মত-মতান্তর
করোনা সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ নিয়ে ড. তপন পালের পূর্বাভাস সঠিক হতে যাচ্ছে
রাহমান মনি, জাপান থেকে
১৫ আগস্ট ২০২১, রবিবার, ৫:৫৯ অপরাহ্ন

বিশ্বে করোনা মহামারি চলছে। দেশে চলছে করোনাভাইরাস সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ। গ্রাম-গঞ্জ-শহর থেকে ভেসে আসছে শত শত করোনা রোগী শনাক্তের দুঃসংবাদ। হাসপাতালগুলোতে করোনা রোগীতে ভরপুর। কোথাও ওষুধের দোকানের সামনে বিরাট লাইন। পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হচ্ছে প্রিয়জন হারানোদের বুকফাটা কান্নার ছবি। কেউ জানে না কখন এই ঢেউ পিকে যাবে, কখন শেষ হবে, কখন আবার নতুন ঢেউ আসবে। এগুলোর জন্য দরকার একটু গবেষণা, একটু পূর্বাভাস।
বাংলাদেশের করোনাভাইরাস সংক্রমণের পূর্বাভাসের সঙ্গে জড়িয়ে আছে একটি নাম। তিনি হলেন ড. তপন পাল। তিনি গাণিতিক ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রয়োগ করে বিভিন্ন ধরনের পূর্বাভাস দিয়েছেন যার অধিকাংশ সঠিক কিংবা কাছাকাছি ছিল। গত বছর প্রথম ঢেউয়ের সময় মার্চ মাস থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে অনেকটা সঠিক পূর্বাভাস দিয়েছিলেন যার মূল্যায়ন নিয়ে মানবজমিন পত্রিকায় সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২০ তারিখে একটা প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল।
এ বছর এপ্রিল-মে মাসে যখন করোনাভাইরাস সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ে ভারতের পরিস্থিতি টালমাটাল তখন তিনি মে’র ১৯ তারিখে ফেসবুকে তার ব্যক্তিগত পেজে ও দেশ-বিদেশ ওয়েব পোর্টালে বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ শুরু ও এর ভয়াবহতা সম্পর্কে পূর্বাভাস দিয়েছিলেন। তিনি লিখেছিলেন যে, বাংলাদেশে এক-দুই মাসের ভেতরে তৃতীয় ঢেউ আসবে। তৃতীয় ঢেউয়ে প্রচুর অল্প বয়সীরা আক্রান্ত হবে। পরিস্থিতি ভয়াবহ হবে বলে সবাইকে সাবধান করেছিলেন। এরপর জুন মাসের ২৭ তারিখে তিনি পূর্বাভাস দিয়েছিলেন যে, বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউয়ের পিক হবে জুলাই ১৪ থেকে ২৮ তারিখের মধ্যে। আর পিকে পৌঁছানোর দেড়-দুই মাসের ভেতরে, মানে সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম কিংবা দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে স্বাভাবিক অবস্থায় আসার সম্ভাবনা আছে। আর চতুর্থ ঢেউয়ের পিক নভেম্বর মাসে হওয়ার সম্ভাবনা আছে। ড. তপন পাল আরও বলেছিলেন যে, বাংলাদেশে তৃতীয় পিক কমার সঙ্গে সঙ্গে ব্যাপকহারে করোনাভাইরাসের টিকা দেয়া উচিত। প্রয়োজনে উপজেলা পর্যায়ে বিশাল টিকাকরণ ক্যাম্প স্থাপন করে গণহারে টিকা দেয়া উচিত।
আমরা দেখেছি যে, জুন মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়েছে। আর আমরা গত দুই সপ্তাহের শনাক্তের হার থেকে দেখতে পাচ্ছি যে, বাংলাদেশে করোনা রোগী শনাক্তের হার আস্তে আস্তে কমে আসছে। মানে, বাংলাদেশে তৃতীয় ঢেউ পিক অতিক্রম করেছে। কাজেই বলা যেতে পারে যে, তৃতীয় ঢেউ শুরু, ভয়াবহতা ও পিক সম্পর্কিত ড. তপন পালের পূর্বাভাস সঠিক ছিল। তিনি বলেন যে, পূর্বাভাস প্রকৃত ঘটনার অনেকদিন আগে দেয়া হয়, তাই ১০০% সঠিক পূর্বাভাস দেয়া কঠিন। তবে কোনো পূর্বাভাস যদি প্রকৃত ঘটনার কাছাকাছি যায় তাহলে তা দেশের নীতিনির্ধারকদের সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য এক বিরাট সহায়ক তথ্য হিসেবে কাজ করে।
তিনি আমাদের আরও জানিয়েছেন যে, যদিও তৃতীয় ঢেউয়ের পিক অতিক্রম করেছে তারপরেও সবাইকে সাবধানে থাকতে হবে ও স্বাস্থ্যবিধি পুরোপুরি মেনে চলতে হবে কারণ বাংলাদেশের সাধারণ জনগণ যদি স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চলে তাহলে আবার সংক্রমণ বাড়তে থাকবে। আর পিক থেকে নামার সময় বেশি মৃত্যু ঘটার সম্ভাবনা আছে। এটা জাপানেও ঘটেছে, বাংলাদেশেও ঘটছে। তিনি বলেন যে, পাহাড়ে উঠা তুলনামূলকভাবে সহজ কিন্তু পাহাড় থেকে নামা কঠিন এবং নামার সময় বেশি দুর্ঘটনা ঘটে।
ড. তপন পাল শুধু পূর্বাভাসই নয়, তিনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গবেষণার ফলাফলের সারমর্মও মাঝে মাঝে দিতেন। এ সকল গবেষণার ফলাফলের তথ্যের ওপর নির্ভর করে তিনি অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন যে, যদিও করোনাভাইরাসের কোনো টিকাই সবাইকে ১০০% সুরক্ষা দিবে না কিন্তু টিকা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি, আক্রান্ত হলেও মৃত্যু ঝুঁকি, চরম শারীরিক অবস্থার অবনতির ঝুঁকি কিংবা গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তির ঝুঁকি অনেক কমাবে। কাজেই আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি, মৃত্যু ঝুঁকি ও গুরুতর অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি কমানোর জন্য সবাইকে করোনাভাইরাসের টিকা নিতে হবে এবং স্বাস্থ্যবিধি পুরোপুরি মেনে চলতে হবে।
কিন্তু কে এই তপন পাল? তিনি জাপান প্রবাসীদের মাঝে এক পরিচিত নাম। তিনি একজন গবেষক, একজন বিজ্ঞানী। ড. তপন পাল ১৯৯৮ সালে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি ১৯৯৮ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে ২০০১ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে প্রভাষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ২০০১ সালে জাপান সরকারের মোনবুকাগাকুশো স্কলারশিপ নিয়ে উচ্চ শিক্ষার্থে জাপানে আসেন। জাপানের টোকিও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০০৪ সালে মাস্টার্স ডিগ্রি ও ২০০৭ সালে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। ২০০৭ সালে জাপানের একটি বড় কোম্পানিতে গবেষক হিসেবে যোগদান করেন এবং বর্তমানে একই কোম্পানিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও মেশিন লার্নিং বিষয়ে জ্যেষ্ঠ গবেষক বিজ্ঞানী হিসেবে কর্মরত।
বাংলাদেশের করোনাভাইরাস সংক্রমণের পূর্বাভাসের সঙ্গে জড়িয়ে আছে একটি নাম। তিনি হলেন ড. তপন পাল। তিনি গাণিতিক ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রয়োগ করে বিভিন্ন ধরনের পূর্বাভাস দিয়েছেন যার অধিকাংশ সঠিক কিংবা কাছাকাছি ছিল। গত বছর প্রথম ঢেউয়ের সময় মার্চ মাস থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে অনেকটা সঠিক পূর্বাভাস দিয়েছিলেন যার মূল্যায়ন নিয়ে মানবজমিন পত্রিকায় সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২০ তারিখে একটা প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল।
এ বছর এপ্রিল-মে মাসে যখন করোনাভাইরাস সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ে ভারতের পরিস্থিতি টালমাটাল তখন তিনি মে’র ১৯ তারিখে ফেসবুকে তার ব্যক্তিগত পেজে ও দেশ-বিদেশ ওয়েব পোর্টালে বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ শুরু ও এর ভয়াবহতা সম্পর্কে পূর্বাভাস দিয়েছিলেন। তিনি লিখেছিলেন যে, বাংলাদেশে এক-দুই মাসের ভেতরে তৃতীয় ঢেউ আসবে। তৃতীয় ঢেউয়ে প্রচুর অল্প বয়সীরা আক্রান্ত হবে। পরিস্থিতি ভয়াবহ হবে বলে সবাইকে সাবধান করেছিলেন। এরপর জুন মাসের ২৭ তারিখে তিনি পূর্বাভাস দিয়েছিলেন যে, বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউয়ের পিক হবে জুলাই ১৪ থেকে ২৮ তারিখের মধ্যে। আর পিকে পৌঁছানোর দেড়-দুই মাসের ভেতরে, মানে সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম কিংবা দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে স্বাভাবিক অবস্থায় আসার সম্ভাবনা আছে। আর চতুর্থ ঢেউয়ের পিক নভেম্বর মাসে হওয়ার সম্ভাবনা আছে। ড. তপন পাল আরও বলেছিলেন যে, বাংলাদেশে তৃতীয় পিক কমার সঙ্গে সঙ্গে ব্যাপকহারে করোনাভাইরাসের টিকা দেয়া উচিত। প্রয়োজনে উপজেলা পর্যায়ে বিশাল টিকাকরণ ক্যাম্প স্থাপন করে গণহারে টিকা দেয়া উচিত।
আমরা দেখেছি যে, জুন মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়েছে। আর আমরা গত দুই সপ্তাহের শনাক্তের হার থেকে দেখতে পাচ্ছি যে, বাংলাদেশে করোনা রোগী শনাক্তের হার আস্তে আস্তে কমে আসছে। মানে, বাংলাদেশে তৃতীয় ঢেউ পিক অতিক্রম করেছে। কাজেই বলা যেতে পারে যে, তৃতীয় ঢেউ শুরু, ভয়াবহতা ও পিক সম্পর্কিত ড. তপন পালের পূর্বাভাস সঠিক ছিল। তিনি বলেন যে, পূর্বাভাস প্রকৃত ঘটনার অনেকদিন আগে দেয়া হয়, তাই ১০০% সঠিক পূর্বাভাস দেয়া কঠিন। তবে কোনো পূর্বাভাস যদি প্রকৃত ঘটনার কাছাকাছি যায় তাহলে তা দেশের নীতিনির্ধারকদের সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য এক বিরাট সহায়ক তথ্য হিসেবে কাজ করে।
তিনি আমাদের আরও জানিয়েছেন যে, যদিও তৃতীয় ঢেউয়ের পিক অতিক্রম করেছে তারপরেও সবাইকে সাবধানে থাকতে হবে ও স্বাস্থ্যবিধি পুরোপুরি মেনে চলতে হবে কারণ বাংলাদেশের সাধারণ জনগণ যদি স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চলে তাহলে আবার সংক্রমণ বাড়তে থাকবে। আর পিক থেকে নামার সময় বেশি মৃত্যু ঘটার সম্ভাবনা আছে। এটা জাপানেও ঘটেছে, বাংলাদেশেও ঘটছে। তিনি বলেন যে, পাহাড়ে উঠা তুলনামূলকভাবে সহজ কিন্তু পাহাড় থেকে নামা কঠিন এবং নামার সময় বেশি দুর্ঘটনা ঘটে।
ড. তপন পাল শুধু পূর্বাভাসই নয়, তিনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গবেষণার ফলাফলের সারমর্মও মাঝে মাঝে দিতেন। এ সকল গবেষণার ফলাফলের তথ্যের ওপর নির্ভর করে তিনি অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন যে, যদিও করোনাভাইরাসের কোনো টিকাই সবাইকে ১০০% সুরক্ষা দিবে না কিন্তু টিকা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি, আক্রান্ত হলেও মৃত্যু ঝুঁকি, চরম শারীরিক অবস্থার অবনতির ঝুঁকি কিংবা গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তির ঝুঁকি অনেক কমাবে। কাজেই আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি, মৃত্যু ঝুঁকি ও গুরুতর অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি কমানোর জন্য সবাইকে করোনাভাইরাসের টিকা নিতে হবে এবং স্বাস্থ্যবিধি পুরোপুরি মেনে চলতে হবে।
কিন্তু কে এই তপন পাল? তিনি জাপান প্রবাসীদের মাঝে এক পরিচিত নাম। তিনি একজন গবেষক, একজন বিজ্ঞানী। ড. তপন পাল ১৯৯৮ সালে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি ১৯৯৮ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে ২০০১ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে প্রভাষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ২০০১ সালে জাপান সরকারের মোনবুকাগাকুশো স্কলারশিপ নিয়ে উচ্চ শিক্ষার্থে জাপানে আসেন। জাপানের টোকিও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০০৪ সালে মাস্টার্স ডিগ্রি ও ২০০৭ সালে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। ২০০৭ সালে জাপানের একটি বড় কোম্পানিতে গবেষক হিসেবে যোগদান করেন এবং বর্তমানে একই কোম্পানিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও মেশিন লার্নিং বিষয়ে জ্যেষ্ঠ গবেষক বিজ্ঞানী হিসেবে কর্মরত।