বাংলারজমিন

কাজে আসছে না স্লুইসগেট দুর্ভোগে কলাপাড়ার কৃষক

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি

৪ আগস্ট ২০২১, বুধবার, ৮:০২ অপরাহ্ন

সাগরপাড়ের কৃষি জমি লবণাক্ত পানির কবল থেকে রক্ষা, বর্ষা মৌসুমে সুষ্ঠুভাবে পানি নিষ্কাশন ও সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসের কবল থেকে জানমাল রক্ষার জন্য নির্মাণ করা স্লুইসগুলো কাজে আসছে না কৃষকদের। কারণ এক শ্রেণির প্রভাবশালী মহল মাছ চাষের উদ্দেশ্যে শীত মৌসুমে সাগরের লবণাক্ত পানি উত্তোলন করে এবং বর্ষা মৌসুমে স্লুইসগেট আটকিয়ে রাখার কারণে হাজার হাজার একর কৃষি জমি পানির নিচে তলিয়ে থাকে। জানা যায়, পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় ষাটের দশকের প্রথম দিকে ৯টি পোল্ডারে ৩৩০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়। ওই দশকের মাঝামাঝি সময়ে ৪৯টি ড্রেনেজ এবং ৫৩টি ফ্লাশিং স্লুইস নির্মাণ করা হয়। প্রত্যেকটি স্লুইস সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণের জন্য একজন করে স্লুইস খালাসি নিয়োগ দেয়া হয়। এলাকার কৃষকদের সুবিধার জন্য তারা পানি ওঠানামা করতো। প্রয়োজনে গেট বন্ধ রাখতো। আবার প্রয়োজন হলে খুলে দিতো। ৬৯’র পর থেকে নতুন করে খালাসী নিয়োগ বন্ধ করে দেয় পানি উন্নয়ন বোর্ড। অপরদিকে নিয়োগকৃত খালাসী অবসরে যাওয়ার পর আর কোনো খালাসীর নিয়োগ দেয়নি। ফলে স্লুইসগুলো হয়ে যায় অরক্ষিত। এ সুযোগে স্থানীয় প্রভাবশালী মহল দখল করে নেয় স্লুইসগুলো। নীলগঞ্জ ইউনিয়নের নীজকাটা গ্রামের ৮ ব্যান্ডের স্লুইসের ওপর ১৭টি গ্রামের মানুষ নির্ভরশীল। বর্তমানে ওই গ্রামগুলোর ৪ হাজার একর জমি চাষাবাদের হুমকির মুখে। চাকামইয়া ইউনিয়নের কাঁঠালপাড়ার ৪ ব্যান্ডের স্লুইস গেট সম্পূর্ণ খোলা রয়েছে। ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ওই খালের দু’পাড়ে রয়েছে চাকামইয়া, কড়ইবাড়িয়া ও আড়পাঙ্গাশিয়া এই তিনটি ইউনিয়নের মানুষের দুর্ভোগের সীমা নেই। সম্প্রতি সরকারি খালের দখল নিয়ে মিঠাগঞ্জ ইউনিয়নের মধুখালী গ্রামে দু’পক্ষের দফায় দফায় সংঘর্ষে উভয়পক্ষের ৩২ জন আহত হয়েছে। এদের মধ্যে আটজনকে গুরুতর অবস্থায় বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেছে। উপজেলা কৃষি অফিসার এআর এম সাইফুল্লাহ বলেন, স্লুইস গেট নিয়ন্ত্রণ কমিটির সঙ্গে কৃষি বিভাগকে জড়িয়ে রাখলে আমরা প্রান্তিক কৃষকদের উপকার করতে পারতাম। এ স্লুইস কারা নিয়ন্ত্রণ করে তা আমরা কিছুই জানি না। এ ব্যাপারে কলাপাড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসডি শওকত হোসেন মেহরাজ জানান, এ উপজেলার সকল স্লুইস গেট কমিটির প্রধান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সদস্য সচিব পানি উন্নয়ন বোর্ড। এদের সঙ্গে স্থানীয় কৃষক ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গদের নিয়ে ৯ সদস্যবিশিষ্ট স্লুইস গেট নিয়ন্ত্রণ কমিটি রয়েছে। আমরা সরজমিন খতিয়ে এর ব্যবস্থা নেবো। কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হাসনাত মোহম্মদ শহিদুল হক সাংবাদিকদের জানান, সরকারি খালের অবৈধ বাঁধ অপসারণ উপজেলা প্রশাসনের রুটিন ওয়ার্ক। ইতিমধ্যে ধানখালী ইউনিয়নের খাল থেকে ১৬টি অবৈধ বাঁধ কেটে দিয়ে জলাবদ্ধতা নিরসন করা হয়েছে। উপজেলার অন্য ইউনিয়নের খালগুলো থেকে সকল অবৈধ বাঁধ অপসারণ করে সরকারি খাল দখলমুক্ত করা হবে। তবে স্লুইস গেটের বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীন। পানি উন্নয়ন বোর্ড যদি উপজেলা প্রশাসনের সহায়তা চায় তাদের সহায়তা করা হবে।’
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status