ঠানের তালিকা প্রকাশ ও পানির ন্যায্য হিস্যা প্রাপ্তিতে পানিপ্রবাহ কনভেনশনে স্বাক্ষরসহ নেপাল ও চীনকে অন্তর্ভুক্তকরণের দাবি

স্টাফ রিপোর্টার

২৪ সেপ্টেম্বর ২০২১, শুক্রবার, ২:০৫ অপরাহ্ন

নদ-নদীর প্রকৃত সংখ্যা নির্ধারণ, দূষণের প্রতিকার ও দূষণকারী প্রতিষ্ঠানের তালিকা প্রকাশ এবং উজানের অভিন্ন নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা প্রাপ্তিতে জাতিসংঘ পানিপ্রবাহ কনভেনশনে স্বাক্ষরসহ যৌথ নদী কমিশনে নেপাল ও চীনকে অন্তর্ভুক্তকরনের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ নদী বাঁচাও আন্দোলন।
শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি জানায় সংগঠনটি। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ১,৪৭,৫৭০ বর্গ কিলোমিটারের-এ দেশে নদ নদীর প্রকৃত সংখ্যা কত সে ব্যাপারে সরকারি-বেসরকারি সংস্থা ও বিশেষজ্ঞরা এখনো ঐক্যমত্যে পৌঁছুতে পারেননি। নদীমাতৃক আমাদের এ দেশের জন্য এটা চরম ব্যর্থতা।

সরকারি সংস্থাগুলো বলছে ২৩০টি নদী আছে। উইকিপিডিয়ায় লেখা হয়েছে ৪০৫টি, শিশু একাডেমির শিশু বিশ^কোষে বলা হয়েছে ৭০০টি, লেখক সৈয়দ শামসুল হকের কবিতায় বলা হয়েছে ১৩০০টি, বাংলাদেশ নদী বাঁচাও আন্দোলনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে ১৫০০টির বেশি, গবেষক ইনামুল হক বলছেন প্রায় ২০০০টি নদী রয়েছে। অন্যদিকে উজানের ভিন্ন স্বীকৃত নদী ৫৭টি হলেও বাস্তবে রয়েছে ১০৭টি। বিভিন্ন সংখ্যার কারণে আমরা বিভ্রান্ত। এজন্য নদ-নদীগুলো দখলমুক্ত, প্রবাহমানও জীবন্ত রাখতে চাইলে এর প্রকৃত সংখ্যা জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনকে জাতির সামনে তুলে ধরতে হবে।

এতে আরো বলা হয়, পৃথিবীর দূষিততম নদীগুলোর অবস্থান এখন নদীমাতৃক বাংলাদেশে। বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, বালু, শীতলক্ষ্যা, কর্ণফুলিসহ অসংখ্য নদী তীরবর্তী লক্ষ লক্ষ মানুষ, প্রাণী ও জীববৈচিত্র নদী দূষণের শিকার। ঢাকা, গাজীপুর ও নারায়নগঞ্জে বসবাসকারী প্রত্যেকেই প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে এ দূষণের শিকার। অধিকাংশ রপ্তানিমুখী শিল্পকারখানা প্রধানত এ দূষণের জন্য দায়ী। তাই অপ্রিয় হলেও সত্য যে আমাদের অর্থনীতি দাঁড়িয়ে আছে দূষণের ওপর। আমরা এর নিরসন চাই। যেভাবে ৬০,০০০ নদী দখলদারের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে, ঠিক তেমন করে যারা সরকারি নিয়মনীতি উপেক্ষা করে নদী দূষণ করছে তাদের তালিকা প্রকাশ করে বিচারের আওতায় আনা হোক।
ইতোমধ্যে যে নদীগুলো দূষিত হয়েছে এবং যার তলদেশে ১০/১২ ফুট পর্যন্ত ক্ষতিকর ধাতুর কঠিন স্তর পড়েছে সেগুলো অবিলম্বে দূর করার কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ নদী বাঁচাও আন্দোলন।

বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, স্বাধীন বাংলাদেশের সূচনা লগ্নেই (১৯৭২ সালেবাংলাদেশ ভারত) যৌথ নদী কমিশনের যাত্রা শুরু হয়। যার লক্ষ্য হল উজানের অভিন্ন নদীগুলোর পানি সম্পদ বন্টন, সেচ, বন্যা ও ঘুর্ণিঝড় নিয়ন্ত্রণে যৌথ প্রচেষ্টা জোরদার ইত্যাদি। বিগত ৪৯ বৎসরে মাঝেমাঝে ঝলসে উঠলেও বর্তমানে একবারে নিশ্চুপ এ প্রতিষ্ঠানটি। বৈশি^ক জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবেলায় এর কার্যক্রমকে আরো জোরালো করা এখন সময়ের দাবি। এ জন্য ‘নদী কূটনীতি’ কে যেমন বেগবান করতে হবে তেমনি এর পরিধি বাড়িয়ে নেপাল ও চীনকে এর অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

এ ছাড়া মেকং নদী রক্ষা কমিশনের মত উজানের অভিন্ন বড় নদীগুলোর ক্ষেত্রে যেমন গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা, মহানন্দা, সুরমা, কুশিয়ারা, ইত্যাদি নদীভিত্তিক পৃথক নদীকমিশন গঠন করা দরকার, যাতে করে সত্যিকার অর্থেই নদীগুলোকে জীবন্ত স্বত্তা হিসেবে জিইয়ে রাখা যায়। আর এটা সম্ভব তখনই যখন বাংলাদেশ জাতিসংঘ পানিপ্রবাহ কনভেনশনে (যা ইতোমধ্যে আইনে পরিণত হয়েছে) স্বাক্ষর করে ন্যায্য হিস্যার বিষয়টি জাতিসংঘে তুলে ধরবে। নদী ও পরিবেশ রক্ষায় যারা নিরলসভাবে কাজ করছে তাদের জন্য রাষ্ট্রীয় প্রণোদনা, পৃষ্টপোষকতা ও পুরস্কারের ব্যবস্থা করা উচিৎ। যাতে করে এ ধরনের সামাজিক আন্দোলন যেন হারিয়ে না যায়।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status