এক্সক্লুসিভ
এ যেন ঈদের আনন্দ
মরিয়ম চম্পা
১৩ সেপ্টেম্বর ২০২১, সোমবার, ৯:৩৯ অপরাহ্ন
সকাল ৭টা বেজে ৪৫ মিনিট। ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ৮ নম্বর গেট দিয়ে মায়ের সঙ্গে তাড়াহুড়ো করে ভেতরে প্রবেশ করছে ছোট্ট তাম্মি। বয়স ৬ বছর। প্রভাতী প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী। কাছে এগিয়ে যেতেই তাম্মির মা বললেন, আরে আজতো ওদের ঈদ। কখন স্কুলে আসবে এই ভেবে সারারাত ঘুমায়নি। নিজের ব্যাগ নিজেই গুছিয়েছে। ব্যাগে খুব পরিপাটি করে হ্যান্ড স্যানিটাইজার, টিস্যু, মাস্ক সব ডাবল করে নিয়েছে। গেটের ডানপাশে দাঁড়িয়ে গল্প করছেন তিন শিশু শিক্ষার্থীর মা। সঙ্গে রয়েছে তিন শিশু শিক্ষার্থী। দ্বিতীয় শিফটের ক্লাস শুরু হবে ১০টায়। ভেতরে প্রবেশ করতে হবে ৯টা ৪০ মিনিটের মধ্যে। রাস্তায় যানজটের কারণে দেরি হতে পারে তাই আগেভাগেই মায়েদের সঙ্গে চলে এসেছে তারা। মানবজমিনের সঙ্গে কথা হয় একাধিক শিশু শিক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবকদের। মগবাজারের বাসা থেকে আসা জাহিন তাবাসসুমের মা বলেন, স্কুল খোলার খবর শুনে মেয়েতো খুবই খুশি। খুশিতে চোখে যেন ঘুম নেই। কখন স্কুলে আসবে। তাছাড়া এটা ওর স্কুলের প্রথম দিন। অন্যান্য দিন সকালে জোর করে ঘুম ভাঙাতে হয়। আজ ও নিজে নিজেই উঠেছে। অপর শিশু শিক্ষার্থীর মা অনেকটা চোখে মুখে শঙ্কা নিয়ে বলেন, মেয়ে খুশি হলেও ব্যক্তিগত ভাবে দুশ্চিন্তায় আছি। নতুন করে যেভাবে ডেঙ্গু ছড়াচ্ছে। ডেঙ্গুর জন্য ভয় হচ্ছে। স্কুলের ভেতরে ডেঙ্গু থেকে সুরক্ষার ব্যবস্থা আছে কি না জানি না। স্কুল কর্তৃপক্ষ যদিও বলেছে ডেঙ্গু নেই। তারপরেও ভয় লাগছে। শিক্ষার্থী সানজিদা ইসলামের মা বলেন, আরে ঈদ বললেও ভুল হবে। স্কুল খুলছে না যেন চাঁদ হাতে পেয়েছে। ওরাতো এখনো স্কুলটাই দেখেনি। বারবার মেয়েকে বললাম, প্রথমদিন স্কুলে যেও না মা। গণমাধ্যমে সংবাদ দেখে আগে নিশ্চিত হই কি হয় না হয়। মেয়ে উল্টো বলছে, আম্মু তুমি কেন ভয় পাও। সে আমাকে বরং সাহস দিচ্ছে। রাতের বেলায় বললো, এখনই ড্রাইভার আঙ্কেলকে ফোন দাও। না হলে সে ভুলে যাবে। সে আগে থেকেই ব্যাগ, স্যানিটাইজার, গুছিয়ে রেখেছে। পাশ থেকে সাদিয়ার মা বলেন, সাদিয়া গতকাল বলছে মামুনি আমি কিন্তু কিছুই পুরনো নেবো না। আমাকে সব নতুন করে কিনে দিতে হবে। সকালে স্কুলের জন্য তৈরি করতে গেলে বলে, তুমি কিন্তু কিছু ধরবে না। সব আমি গোছাবো।
পাশে থাকা আরেক অভিভাবক বলেন, গাড়িতে আসার সময় পুরোটা পথ মেয়েকে বুকের ভেতর জড়িয়ে রেখেছি। আর বারবার প্রার্থনা করেছি, সন্তানকে যেভাবে সুস্থ সবল নিয়ে যাচ্ছি, ঠিক সেভাবেই যেন বাসায় নিয়ে ফিরতে পারি। প্রথমদিন পূর্ণাঙ্গ স্বাস্থ্য সুরক্ষা বজায় রেখে পরদিন থেকে আর খবর নেই। এমনটা যেন না হয়।
এদিকে দীর্ঘ দেড় বছর বন্ধ থাকার পরে গতকাল সকাল থেকে আবারো প্রাণচাঞ্চল্য হয়ে উঠেছে রাজধানীর এই অন্যতম বিদ্যাপীঠ। সরজমিন স্কুলে প্রবেশের সময় সমন্বিতভাবে স্কুলের শিক্ষক, ভলান্টিয়ার, এবং স্কুল সহায়কদের সহায়তায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে, শরীরের তাপমাত্রা মেপে একজন করে শিক্ষার্থীকে ভেতরে প্রবেশ করানো হয়। কিন্তু ক্লাস শেষে বের হওয়ার সময় ৭ নম্বর গেটের ভেতরে এবং বাইরে পুরোটাতে স্বাস্থ্যবিধির কোনো বালাই ছিল না।
গেটের বাইরে অভিভাবকদের জটলা এবং ভেতরে শিক্ষার্থীদের হুড়োহুড়ি। সবমিলিয়ে হ-য-ব-র-ল অবস্থা। মেয়েকে নিতে আসা এক অভিভাবক উষ্মা প্রকাশ করে বলেন, বাচ্চাদের নিয়ে রীতিমতো ভয় হচ্ছে।
প্রভাতী জুনিয়র শাখার ইংরেজি শিক্ষক জেরিন কামাল বলেন, অভিভাবকগণ যদি একটু দায়িত্ববান হন তাহলে মনে হয় আজকে গেটের সামনে যে ভিড় এবং জটলা দেখা গেছে সেটা আমরা কাটিয়ে তুলতে পারবো। শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি সম্পর্কে তিনি বলেন, ব্যক্তিগতভাবে বলবো শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ছিল শতভাগ। শিক্ষার্থী বেশি থাকায় দুই শিফটে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করা হবে। সামনের দিনগুলেতে এই রুটিনেই নিয়মিত ক্লাস চলবে বলে জানান তিনি।
পাশে থাকা আরেক অভিভাবক বলেন, গাড়িতে আসার সময় পুরোটা পথ মেয়েকে বুকের ভেতর জড়িয়ে রেখেছি। আর বারবার প্রার্থনা করেছি, সন্তানকে যেভাবে সুস্থ সবল নিয়ে যাচ্ছি, ঠিক সেভাবেই যেন বাসায় নিয়ে ফিরতে পারি। প্রথমদিন পূর্ণাঙ্গ স্বাস্থ্য সুরক্ষা বজায় রেখে পরদিন থেকে আর খবর নেই। এমনটা যেন না হয়।
এদিকে দীর্ঘ দেড় বছর বন্ধ থাকার পরে গতকাল সকাল থেকে আবারো প্রাণচাঞ্চল্য হয়ে উঠেছে রাজধানীর এই অন্যতম বিদ্যাপীঠ। সরজমিন স্কুলে প্রবেশের সময় সমন্বিতভাবে স্কুলের শিক্ষক, ভলান্টিয়ার, এবং স্কুল সহায়কদের সহায়তায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে, শরীরের তাপমাত্রা মেপে একজন করে শিক্ষার্থীকে ভেতরে প্রবেশ করানো হয়। কিন্তু ক্লাস শেষে বের হওয়ার সময় ৭ নম্বর গেটের ভেতরে এবং বাইরে পুরোটাতে স্বাস্থ্যবিধির কোনো বালাই ছিল না।
গেটের বাইরে অভিভাবকদের জটলা এবং ভেতরে শিক্ষার্থীদের হুড়োহুড়ি। সবমিলিয়ে হ-য-ব-র-ল অবস্থা। মেয়েকে নিতে আসা এক অভিভাবক উষ্মা প্রকাশ করে বলেন, বাচ্চাদের নিয়ে রীতিমতো ভয় হচ্ছে।
প্রভাতী জুনিয়র শাখার ইংরেজি শিক্ষক জেরিন কামাল বলেন, অভিভাবকগণ যদি একটু দায়িত্ববান হন তাহলে মনে হয় আজকে গেটের সামনে যে ভিড় এবং জটলা দেখা গেছে সেটা আমরা কাটিয়ে তুলতে পারবো। শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি সম্পর্কে তিনি বলেন, ব্যক্তিগতভাবে বলবো শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ছিল শতভাগ। শিক্ষার্থী বেশি থাকায় দুই শিফটে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করা হবে। সামনের দিনগুলেতে এই রুটিনেই নিয়মিত ক্লাস চলবে বলে জানান তিনি।