বাংলারজমিন

ঝিনাইদহে শিশুদের নিউমোনিয়ার প্রকোপ

আমিনুল ইসলাম লিটন, ঝিনাইদহ থেকে

২০২১-০৯-১৫

ঝিনাইদহে শীতের আগেই বেড়েছে শিশুদের নিউমোনিয়া, জ্বরসহ শ্বাসতন্ত্র রোগের প্রকোপ। প্রতিদিন ঝিনাইদহ সদর ও বিভিন্ন হাসপাতালে গড়ে ৩০-৩৫ জন শিশু ভর্তি হচ্ছে। হাসপাতালে শয্যা আর জনবল সংকটে বাড়তি রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক ও নার্সরা। গতকাল মঙ্গলবার ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের ৮ শয্যার বিপরীতে ভর্তি আছে ১১৫ শিশু। যার অধিকাংশই নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত। অন্য সময় হাসপাতালে গড়ে ৪০-৫০ জন রোগী থাকলেও বর্তমানে প্রতিদিন গড়ে ৩০-৩৫টি শিশু নতুন করে ভর্তি হচ্ছে। নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়াসহ শ্বাসতন্ত্রের বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে জেলার অন্যান্য ক্লিনিক ও হাসপাতালগুলোতে। ৬-১৮ মাস বয়সী শিশুরা বেশি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। শয্যার বিপরীতে কয়েকগুণ বেশি রোগীর সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে ডাক্তার ও নার্সরাও।
সদর উপজেলার কল্যানপুর গ্রামের লতিফ মিয়া বলেন, আমি ৮দিন হাসপাতালে আমার ছেলেকে নিয়ে এসেছি। প্রথমে ঠাণ্ডা আর কাশি ছিল। হাসপাতালে আসার পর ডাক্তার বলছেন ডবল নিউ মোনিয়া হয়েছে। কফ উঠাচ্ছি আর ওষুধ খাওয়াচ্ছি। আল্লাহর রহমতে এখন একটু ভালো। শৈলকুপা উপজেলার কাঁচেরকোল গ্রাম থেকে আসা ২ মাস বয়সী রাবেয়াকে ভর্তি করা হয়েছে রোববার বিকালে। সোমবার সকাল থেকে তার শারীরিক অবস্থা কিছুটা ভালো। রাবেয়ার পিতা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘কাল বিকালে এসেছি। ডাক্তার এখনো আসেননি। রাতে মাত্র ১ জন নার্স আর আয়া ছিলেন। ওষুধ দেয়া হয়েছে। বাচ্চা এখন আপাতত ভালো মনে হচ্ছে।’ সদর উপজেলার কালুহাটি গ্রামের হাবিল নামের এক রোগীর স্বজন বলেন, এই হাসপাতালে প্রতিদিন একশ’ থেকে দেড়শ’ রোগী থাকছেন। কিন্তু একজন মাত্র ডাক্তার। এত রোগী একজন ডাক্তার কি করে চিকিৎসা দিবেন। তিনিও তো মানুষ। হাসপাতালে ভর্তি রোগী ছাড়াও নিচে আবার আউটডোরে রোগী দেখতে হয়। এভাবে তো চিকিৎসা দেয়া যায় না। এই জন্য হাসপাতালে জরুরি আরও ডাক্তার এবং নার্স দরকার। ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের শিশু ও নবজাতক রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ঋতু পরিবর্তনের কারণে শিশুরা বেশি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। হঠাৎ গরম আবার হঠাৎ ঠাণ্ডার কারণে এই সমস্যা হচ্ছে। অভিভাবকদের প্রতি তিনি বলেন, ছোট বাচ্চাদের প্রতি বেশি খেয়াল রাখতে হবে। তাদের যেন গা না ঘামে বা অতিরিক্ত ঠাণ্ডা না লাগে। বুকের দুধ খাওয়ানোর পাশাপাশি শিশুদের সুষম খাবার দিতে হবে। হাসপাতালে চিকিৎসক সংকটের বিষয়টি স্বীকার করে ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. আলাউদ্দিন বলেন, শিশু ওয়ার্ডের জন্য ২ জন চিকিৎসক ছিলেন। কিছুদিন আগে একজন প্রশিক্ষণের জন্য চলে গেছেন। আর একজন মাত্র চিকিৎসক সেবা দিচ্ছেন। সেই সঙ্গে রোগীর চাপ সামলাতে তাদেরও কষ্ট হচ্ছে। জনবল ও চিকিৎসকের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত এ সমস্যার সমাধান হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status