বাংলারজমিন
ভুয়া কবিরাজের চিকিৎসায় হাত হারাতে বসেছে ৭ বছরের শিশু
সাপাহার (নওগাঁ) প্রতিনিধি
২ আগস্ট ২০২১, সোমবার, ৮:০১ অপরাহ্ন
নওগাঁর সাপাহারে হাতুড়ে কবিরাজের ভুল চিকিৎসায় আল আমিন (৭) নামে এক শিশুর ডান হাতের বেহাল অবস্থা হয়েছে। বাচ্চাটির উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। ভুক্তভোগী বাচ্চার অভিভাবক গত শুক্রবার উপজেলার হাঁপানিয়া বিরামপুর গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে আল আমিন খেলা করার জন্য বাড়ির পাশে ছোট্ট একটি আমগাছে ওঠে। পরে হঠাৎ গাছ থেকে পড়ে তার ডান হাতের বাহুতে আঘাত লাগে। তারা জানতে পারেন যে, ছেলের হাত ভেঙে গেছে। এ সময় তাদের আত্মীয় উপজেলার আন্ধাদীঘি গ্রামের হাবিবুরের ছেলে আব্দুল আলীমের পরামর্শে ধামইরহাট উপজেলার রামচন্দ্রপুর গ্রামের জনৈক হাতুড়ে কবিরাজ জমশেদের নিকট নিয়ে যান। ওই ভুয়া কবিরাজ জমশেদ বাচ্চার হাতে বাঁশের বাতি দিয়ে হাত বেঁধে দেয়। পরবর্তীতে হাতের বাহুতে ফোস্কা পড়ে পচন ধরলে বাচ্চার বাবা-মা আবার ওই ভুয়া কবিরাজের সঙ্গে যোগাযোগ করলে ডাক্তার দেখানোর পরামর্শ দেয়। এমতাবস্থায় গতকাল দুপুরে ওই শিশুকে নিয়ে সাপাহার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেন তার অভিভাবকরা। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসকরা হাতের অবস্থা দেখে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। এ বিষয়ে অভিযুক্ত ভুয়া কবিরাজ জমশেদের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বিষয়টি স্বীকার করেন। শিশুটির হাত ভালো হয়ে যাবে বলেও দাবি করেন তিনি। এছাড়াও অনেক রোগী তার চিকিৎসায় ভালো হয়েছে বলে জানায়। কবিরাজি বিষয়ে লাইসেন্স বা কোনো প্রশিক্ষণের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে সেগুলো কিছুই নেই মর্মে সাংবাদিকদের দেখা করতে বলে। এ বিষয়ে সাপাহার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ও হাড়জোড়া, বাতব্যথা বিশেষজ্ঞ সার্জন মোর্শেদ মঞ্জুর কবির লিটন জানান, বাচ্চার হাতের অবস্থা খারাপ পর্যায়ে চলে গেছে। এমতাবস্থায় আমরা বাচ্চাটিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাবার পরামর্শ দিচ্ছি। বাচ্চার হাত রাখবে না কেটে ফেলবে সে সিদ্ধান্ত মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ নেবেন। এছাড়াও ভুয়া কবিরাজকে আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানান তিনি। সাপাহার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মুহাম্মদ রুহুল আমিন জানান, বর্তমান আধুনিকতার যুগে মানুষের কাছে এমনটা আশা করা যায় না। বাচ্চার অবিভাবকগণ যদি তাৎক্ষণিক কোনো বিশেষজ্ঞকে দেখাতেন তাহলে খুব সহজেই এটি রিকভারি হওয়া সম্ভব ছিল। কিন্তু বর্তমানে বাচ্চার হাতের অবস্থা খুব খারাপ। আমরা বাচ্চাটিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি।