দেশ বিদেশ
বরেণ্য চিত্রগ্রাহক আখতার হোসেনের প্রয়াণ
আবদুল্লাহ আল মোহন
৪ আগস্ট ২০২১, বুধবার, ৮:১৪ অপরাহ্ন
নীরবে মহাকালের পথে পা বাড়ালেন জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত স্বনামখ্যাত চলচ্চিত্র চিত্রগ্রাহক আখতার হোসেন। ২রা আগস্ট সোমবার সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দেশবরেণ্য চিত্রগ্রাহক আখতার হোসেন শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ... রাজিউন)। ক’দিন আগে সাভারের আশুলিয়ায় নিজ বাসায় অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কয়েক দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে অবশেষে অচেনালোকে চলে গেলেন ‘হঠাৎ বৃষ্টি’র মতো অসংখ্য আলোচিত চলচ্চিত্রের স্বনামধন্য চিত্রগ্রাহক আখতার হোসেন। তার মতো আজন্মের এক শিল্পসাধকের নীরব প্রস্থানে আমরা গভীরভাবে শোকাহত। অতিমারি করোনাকালের (তিনি করোনা আক্রান্ত ছিলেন না) চরম এই দুঃসময়ে তার মতো সৃজনী ব্যক্তিত্বের প্রয়াণ আমাদের বেদনাকে তীব্রতর করেছে, চলচ্চিত্র শিল্পজগতেও অসীম শূন্যতার সৃষ্টি করেছে। আখতার হোসেনের কর্মজীবনের শুরু হয়েছিল বিখ্যাত পরিচালক জহির রায়হানের ‘খবঃ ঃযবৎব নব ষরমযঃ’ চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়ে, যা জহির রায়হান শেষ করার আগেই শহীদ হন। তিনি বেশ কয়েকটি মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বিখ্যাত চলচ্চিত্রের চিত্রগ্রাহক ছিলেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- বাঘাবাংগালী, অরুণোদয়ের অগ্নিসাক্ষী, আগুনের পরশমণি, এখনো অনেক রাত। এ ছাড়াও তার উল্লেখযোগ্য আরও কয়েকটি চলচ্চিত্র হলো- হঠাৎ বৃষ্টি, নোলক, নাচোলের রানী। তিনি ‘হঠাৎ বৃষ্টি’ সহ বিভিন্ন চলচ্চিত্রের জন্য একাধিকবার শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ও বাচসাস পুরস্কার পেয়েছেন। ব্যক্তিজীবনে আখতার হোসেন যেমন মানবিক ও মমত্ববোধ সম্পন্ন মানুষ ছিলেন, তেমনি ছিলেন সৎ, নিরহঙ্কারী ব্যক্তিত্ব। ছিলেন আদর্শস্বামী, অনুকরণযোগ্য পিতা, অসীম ভালোবাসার আলো জ্বালানো দাদা ও নানা, সর্বোপরি একজন আদর্শ অনন্য মানুষ। এই বহুল প্রচারের কালেও তিনি ছিলেন অসম্ভব প্রচারবিমুখ, কিছুটা অন্তর্মুখী ও নিভৃতচারী সৃজনী ব্যক্তিত্ব। গতকাল মঙ্গলবার তার স্থায়ী আবাসস্থল আশুলিয়ায় নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। রাতেই জাপান গার্ডেন সিটিতে মরহুমকে শেষ শ্রদ্ধা জানানো শেষে আজিমপুর কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়। প্রয়াণকালে তিনি স্ত্রী, একপুত্র, এক কন্যা, নাতি-নাতনিসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। আমাদের শিল্প ভুবনের, নন্দন জগতের আলোকিত এই ব্যক্তিত্ব আমাদের হৃদয়ে, স্মৃতিতে বেঁচে থাকবেন অনন্তকাল।
[লেখক: সহকারী অধ্যাপক, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ, ভাসানটেক সরকারি কলেজ, ঢাকা]
[লেখক: সহকারী অধ্যাপক, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ, ভাসানটেক সরকারি কলেজ, ঢাকা]