বাংলারজমিন

দোহারে সেতু নির্মাণকাজ স্থগিত, ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী

শামীম আরমান, দোহার (ঢাকা) থেকে

১৫ সেপ্টেম্বর ২০২১, বুধবার, ৭:৪৭ অপরাহ্ন

ঢাকার দোহার উপজেলায় বটিয়া-রাধানগর এলাকায় পদ্মা নদীর শাখা খালের উপরে নির্মাণাধীন সেতু নির্মাণের কাজ একটি কুচক্রী মহলের গভীর ষড়যন্ত্রে স্থগিত হয়ে গেছে। এতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন স্থানীয় জনগণ।
গত সোমবার বেলা ১১টায় সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার বটিয়া-রাধানগর এলাকায় পদ্মা নদীর শাখা খালের উপরে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) তত্ত্বাবধানে নির্মাণাধীন সেতুর কাজ বন্ধ থাকায় খালের দু’পাড়ের হাজারো মানুষ একত্রিত হয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন। এ সময়ে তারা জানান, তাদের দীর্ঘ ৪০ বছরের লালিত স্বপ্নের সেতু বাস্তবায়ন স্থগিত হয়ে গেছে। তাদের দাবি- দ্রুত সব অপশক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে এই সেতু নির্মাণের কাজ চালু করা হোক।
খালের দু’পাড়ের স্থানীয়দের অভিযোগ, সেতু নির্মাণের ফলে এ অঞ্চলের জনপথ উন্নত হচ্ছে। কিন্তু অসাধু বালু ব্যবসায়ীরা দীর্ঘদিন ধরে এ অঞ্চলে বাল্কহেড ও ট্রলার ব্যবহার করে তাদের ব্যবসা পরিচালনা করছে। তারই ধারাবাহিকতায় বালু ব্যবসায়ীরা অতি মুনাফার লোভে অবৈধ নৌযান চলাচলে বাধাগ্রস্ত হওয়ায় সেতু নির্মাণের ‘ত্রুটি’ তুলে ধরে কৌশলে প্রকৌশলী ও ঠিকাদারের কাজ স্থগিত করতে চাপ সৃষ্টি করে।
জানা যায়, উপজেলার পৌরসভা সংলগ্ন বটিয়া-রাধানগর এলাকায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) তত্ত্বাবধানে পদ্মা নদীর শাখা খালের উপর ৪৮ মিটার আরসিসি ব্রিজ নির্মাণাধীন রয়েছে। যার প্রাক্কলিত ৩ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ব্যয়ে সেতুটি নির্মাণ করছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান জ্যোতি ট্রেডার্স। সেতুটির প্রায় ৭৫ ভাগ কাজ শেষ হয়ে গেছে বলে জানান ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান জ্যোতি ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী শেখ মো. সালাহ উদ্দিন।
স্থানীয়রা আরও জানান, সারা দেশে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এ খালে পানির উচ্চতা কিছুদিনের জন্য বৃদ্ধি পেয়েছে। যার ফলে এ খালে অবৈধ বালু বহনকারী নৌযান চলাচলে কিছুটা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এ অঞ্চলের প্রায় ১০ হাজার পরিবারের যাতায়াতের একমাত্র পথ এটি। সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ হলে উপজেলার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ সহজ হবে। পাশাপাশি হাসপাতাল, জয়পাড়া হাট-বাজার, স্কুল-কলেজ, মসজিদ-মাদ্রাসা ও মৃত ব্যক্তির লাশ বহনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এ সেতুটি। অথচ বালু ব্যবসায়ীদের কুদৃষ্টি একটি সবুজ গ্রামের অসহায় মানুষদের দীর্ঘ স্বপ্নযাত্রার বাস্তবায়নকে গলাটিপে হত্যা করতে চায়। তাদের দাবি তাদের দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্নের সেতুটি অতি দ্রুত সব অশুভ শক্তিকে পাশ কাটিয়ে বাস্তবায়ন হোক।
এ বিষয়ে এলজিইডি’র প্রকল্প পরিচালক মো. সেলিম মিয়া জানান, এ খালে আরও অন্য চারটি সেতুগুলোর সঙ্গে পারিপার্শ্বিকতা উচ্চতা, গভীরতা ও নৌযান চলাচলে উপযোগী যাচাই-বাছাই করেই সেতুটির নকশা করা হয়েছে। তাছাড়াও এই সেতুটির উচ্চতা বৃদ্ধি করলে সেতুতে চলাচলকারী যানবাহনের ওঠা-নামা করা অসম্ভব হয়ে পড়বে। জায়গা স্বল্পতা থাকার কারণে সেতুর অ্যাপ্রোচের পাশের মসজিদ ও ব্যক্তিগত স্থাপনা বড় আকারে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে এটা বিবেচনা করেই আমরা বর্তমান সেতুটির নির্মাণ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছি।
দোহার উপজেলা প্রকৌশলী হানিফ মোহাম্মদ মুর্শেদী জানান, সেতুর দু’পাশে অ্যাপ্রোচ সড়কের জায়গা না থাকায় মূল অংশ উঁচু করা যাচ্ছে না। তবে নৌযান চলাচল করতে পারবে। বর্তমানে সেতুটির কাজ স্থগিত রাখতে অবৈধ বালু ব্যবসায়ীরা উঠেপড়ে লেগেছে। সম্প্রতি জয়পাড়ার পুরাতন বড় ব্রিজের নিচ দিয়ে বালু বহনকারী বাল্কহেড নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ব্রিজের মূল খুঁটিতে ধাক্কা দিলে সেখানে গভীর ফাটলের সৃষ্টি হয়েছে। অপরদিকে মাহমুদপুর ইউনিয়নের ধলু খাঁর ব্রিজটি একই কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সেখানে নতুন ব্রিজ নির্মাণাধীন রয়েছে। বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছি। নির্দেশনা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status