শেষের পাতা

কারখানা খুলছে আজ কাজে যোগ না দিলেও চাকরি হারাবেন না শ্রমিকরা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার

১ আগস্ট ২০২১, রবিবার, ৮:১৩ অপরাহ্ন

মালিকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ১লা আগস্ট থেকে রপ্তানিমুখী শিল্প-কারখানা খুলে দেয়ার ঘোষণা দিয়ে শুক্রবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। গার্মেন্ট ও কলকারাখানা খুলে দেয়ার সরকারি ঘোষণার পরপরই গতকাল শনিবার সকাল থেকে কঠোর লকডাউন উপেক্ষা করে কর্মস্থলে ফেরার জন্য হন্যে হয়ে ঢাকায় ছুটছেন শ্রমিকরা। যাত্রীরা গাগাগাদি করেই বিভিন্ন ফেরি পার হচ্ছেন। স্বাস্থ্যবিধি বা সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার বালাই ছিল না। অনেকে মহাসড়ক দিয়ে হেঁটেই ঢাকায় আসছেন। লকডাউনে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় শহরে ফিরতে বিড়ম্বনার মধ্যে পড়েছেন তারা। এ খবরের পরিপ্রেক্ষিতে শ্রমিকদের শহরে না ফেরার অনুরোধ জানিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন ও বিজিএমইএ। বলেছেন, পোশাক কারখানাসহ রপ্তানিমুখী শিল্পকারখানা আজ রোববার থেকে খুললেও আপাতত কেউ কাজে যোগ না দিলে চাকরি নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। তারা চাকরি হারাবেন না।
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিষয়টি বিজিএমইএ’র পক্ষ থেকে পরিষ্কার করা হয়েছে। যারা ঢাকা অবস্থান করছেন, বিশেষ করে যারা ঈদে বাড়ি যায়নি এবং যারা ২২শে জুলাইয়ের মধ্যে ফিরে এসেছেন তাদেরকে নিয়েই তারা (মালিকরা) কারখানা পরিচালনা করবেন। বাইরে থেকে তারা কোনো কর্মীকে নিয়ে আসবেন না। যারা এই পাঁচদিন কাজ করবেন না, যারা বাইরে আছেন- তাদের চাকরিতে কোনো সমস্যা হবে না। তারা ৫ তারিখের পর ধাপে ধাপে আসবেন।
প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, তাদের (বিজিএমইএ নেতা) সঙ্গে যখন কারখানা খোলা নিয়ে আমাদের আলোচনা হয়, তখনো বলা হয়েছিল- যারা শুধু ঢাকাতে বা কারখানার আশেপাশে অবস্থান করছেন, তারাই যোগ দেবেন। সেটার ভিত্তিতেই এই সিদ্ধান্ত (কারখানা খোলা) নেয়া হয়েছে।
অনেকে হয়তো আতঙ্কিত হয়ে ফিরছেন, চাকরি থাকবে কি-না! আমরা সবাইকে বলছি, কারো আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। বিজিএমইএ সভাপতি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তারা দেখবেন, সরকারও বিষয়টি দেখবে। কষ্ট করে করোনার ঝুঁকি নিয়ে তাদের আসার কোনো প্রয়োজন নেই।
এদিকে ঈদে গ্রামে যাওয়া শ্রমিকদের এখনই কর্মস্থলে ফিরে না আসার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে পোশাক উৎপাদন ও রপ্তানিকারক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিজিএমইএ। সংগঠনের সভাপতি ফারুক হাসান গতকাল শনিবার দেয়া এক বিবৃতিতে শ্রমিকদের প্রতি এ অনুরোধ জানিয়েছেন। বিবৃতিতে কারখানা পরিচালনার ক্ষেত্রে সরকার কর্তৃক ঘোষিত এবং বিজিএমইএ কর্তৃক প্রদত্ত সকল স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য সকল সদস্যকে আহ্বান জানান।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, লকডাউন পুরোপুরি প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত গ্রামে অবস্থানরত কোনো শ্রমিক-কর্মচারী কারখানায় কাজে যোগদান করতে না পারলে তার ওপর কোনো প্রকার ব্যবস্থা নেয়া হবে না। এ সময়ে কারখানার আশেপাশে অবস্থানরত শ্রমিকদের নিয়ে উৎপাদন কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য সকল সদস্যকে আহ্বান করছি।
ফারুক হাসান আরও বলেন, পোশাক শিল্পে কর্মরত সম্মুখসারির যোদ্ধাদের জন্য করোনা টিকা প্রদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে। শ্রমিকদের নিরাপত্তায় করোনার টিকার ব্যাপারে সহায়তা চেয়ে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ক্রেতা প্রতিষ্ঠানদের নিকট আমরা ইতিমধ্যে আহ্বান করেছি।
উল্লেখ্য, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে গত ২৩শে জুলাই সকাল ৬টা থেকে শুরু হয়েছে কঠোর বিধিনিষেধ। এই বিধিনিষেধ চলবে আগামী ৫ই আগস্ট মধ্যরাত পর্যন্ত। বিধিনিষেধে সব ধরনের গণপরিবহন, সরকারি-বেসরকারি অফিস বন্ধ আছে। খাদ্যপণ্য উৎপাদন-প্রক্রিয়াকরণ, চামড়া পরিবহন-সংরক্ষণ ও ওষুধ খাত ছাড়া বন্ধ রয়েছে সবধরনের শিল্প-কারখানা। মালিকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ১লা আগস্ট থেকে রপ্তানিমুখী শিল্প-কারখানা খুলে দেয়ার ঘোষণা দিয়ে শুক্রবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status