দেশ বিদেশ

শিশুর বয়সসীমা ১৮ বছর নিয়ে ভাবনার সময় এসেছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার

২৪ সেপ্টেম্বর ২০২১, শুক্রবার, ৮:৪৫ অপরাহ্ন

১৮ বছরের নিচে সবাইকে শিশু হিসেবে আখ্যায়িত করার বিষয়টি নিয়ে চিন্তা-ভাবনার সময় এসেছে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। গতকাল দুপুরে রাজধানীর মগবাজারের মধুবাগে বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদুজ্জামান খান কমপ্লেক্স অডিটোরিয়ামে র‌্যাব কর্তৃক এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। কিশোর অপরাধ দমনে জনসচেতনতামূলক কার্যক্রমের আওতায় ‘সবার হোক একটাই পণ, কিশোর অপরাধ করবো দমন’ শীর্ষক টিভিসির উদ্বোধন উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। মন্ত্রী বলেন, আমি যখন এসএসসি পাস করেছি তখন বয়স ছিল ১৫ বছর। বর্তমানে যারা নিয়মিত পড়াশোনা করে, ১৮ বছর বয়সে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে যায়। আমাদের মনে হয় ১৮ বছরের এ সময়সীমা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করার সময় এসেছে। আন্তর্জাতিক একটি আইনের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হওয়ায় সমন্বয় করে এটি করা হয়েছে। কিন্তু, এর ফলে কিশোর অপরাধ দমনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বেগ পেতে হচ্ছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের শঙ্কার বিষয় ছিল কোভিডকালীন স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকবে, সবাই বসে থাকবে। তবে এই সময়ে কিশোরদের নিয়ে যে শঙ্কাটা ছিল ততখানি হয়নি, আমাদের দেশ অনেক দেশের তুলনায় ভালো আছে। দেশ আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলছে। এটি ধরে রাখার প্রথম শর্ত হচ্ছে নিরাপত্তা।
তিনি বলেন, আমরা যদি সচেতন না হই তাহলে আমাদের সন্তানদের হারিয়ে ফেলবো। এতে দেশ-জাতি সবাই নিগৃহীত হবে। সমাজের শাসন যদি সুপ্রতিষ্ঠিত করতে না পারি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যতই কড়াকড়ি হোক আমরা হারিয়ে যাবো।
মন্ত্রী আরও বলেন, সন্তানকে উপযুক্ত শিক্ষা দিন। তাদের সঙ্গে কথা বলুন। সন্তানেরা কোথায় যাচ্ছে, কি করছে খেয়াল করুন। আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাজ করছে। তবে সন্তানদের প্রতি যদি খেয়াল না রাখেন তাহলে এটি আমরা কখনই পারবো না। সন্তানকে নিয়ে অন্তত একবেলা খাওয়ার রেওয়াজ চালু করতে হবে মা-বাবাকে। তারা যেন সন্তানের সঙ্গে কথা বলেন, মেলামেশা করেন। একসঙ্গে খেতে বসেন। দুপুরে না পারলেও সকালে বসেন। আইন কঠোর করলেও সবার সহযোগিতা না পেলে কিশোর অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। সন্তান কোথায় যায়, কী করে, এসব বিষয়ে মা-বাবাকে খেয়াল রাখতে হবে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দীন বলেন, কারা কিশোরদের অপরাধী বানাচ্ছে, তাদের হাতে কারা মাদক তুলে দিচ্ছে, তাদেরও আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। অপরাধ শুধু নিয়ন্ত্রণ নয়, প্রতিরোধ করতে হবে। এক্ষেত্রে আমাদের সমাজ বিজ্ঞানীদের এগিয়ে আসতে হবে।
অনুষ্ঠানে আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, এক সময় আট বছর পর্যন্ত বয়সীদের শিশু ধরা হতো। কিন্তু, পরে কিশোর আইন হালনাগাদ করা হয়। এখন ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত শিশু ধরা হয়। আইন পরিবর্তনের ফলে যখন একজন পূর্ণ যুবকের পর্যায়ে পৌঁছে যায় তাকেও শিশু ধরা হয়। র‌্যাবের ডিজি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, কিশোর গ্যাংয়ের মধ্যে ছোটদের সঙ্গে বড়রাও থাকে। ছোট-বড় মিলে বিরোধ হয়, পরে আলাদা গ্রুপ সৃষ্টি হয়। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মারামারির মতো ঘটনা ঘটে। কিশোর অপরাধ দমনে সচেতনতা কার্যক্রম শুরু হয়েছে মানে এই নয় যে, অভিযান কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাবে। যদি কেউ সচেতনতার মাধ্যমে সুপথে না আসে, তার বিরুদ্ধে আইনানুগ কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান নাসিমা বেগম বলেন, বাবা-মায়ের অতি আদর কিংবা সময় না দেয়া বাচ্চাদের মনে প্রভাব ফেলে। শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষকদের শারীরিক নির্যাতন করা বৈধ নয়, কাউন্সিলিংয়ে জোর দিতে হবে।
অনুষ্ঠানে এ সময় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন র‌্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল কেএম আজাদ। এ ছাড়াও অনুষ্ঠানে পুলিশ ও র‌্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং একাধিক স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status