প্রথম পাতা

ঢাকামুখী জনস্রোত

স্টাফ রিপোর্টার ও বাংলারজমিন ডেস্ক

১ আগস্ট ২০২১, রবিবার, ৮:২৬ অপরাহ্ন

করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে সারা দেশে চলছে লকডাউন। বন্ধ বাস, ট্রেন ও লঞ্চসহ সবধরনের গণপরিবহন। এরই মধ্যে রপ্তানিমুখী শিল্পকারখানা খুলছে আজ রোববার। একদিন সময় রেখে কারখানা খোলার ঘোষণায় হন্যে হয়ে ছুটছে মানুষ। গন্তব্য রাজধানী বা আশেপাশের শিল্প অঞ্চল। গতকাল শনিবার সকাল থেকে উপচে পড়া ভিড় ফেরিঘাট, সড়ক ও মহাসড়কে। কঠোর লকডাউনের মধ্যে মানুষের গাদাগাদির এই চিত্র নতুন করে ভয় জাগাচ্ছে করোনা সংক্রমণের। ফেরিতে তিল ধারণের ঠাঁই নেই। গায়ে গায়ে লাগোয়া চলছে মানুষের বিচরণ। অনেকের মুখে মাস্ক নেই। সবাই ছুটছেন রাজধানীর দিকে। ফেরি পার হয়ে রিকশা, ভ্যান বা ট্রাকে করে অনেকে পাড়ি দিচ্ছেন মহাসড়ক। একেকটি ট্রাকে ৫০ থেকে ৬০ জন করে যাত্রী উঠছেন। এছাড়া মাইক্রোবাস, মোটরসাইকেলে করেও আসছেন অনেকে। গতকাল শনিবার সকাল থেকে ঢাকার প্রতিটি প্রবেশমুখে দেখা যায় কর্মজীবী মানুষের ঢল। সড়কে বেড়েছে মানুষ। বেশিভাগই পোশাক কারখানা ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী। এদিকে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় শিল্পকারখানা খুলে দেয়ার খবরে রাতেই ঢাকায় ফিরেছেন কেউ কেউ। গতকাল সকাল থেকেই সড়ক-মহাসড়ক ও ফেরিতে ঢল নেমেছে শ্রমিকদের। কঠোর বিধিনিষেধের কারণে যাত্রীবাহী বাস ও লঞ্চ চলাচল না করায় নানা সমস্যার সম্মুখীন হন এসব শ্রমিকরা। এতে যে যেভাবে পারছেন কর্মস্থলমুখী হয়েছেন। দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষের চাপ দেখা গেছে ফেরিঘাটে। ভোর থেকেই প্রতিটি ঘাটে উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। তবে মানুষের অতিরিক্ত চাপ থাকায় ফেরিতে জরুরি পরিবহন তেমন একটা দেখা যায়নি। তড়িঘড়ি করে ঢাকায় ফিরতে গিয়ে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মানছেন না ফেরির যাত্রীরা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঢাকামুখী মানুষের স্রোত আরও বাড়তে থাকে। যাদের অধিকাংশই পোশাক শ্রমিক। বাংলাবাজার-কাঁঠালবাড়ি ফেরিঘাটে ভিড় করছেন হাজার হাজার যাত্রী। করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে কঠোর লকডাউনের ভেতর ফেরিতে সাধারণ যাত্রী পারাপারের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও মানছেন না কেউ। অনেকেই ফেরির অপেক্ষায় জড়ো হচ্ছেন ঘাটে। দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে কয়েকগুণ ভাড়া বেশি দিয়ে মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার, মাহেন্দ্রা, মোটরসাইকেল, অটোরিকশায় করে ঘাটে আসছেন তারা। ঘাটে ফেরি নোঙর করার সঙ্গে সঙ্গে ঠেলাঠেলি ও ঝাঁপিয়ে ফেরিতে উঠছেন যাত্রীরা। তীব্র গরম, রোদ-বৃষ্টি মাথায় নিয়েই ছুটছেন তারা। এদিকে ফেরি পার হয়ে বিপাকে পড়েছেন অনেকেই। গণপরিবহন না পেয়ে অনেকেই পায়ে হেঁটে নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছান। কেউ কেউ অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার, মাহেন্দ্রা, মোটরসাইকেল, অটোরিকশায় করে ভেঙে ভেঙে ঢাকায় প্রবেশ করছেন।

আহাজার আলী নামের একজন শ্রমিক জানান, একদিন সময় রেখে কারখানা খুলে দেয়ায় বিপাকে পড়েছেন হাজার হাজার শ্রমিক। হঠাৎ এমন সিদ্ধাতে ঢাকায় ফিরতে নানা ভোগান্তি ও আর্থিকভাবে সমস্যার মুখে পড়েছেন। গার্মেন্ট থেকে জানানো হয়েছে, রোববার কারখানা খুলবে। সবাইকে কাজে যোগ দিতে হবে। অন্যস্থায় যারা আসবেন না তাদের বিপরীতে নতুন লোক নেয়া হবে। তাই চাকরি বাঁচাতে বাধ্য হয়েই ফেরিতে ঠেলাঠেলি করে আসছি। ফেরি থেকে নেমে বেশি ভোগান্তির স্বীকার হয়েছি। শিমুলিয়া ঘাট থেকে মোটরসাইকেলে করে ২ জন ১৫০০ টাকায় সায়েদাবাদ পর্যন্ত এসেছি।

এদিকে গতকাল দুপুরে বাবু বাজার ব্রিজ এলাকায় দেখা যায়, হেঁটে আসা মানুষের ঢল। প্রাইভেটকার, অটোরিকশা, মোটরসাইকেল, সিএনজি, পিকআপ ভ্যান, মালবাহী ট্রাকে করে ঢাকায় ঢুকছে মানুষ। এসব পরিবহনে গাদাগাদি করে ৬-৭ গুণ বাড়তি ভাড়ায় ঢাকায় আসেন তারা। ঢাকার প্রবেশপথ আমিনবাজার ও গাবতলীতেও কর্মস্থলমুখী মানুষের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।

অনেকেই বলেছেন, সরকারের কঠোর লকডাউন ও ঈদের ছুটিতে শ্রমিকরা গ্রামে গেছেন। লকডাউন চলমান রেখে হঠাৎ করে গার্মেন্ট ও শিল্পকাখানা খুলেছে। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন শ্রমিকরা। ফলে সরকারঘোষিত বিধিনিষেধ অমান্য করেই চাকরি বাঁচাতে কর্মস্থলে ফিরছেন গ্রামে থাকা শ্রমিকরা। ঢাকায় ফিরতে বিভিন্ন পয়েন্টে নানা ভোগান্তির স্বীকার হয়েছেন তারা।

উত্তরায় একটি গার্মেন্টে চাকরি করেন ফাতেমা বেগম। কথা হলে তিনি বলেন, গতকাল রাতে শুনতে পেয়েছি গার্মেন্ট চালু হবে। ভোররাতে বরিশাল গৌরনদী থেকে রওয়ানা হয়েছি। এলাকার কয়েকজন একসঙ্গে পিকআপে করে বাংলাবাজার ফেরিঘাটে আসি। সকালে ভিড় ঠেলে ফেরিতে উঠি। মানুষের চাপ বেশি থাকায় ঠেলাঠেলাতে আমার মোবাইল হারিয়ে ফেলি। মোবাইল খুঁজে দেখার মতো অবস্থা ফেরিতে ছিল না। বেশি মানুষের চাপ ও তীব্র গরমে আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি। পরে সঙ্গে থাকা লোকজন আমাকে ধরে ফেরি থেকে নামায়। ফেরি থেকে নেমে গাড়ি না পাওয়ায় বিপদে পড়েছি। পরে ছোট ছোট গাড়িতে ভেঙে ভেঙে এসেছি। শুধু চাকরি বাঁচাতে এমন ঝুঁকি নিয়েছি।

গতকাল সকাল থেকে ঢাকা-ময়মনসিংহ ও ঢাকা-টাঙ্গাইল ও ঢাকা-কুমিল্লা মহাসড়কে ছিল ঢাকায় ফেরা মানুষের ঢল। কেউ হেঁটে কেউবা বিভিন্ন পরিবহনে, যে-যেভাবে পারছেন ঢাকায় আসছেন। ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার বড়পুটিয়ার গ্রামের বাসিন্দা শিপন। মিরপুরে একটি সুতার কারখানায় চাকরি করেন। গতকাল ফজরের নামাজ শেষ করে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। তিনি জানান, যাত্রীবাহী বাস নেই। কখনো ভ্যানে, কখনো রিকশায় আবার কখনো হেঁটে তারপর ঢাকায় পৌঁছলাম। আজকের মতো এতো মানুষ সড়কে আর কখনো দেখা যায়নি। মানুষের কষ্টের সীমা ছিল না। অনেকের সঙ্গে শিশু বাচ্চাও ছিল। এই লকডাউনে পথে পথে নানা ভোগান্তির স্বীকার হতে হবে জেনেও চাকরি বাঁচাতে মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিচ্ছে।

পাটুরিয়া ঘাট থেকে গাবতলী পর্যন্ত এক হাজার টাকায় আসছেন ফরিদপুরের সুমাইয়া। তিনি বলেন, ব্যাটারি চালিত রিকশায় করে দৌলদিয়া ঘাটে আসছি। ঘাটে মানুষের ভিড় দেখে ঢাকায় ফেরা নিয়ে ভয় কাজ করছিল। পুরো পথ দাঁড়িয়ে ছিলাম, একটুও বসার সুযোগ পাইনি। পাটুরিয়া ঘাট থেকে ছোট ট্রাকে করে কন্টাকে ঢাকায় আসি। ড্রাইভার বলছেন যেখানেই নেমে যান না কেন? জনপ্রতি এক হাজার টাকা দিতে হবে। কোনো কিছু না পেয়ে বাধ্য হয়েই বাড়তি ভাড়ায় আসা। বোরবার কাজে যোগ দিতে না পারলে যদি কাজ চলে যায়। এদিকে একাধিক গার্মেন্টকর্মীরা জানিয়েছেন,  যে করেই হোক ১লা আগস্ট কাজে যোগ দিতে তাদেরকে ক্ষুদে বার্তা পাঠানো হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ে কর্মস্থলে উপস্থিত থাকতে না পারলে চাকরি চলে যাবে।

তবে বিজিএমইএ’র তরফে বলা হয়েছে, শুধুমাত্র কারখানার আশেপাশে থাকা শ্রমিকদের দিয়েই কাজ শুরু হবে। যারা ঢাকার বাইরে আছেন তাদের আসা বাধ্যতামূলক নয়। না আসতে পারলে কারো চাকরি যাবে না।
শিবচর (মাদারীপুর) প্রতিনিধি জানান, লকডাউনের নবম দিনে গতকাল শিবচরের বাংলাবাজার ঘাটে রয়েছে যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়। ভোর থেকেই রাজধানীগামী যাত্রীদের সংখ্যা বেড়েই চলেছে নৌরুটে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের ভিড় বাড়তে থাকে। যাত্রীদের চাপে ফেরিতে যানবাহন উঠতে ব্যর্থ হয়েছে। আর ঢাকায় ফেরার এই প্রতিযোগিতার মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ঢাকাগামী হাজার হাজার যাত্রীর ফেরি পারাপারে নেই কোনো স্বাস্থ্যবিধি। মাস্ক পরতেও খুব একটা দেখা যায়নি যাত্রীদের। ফেরিতে গাদাগাদি করে পার হচ্ছে যাত্রীরা। যাত্রীদের বেশির ভাগই গার্মেন্টসহ বিভিন্ন শিল্প কারখানার শ্রমিক। বাংলাবাজার ঘাট সূত্রে জানা গেছে, লকডাউন সত্ত্বেও ঈদের পরদিন থেকেই নৌরুট দিয়ে যাত্রীদের যাতায়াত ছিল চোখে পড়ার মতো। লকডাউনে ফেরিতে যাত্রী পারাপার বন্ধের নির্দেশনা থাকলেও গত ২৩শে জুলাই থেকে শুরু হওয়া কঠোর লকডাউনে শিবচরের বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুটের চিত্র ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। শুধু যাত্রীবাহী বাস পারাপার বন্ধ ছিল। এছাড়া নৌরুটে সাধারণ যাত্রীদের পারাপার ছিল নির্বিঘ্ন। তবে গতকাল যাত্রীদের ভিড় অন্যান্য দিনের তুলনায় বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে।  

স্টাফ রিপোর্টার, মানিকগঞ্জ থেকে জানান, রাজধানী ঢাকায় ফিরতে একদিন আগেই গতকাল শনিবার সকাল থেকে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কর্মজীবী নারী-পুরুষের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে পাটুরিয়া ও দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে। দৌলতদিয়া প্রান্ত থেকে প্রতিটি ফেরিতে গাদাগাদি করে মানুষ আসছে পাটুরিয়া ঘাটে। সেখান থেকে বিভিন্ন ব্যবস্থায় তারা যাচ্ছেন রাজধানীতে।

গতকাল শনিবার সকাল ১০টার দিকে পাটুরিয়া ৩ নম্বর পন্টুনে রো রো ফেরি ও ভাষা শহীদ বরকত নামের ফেরি যোগে তিনটি পণ্যবোঝাই ট্রাকসহ কয়েক শতাধিক যাত্রী নিয়ে দৌলতদিয়া ফেরিঘাট থেকে আসে। সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলাচল করার কথা থাকলেও নেই কোনো স্বাস্থ্যবিধির বালাই। কর্মস্থলে ফেরার জন্য যে-যেভাবে পারছেন সে অনুযায়ী যাওয়ার চেষ্টা করছেন, একশ’ টাকার ভাড়ার বিপরীতে অতিরিক্ত আরও গুনতে হচ্ছে হাজার টাকা। আর যাদের টাকা কম তারা পায়ে হেঁটেই রওনা দিচ্ছেন চাকরি বাঁচাতে কর্মস্থলে। ভেঙে ভেঙে তারা যাচ্ছেন রাজধানীতে।

পাটুরিয়া ঘাটে প্রাইভেটকারের চালক সুজন মিয়া বলেন, ‘ঘাটে তেমন গাড়ি নেই। সে জন্য এখন প্রচুর চাহিদা আর এ কারণেই ভাড়াটা একটু বেশি নিচ্ছি, ভাড়া বেশি না নিলে তো লোকসান হয়ে যাবে। তার কারণ রাস্তায় বিভিন্ন জায়গা ম্যানেজ করে আমাদের চলতে হয়। পাটুরিয়া থেকে গাবতলী কত টাকা ভাড়া নিচ্ছেন- এমন প্রশ্ন করলে তিনি আরও বলেন, যেখানেই নামুক না কেন প্রতি যাত্রীর জন্য ভাড়া এক হাজার টাকা।

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি জানান: গতকাল শনিবার সকাল থেকেই ঝিনাইদহ শহরের কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে ঢাকাগামী যাত্রীদের চরম আকারে ভিড় দেখা গেছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েই চলেছে মানুষের ভিড়। বিভিন্ন স্থান থেকে ইজিবাইক, ভ্যান-রিকশাসহ বিভিন্ন যানবাহন যোগে টার্মিনালে এসে হাজির হচ্ছেন তারা। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন কর্মজীবী মানুষগুলো। কাজে যোগ দিতে ইজিবাইক, মাহেন্দ্রাসহ ছোট ছোট যানে চরম ভোগান্তি সহ্য করে ঢাকায় ফিরতে হচ্ছে তাদের। এক জেলা থেকে অন্য জেলায় গিয়ে সেখান থেকে আবার নতুন বাহনে ছুটছেন তারা।

শিবগঞ্জ (বগুড়া) প্রতিনিধি জানান: গতকাল শনিবার সকাল থেকে উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার বগুড়ার মহাসড়ক সংলগ্ন ছোটবড় বন্দরগুলোতে ঢাকামুখী যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। লকডাউনে গণপরিবহন বন্ধ থাকার ঘোষণায় যাত্রীবাহী বাস বন্ধ থাকলেও প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে রাজপথ দাপিয়ে যাত্রী পরিবহন করছে ট্রাক ও প্রাইভেটকার। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার বগুড়া-রংপুর মহাসড়কের মোকামতলা বন্দরের পাশে ঢাকাগামী গার্মেন্টকর্মীদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা যায়। গাইবান্ধা, রংপুর, দিনাজপুর, জয়পুরহাটসহ উত্তরের জেলাগুলো থেকে ছেড়ে আসা ট্রাকচালকদের সিগন্যাল দিয়ে তড়িঘড়ি উঠে পড়ছেন তারা। ঠাসাঠাসি করে দাঁড়িয়ে কর্মস্থলের দিকে যেতে দেখা গেছে তাদের।

ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি জানান: ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে কর্মস্থলে ফেরা মানুষেদর উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। ভোরের দিকে অনেক বাসও ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেছে। ভূঁঞাপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় দেখা গেছে, যাত্রীবাহী বাসে গাজীপুরের চন্দ্রা পর্যন্ত ভাড়া নেয়া হচ্ছে জনপ্রতি ৪০০-৫০০ টাকা। অন্যদিকে সিএনজি চালিত অটোরিকশায় ভূঁঞাপুর হতে চন্দ্রা পর্যন্ত ভাড়া নেয়া হচ্ছে জনপ্রতি ৬০০ টাকা করে। এছাড়া ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে ঢাকামুখী মানুষের ঢল নেমেছে। ফলে কর্মস্থলে ফেরা এসব শ্রমজীবী মানুষজন খোলা ট্রাক, পিকআপ, প্রাইভেটকার, সিএনজি ও মোটরসাইকেল যোগে গাদাগাদি করে গন্তব্যে যাচ্ছেন। এতে স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে।

স্টাফ রিপোর্টার (রংপুর) থেকে জানান, রোববার সকাল ৮টায় খুলবে কারখানা। চালু হবে কারখানার সকল কার্যক্রম। তাই সময়মতো উপস্থিত থাকবে হবে কর্মস্থলে। মোবাইল ফোনেকর্মীদের এমনই ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়েছে সিরক অ্যাপারেলস নামক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। তাই কুড়িগ্রাম থেকে হন্যে হয়ে রংপুর নগরীর মডার্ণ মোড়ে গতকাল শনিবার সকাল ৯টায় এসেছেন আমিনুল ইসলাম (২৫)। তিনি বলেন, রোববার সকালে কারখানায় যেতেই হবে। ঢাকায় যেতে না পারলে চাকরি থাকবে না। করোনার সময় এমনিতেই অনেক মানুষ চাকরিহারা হয়েছেন। অনেকে ঠিকমতো বেতন পান না। এমন অবস্থায় হঠাৎ করে সরকারের এ সিদ্ধান্তে আমরা বিপাকে পড়ে গেছি। সরকার দূরপাল্লার যানবাহন বন্ধ রেখেছে। আবার রপ্তানিমুখী কলকারখানা খুলে দিয়েছে। এজন্য আমরা মডার্ণ মোড়ে এসে ভিড় করেছি গাড়ির অপেক্ষায়।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status