বিশ্বজমিন

বৃটিশ মিডিয়ার খবর

জিম্মি মোল্লা বারাদার, মারা গেছেন আখুন্দজাদা

মানবজমিন ডেস্ক

২১ সেপ্টেম্বর ২০২১, মঙ্গলবার, ৪:৫৮ অপরাহ্ন

বৃটিশ মিডিয়ার এক খবরে বলা হয়েছে, তালেবানের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে কোন্দলে জিম্মি হয়েছেন উপ-প্রধানমন্ত্রী মোল্লা আব্দুল গণি বারাদার এবং মারা গেছেন হায়বাতুল্লাহ আখুন্দজাদা। দ্য স্পেক্টেটরের এক প্রতিবেদনে ওই দাবি করা হয়। তালেবান নেতাদের মধ্যে সাম্প্রতিক সংঘর্ষের কথা উল্লেখ করে গণমাধ্যমটি জানিয়েছে, বারাদারের অনুসারী ও হাক্কানি নেটওয়ার্কের মধ্যে সরকার গঠন নিয়ে বড় সংঘাত সৃষ্টি হয়েছে। এতে বারাদারই বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন বলে জানিয়েছে দ্য স্পেক্টেটর।

রিপোর্টে আরো বলা হয়, মূলত আফগানিস্তানে সরকার কেমন হবে তা নির্ধারণ করতে চাইছে পাকিস্তান। এ কারণে তালেবানের কট্টরপন্থী অংশের নেতাদেরই সরকারে পদ দিতে চায় দেশটি। পাকিস্তানের ইন্টার-সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স বা আইএসআই প্রধানও তালেবান সরকারের সব গুরুত্বপূর্ণ পদ পাকিস্তানের অনুগত নেতাদের দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এ জন্য দেশটির পছন্দ হাক্কানি নেটওয়ার্কের নেতারা। কিন্তু আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের চুক্তিতে সবথেকে বড় ভূমিকা রেখেছেন বারাদার। তার কূটনৈতিক চেষ্টাতেই তালেবানের সঙ্গে চুক্তিতে সম্মত হয়েছিল ওয়াশিংটন। ফলে তিনিও তালেবান সরকারের প্রধান হওয়ার অন্যতম দাবিদার। এ নিয়ে হাক্কানিদের সঙ্গে সেপ্টেম্বর মাসের প্রথমেই বারাদার অনুসারীদের সংঘাতের খবর ছড়িয়েছিল আন্তর্জাতিক সব গণমাধ্যমে। এ কারণেই কাবুল পতনের পরেও তালেবানের সরকার গঠনে বিলম্ব হয়।

এবার সেই সংঘাতের বর্ণনা দিয়ে স্পেক্টেটর জানিয়েছে, সেদিন কাবুলের প্রেসিডেন্টের প্রাসাদে সরকার গঠন নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে আফগানিস্তানের মন্ত্রী খলিলুর রহমান হাক্কানি নিজের চেয়ার ছেড়ে বারাদারের দিকে তেড়ে যান এবং তার মুখে ঘুষি মেরে বসেন। বারাদার একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক মন্ত্রিসভা গঠনের জন্য চাপ দিচ্ছিলেন। ওই সরকারে তালেবানের বাইরেও নেতাকর্মী এবং সংখ্যালঘুদের অন্তর্ভুক্ত করা হবে এমন প্রস্তাব দেন তিনি। এতে করে বহিঃবিশ্বের কাছে তালেবানের সরকার অধিকতর গ্রহণযোগ্য হবে। কিন্তু হাক্কানিরা শুধুমাত্র উগ্র মিলিশিয়া নেতাদের দিয়েই সরকার গঠন করতে চায়। ওই সংঘাতের পরই সাময়িকভাবে নিখোঁজ হয়ে যান বারাদার। পরে অবশ্য কান্দাহার থেকে তার একটি ভিডিও প্রকাশ করা হয় তালেবান নিয়ন্ত্রিত রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন নেটওয়ার্কে। তবে তাকে মূলত হুমকির মুখে ওই ভিডিওটি করতে হয়েছিল। স্পেকটেটরের ভাষ্যে, সে ভিডিও বার্তাটি দেখে মনে হয়েছে, বারাদারকে জিম্মি করা হয়েছে।

এদিকে নিখোঁজ রয়েছেন তালেবান নেতা আখুন্দজাদাও। বৃটিশ গণমাধ্যমটি লিখেছে, আখুন্দজাদাকে দীর্ঘ একটা সময় দেখা বা তার কাছ থেকে কিছু শোনা যায়নি। গুজব রয়েছে তিনি মারা গেছেন। দলটির শীর্ষস্থানে এই শূন্যতা তালেবান গোষ্ঠীর মধ্যে নানা বিতর্কের জন্ম দিয়েছে- যা তাদের দুই দশক আগের শাসনকালে দেখা যায়নি। মূলত ২০১৬ সালের দিকে তালেবান ও হাক্কানি গোষ্ঠী একীভূত হয়। মোল্লা বারাদার যেখানে মধ্যমপন্থী সরকার গঠন করতে চান সেখানে হাক্কানিরা সন্ত্রাসবাদের সমর্থক। তারা আত্মঘাতী হামলার প্রশংসা করেন। আফগানিস্তানের শরণার্থীবিষয়ক মন্ত্রী খলিল হাক্কানি জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞার তালিকায়ও রয়েছেন। সন্ত্রাসী সংগঠন হাক্কানি নেটওয়ার্কের সঙ্গে আবার পাকিস্তানের যোগসাজশ রয়েছে বলে অভিযোগ আছে। তারা পাকিস্তানের নিরাপত্তা ব্যবস্থার সাথে গভীরভাবে সংশ্লিষ্ট। তাদের নামটিও নেয়া হয়েছে পাকিস্তানি মাদ্রাসা দারুল উলুম হাক্কানিয়া থেকে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status