খেলা

পরিবেশবান্ধব জার্সি পরে বিশ্বকাপ খেলবে টাইগাররা

ইশতিয়াক পারভেজ

১৯ সেপ্টেম্বর ২০২১, রবিবার, ৮:৪৪ অপরাহ্ন

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বাকি মাত্র এক মাস। মরু দেশ ওমান ও দুবাইয়ে বসবে এবারের এই আসর। মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের নেতৃত্ব প্রস্তুত টাইগাররা। তবে প্রতিবারের মতো এবারও ভক্ত-সমর্থকদের চোখ বাংলাদেশ দলের জার্সির দিকে। কেমন হবে তা! লাল-সবুজের প্রাধান্য থাকবে কতোটা? টাইগারদের পরণে দেখা মিলবে তো একটু বাংলাদেশ! ভক্তরা সেই জার্সি পরতে পারবে তো? দামই বা কত রাখা হবে! এমন প্রশ্নের শেষ নেই। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এবার জার্সিতে থাকবে দারুণ এক চমক। দেশের ক্রিকেটের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এই জার্সি তৈরি হতে যাচ্ছে পরিবেশ-বান্ধব ফ্যাব্রিক দিয়ে। নতুন ধরনের এই কাপড় আগে কখনোই বাংলাদেশের জার্সিতে ব্যবহার হয়নি। এছাড়াও মরুভূমির তপ্ত উত্তাপ থেকেও রক্ষা করবে এই কাপড়। এমনটাই জানিয়েছেন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ‘স্পোর্টস অ্যান্ড স্পোর্টজ’-এর কর্ণধার মাহতাবউদ্দিন আনোয়ার আহমেদ সেন্টু। তবে নকল হওয়ার সম্ভাবনা ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের রাইটস থাকায় তিনি নতুন ধরনের এই জার্সির ছবি বা বিষদ বিবরণ দিতে রাজি হননি। দৈনিক মানবজমিনকে তিনি বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে আমার প্রতিষ্ঠান শুধু জার্সি তৈরি করেছে। তবে তা কেমন হবে সেই ছবি প্রকাশ করবে বিসিবি। আমি শুধু বলতে পারি আমাদের কার্যক্রম শেষ পর্যায়ে। যেহেতু ক্রিকেটাররা নভেম্বরের শুরুতেই চলে যাবে তাই আশা করছি তার আগে পুরোপুরি তৈরির কাজ শেষ করতে পারবো। এরপর জার্সি অনভেলিংয়ে বিসিবি সেটি ভক্ত-সমর্থকদের সামনে তুলে ধরবে। আর এবারে যে জার্সি তৈরি করছি সেখানে থাকবে দারুণ কিছু চমক। আর সেই জার্সি আমরা তৈরি করছি সেটিতে আইসিসি অনুমোদনও দিয়েছে।’ সবকিছু ঠিক থাকলে বাংলাদেশ বিশ্বকাপের বাছাই পর্ব খেলতে ওমানের উদ্দেশ্যে দেশ ছাড়বে ৩রা বা ৪ঠা অক্টোবর। ধারণা করা হচ্ছে তাই এই মাসের শেষ সপ্তাহেই বিসিবি বিশ্বকাপের জন্য নতুন জার্সি উন্মুক্ত করবে। এবারের টাইগারদের বিশ্বকাপ লড়াই হবে মরুর বুকে। ওমান ও দুবাইয়ে  অক্টোবর ও নভেম্বরে তাপমাত্রা থাকবে ২৫ থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত। তবে আবহাওয়া বাংলাদেশের মতো হলেও সেই তাপের উত্তাপ এই দেশের চেয়ে অকেটাই বেশি। যে কারণে ক্রিকেটারদের গরমের মধ্যেই খেলতে হবে। আর সেই কারণেই বাংলাদেশের এবারের জার্সি তৈরির ক্ষেত্রে তাপ ও গরমের বিষয়টি বিশেষ প্রাধান্য দেয়া হয়েছে বলেই জানান মাহতাবউদ্দিন আনোয়ার। তিনি বলেন, ‘আমরা এবার জার্সি  তৈরির সময় দুবাই ও ওমানের তাপমাত্রার কথা মাথায় রাখছি। যেন ক্রিকেটাররা গরমের মধ্যে ঘেমে না যান। যে কারণে জার্সির ফ্যাব্রিকটা বিশেষ ধরনের রাখা হয়েছে। সেখানে প্রচুর পরিমাণে বাতাস প্রবেশ ও বের হয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এটি পরে ক্রিকেটাররা যখন খেলবেন তখন তারা আরাম পাবেন। তেমন উত্তাপ বোধ করবেন না।’ তবে প্রশ্ন হচ্ছে এবার জার্সিতে যে বিশেষ ফ্যাব্রিক ব্যবহার হচ্ছে সেটি কি! এ বিষয়ে নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার বলেন, ‘এই ফ্যাব্রিক নিয়ে আমি বিস্তারিত কিছু বলতে পারবো না। এতে নকল হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। তবে এটা বলতে পারি এমন ফ্যাব্রিক আগে টাইগারদের জার্সিতে ব্যবহার হয়নি। এটি পরিবেশবান্ধব।’ অন্যদিকে ২০১৯ বিশ্বকাপে জার্সি তৈরি করে বিতর্কের মুখে পড়েছিল বর্তমান জার্সি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ‘স্পোর্টস অ্যান্ড স্পোর্টজ’। সেই জার্সিতে সবুজের মধ্যে বুকের কাছে ছিল সাদা। অভিযোগ ওঠে সেখানে জাতীয় পতাকার রং লাল ছিল না। তবে পরে দ্রুত সময়ে সেটি পরির্তন করে আবার লাল যুক্ত করা হয়। আর সেই কারণে এবার দারুণ সতর্ক এই প্রতিষ্ঠান। 

মাহতাবউদ্দিন আনোয়ার বলেন, ‘আমরা জানি ক্রিকেটে দর্শক ভক্ত-সমর্থকদের আবেগের জায়গাই আলাদা। তারা না থাকলে ক্রিকেট ভাবাই যায় না। আর দেশর মানুষের আবেগের সঙ্গে জড়ানো জাতীয় পতাকা ও তার রং। আর সেই কারণেই আমরা এবার জার্সিতে সবুজের সঙ্গে দারুণভাবে লালের মিশ্রণ রেখেছি। বুকের মধ্যে বড় করেই লিখা থাকবে বাংলাদেশ। আর স্পন্সরের লোগোটা চলে যাবে হাতে। আইসিসি’র বিশ্বকাপ ইভেন্টে জার্সি তৈরি করতে এইসব শর্ত মানতে হয়। আর ২০১৯-এ যা ঘটেছিল সেখানে আইসিসি’র হাতে অনুমোদনের বিষয় ছিল। আমরা সবুজের মধ্যে লালই পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু আইসিসি সেটি সরিয়ে লাল সাদা করতে বলে। তবে পরে সেটি আমরা দ্রুত পরিবর্তন করে আইসিসি’র নতুন করে অনুমোদন নিয়ে। আর সেই কারণেই আমরা এবার আগেই থেকে আমাদের দেশের ক্রিকেট ভক্তদের জাতীয় পতাকা রংয়ের সঙ্গে যে আবেগ আর ভালোবাসা তাই জার্সিতে রেখেছি।’ এবারও বাংলাদেশ দলের বিশ্বকাপ জার্সি পরতে পারবেন ভক্তরা। সেটি যেন দেশের সব শ্রেণি-পেশার মানুষ পরতে পারে তার জন্য মূল্য নিয়ে করা হচ্ছে বিশেষ বিবেচনা।  এ বিষয়ে নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার বলেন, ‘দর্শক ও দেশের ক্রিকেট ভক্তরা জার্সি কীভাবে পাবেন সেটি বিসিবি ঠিক করে দেবে। আমরা আগে ক্রিকেটারদের কাজ শেষ করে দর্শক বা ফ্যানদের জন্য জার্সি নিয়ে ভাববো। তবে এটি বলতে পারি দারুণ একটি জার্সি হচ্ছে। আর সেটি যে সব শ্রেণি পেশার মানুষ কিনতে পারে সেই বিবেচনায় মূল্যও কম নাগালের মধ্যে রাখা হবে। আশা করি এবার দারুণ একটি জার্সি দেখতে পাবেন সবাই।’
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status