বাংলারজমিন

হিলি স্থলবন্দর দিয়ে বেড়েছে চাল আমদানি: কমেছে দাম

হাকিমপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি

২০ সেপ্টেম্বর ২০২১, সোমবার, ৮:৪৬ অপরাহ্ন

ভারত অভ্যন্তরে চালের আমদানি মূূল্য বৃদ্ধির পরে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে বেড়েছে চালের আমদানি, চাহিদা ও ক্রেতা সংকটের কারণে আমদানিকৃত চালের পাইকারি ও খুচরা বাজারে কিছুটা হলেও দাম কমতে শুরু করেছে। তিন চার দিনের ব্যবধানে প্রকারভেদে কেজিতে চালের দাম কমেছে ২ থেকে ৩ টাকা। আমদানিকারকরা বলছেন ভারতের ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে চালের আমদানি মূল্য না বাড়ালে সাধারণ ক্রেতারা অনেকটায় কম দামে চাল কিনতে পারতেন। ভারত থেকে আমদানি করা স্বর্ণা মোটা চাল বন্দর এলাকার আড়তগুলোতে বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৪১ টাকার মধ্যে, যা সপ্তাহখানেক আগেও বিক্রি হতো ৪৩ থেকে ৪৪ টাকা কেজি দরে, সম্পা কাটারি বিক্রি হচ্ছে ৫৬ থেকে ৫৭ টাকার মধ্যে, যা কয়েক দিন আগেও বিক্রি হয়েছিল ৫৯ থেকে ৬০ টাকার মধ্যে।
চালের চাহিদার তুলনায় আমদানি পরিমাণ বেড়ে যাওয়াই দিন দিন বন্দরের চালের গাড়ির হোল্টেজের পরিমাণ বাড়ছে। বর্তমানে বন্দরের খালাসের জন্য প্রায় শতাধিক চালের গাড়ি অবস্থান করছেন। আর এসব চাল ব্যবসায়ীরা ধীরে-সুস্থে বন্দর থেকে চাল খালাস করছেন। আবার অনেকে বন্দর হতে চাল বিক্রি করছেন। প্রতিদিন হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ৩০ থেকে ৩৫ গাড়ি চাল আমদানি হচ্ছে, সে তুলনায় বেচা-কেনা নেই বলয়ে চলে। তবে সরকারের নির্দেশ মোতাবেক যে সকল ব্যবসায়ী চাল আমদানি জন্য বরাদ্দ পেয়েছেন, তাদের আগামী ২৫শে সেপ্টেম্বরের মধ্যে আমদানি করতে হবে। দেশে চালের চাহিদা ও বেচাকেনা কম থাকার পরেও ব্যবসায়ীরা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বরাদ্দ পাওয়া চালগুলো আমদানি করতে চান। কোন কারণে সময় শেষ হয়ে গেলে অথবা সরকার সময় বৃদ্ধি না করলে তারা আর্থিক ক্ষতির মধ্যে পড়বেন। কারণ সরকারের কাছ থেকে বরাদ্দ পাওয়া চালগুলো তারা এলসির মাধ্যমে ক্রয় করে ফেলেছেন। হিলি স্থলবন্দরের চাল আমদানিকারক রাজিব কুমার দত্ত জানান, বর্তমান অবস্থায় চালের বেচা কেনা নেই বললেই চলে, চাল আছে ক্রেতা নেই, চালের দাম কিছুটা কমার পরেও ক্রেতার অভাবে তারা চাল বিক্রি করতে পারছেন না। প্রতিদিন বন্দর দিয়ে হাজার ১২শ’ টন চাল আমদানি হলেও বন্দরের ব্যবসায়ীরা ২শ’ টন ও চাল বিক্রি করতে পারছেন না। ফলে বন্দরের চালের গাড়ির জট তৈরি হচ্ছে। বর্তমানে তারা স্বর্ণা চাল প্রতি টন ৩৯০ মার্কিন ডলারে আমদানি করছেন, সম্পা করছেন ৫২৫ থেকে ৫৩০ মার্কিন ডলারে। সে ক্ষেত্রে স্বর্ণা চালে সরকারের শুল্ক পরিশোধ করে ৪১ টাকা কেজি আমদানি মূল্য পড়ছে, সম্পা কাটারি ও সরকারের শুল্ক পরিশোধ করে ৫৭ টাকা কেজি পড়ছে। দেশের বাজার স্বাভাবিক রাখতে গেল ২৮শে আগস্ট থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে শুরু হয় ভারত থেকে চাল আমদানি। আমদানি শুরুর প্রথম দিকে স্থানীয় বাজারে তেমন একটা প্রভাব না পড়লেও বতমানে কমতে শুরু করেছে আমদানিকৃত চালের দাম।
হিলি স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশিদ হারুন জানান, হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারকরা প্রায় ৬০ হাজার টনের ওপর চাল আমদানির অনুমতি পেয়েছেন। অনুমতি পাওয়ার পর আমরা এলসি খুলেছি এবং ইতিমধ্যে বন্দরে চালও ঢুকছে। ভারত অভ্যন্তরে পাইপলাইনে প্রচুর পরিমাণে চালের গাড়ি রয়েছে সেগুলো দেশে ঢোকা শুরুও হয়েছে, আমদানি শুরুর প্রথমদিকে মোকামগুলোতে চালের বেশ চাহিদা থাকলেও সেটা এখন অনেকটায় কমে এসেছে। পানামা হিলি পোর্টের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রতাপ মল্লিক জানান, বর্তমানে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে প্রতিদিন ৩০ থেকে ৩৫ গাড়ি চাল আমদানি হচ্ছে, এসব চাল ব্যবসায়ীরা বন্দর থেকে খালাস করে তাদের নিজস্ব গোডাউনে নিয়ে যাচ্ছেন।
আবার কিছু গাড়ি বন্দর অভ্যন্তরে হোল্টেজ থাকছে, ব্যবসায়ীদের মতে বেচাকেনা কম থাকার কারণে বন্দর থেকে চালের সরবরাহ অনেকটায় কমে গেছে। তবে অন্যান্য পণ্যের মতো ভারত থেকে চাল আমদানি অব্যাহত আছে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status