বাংলারজমিন
নিষ্ঠুর প্রতারণা ঘাটাইলে নিন্দার ঝড়
ঘাটাইল (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
৩১ জুলাই ২০২১, শনিবার, ৮:০৩ অপরাহ্ন
টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার সন্ধানপুর ইউনিয়নের আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দাদের সঙ্গে ঈদুল আজহার গোশত বণ্টন নিয়ে প্রতারণা করেছেন সমাজপতিরা। এক টুকরা গোশত দেয়া তো দূরের কথা সমাজ থেকে তাদের বিচ্ছিন্ন করে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আসাদ মিয়া, আব্দুল খালেক, খুকী বেগম, মর্জিনা বেগমসহ আশ্রয়ণ প্রকল্পে আশ্রয় নেয়া প্রায় শতাধিক পরিবার এবারের ঈদের সামাজিক বণ্টনের গোশত থেকে বঞ্চিত হয়েছে। সমাজপতিরা তাদের নাম কেটে দিয়েছেন বলে জানা গেছে। সমাজপতিদের এমন নিষ্ঠুর প্রতারণার কারণে গোটা উপজেলাজুড়ে নিন্দার ঝড় বইছে। সরজমিন আশ্রয়ণ প্রকল্পে গেলে কথা হয় ভুক্তভোগীদের সঙ্গে। আসাদ মিয়া নামে একজন বলেন, মাংস কিনে খাওয়ার সামর্থ্য তার নেই। তাই স্ত্রী-সন্তান নিয়ে চেয়ে থাকেন কোরবানির ঈদের দিকে। মাংসের সামাজিক বণ্টনের দিকে। সারা বছর এক টুকরো মাংস খেতে না পারা ছেলেমেয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে আগেই চলে যান। জানতে পারেন, এলাকা থেকে চলে যাওয়ায় তার নাম কেটে দিয়েছেন সমাজপতিরা। বাবা হয়ে সন্তানদের মুখে ঈদের মাংস তুলে দিতে পারবেন না, এমন দুঃখে সে হতভাগ হয়ে পড়ে। শুধু আসাদ মিয়া নয় ঘাটাইল উপজেলায় প্রধানমন্ত্রীর উপহার আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দারা অনেকেই আসাদের মতো সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন। এবার ঈদে তাদের ভাগ্য জোটেনি কোরবানির মাংসসহ কোনো সাহায্য। বেগমের স্বামী কত বছর আগে মারা গেছেন, তা ঠিক করে বলতে পারেন না। এক মেয়ে ছিল, বিয়ে দিয়েছেন। একার সংসার, চলে ভিক্ষা করে। বয়সের ভারে সে অসুস্থ। তিনি ঘর পেয়েছেন দিগড় ইউনিয়নের কদমতলী এলাকায়। ঈদের আগে কোনো সাহায্য সহযোগিতা পেয়েছেন কিনা- এমন প্রশ্নে তিনি জানান, ‘ইউএনও স্যার কইছাল দিবু, তার আগেই হে চইলা গেছে (পদোন্নতিজনিত বদলির কারণে)। ঈদের দিন বিকাল পর্যন্ত ঘরের কোণে বসেছিলেন জহুরা, সাহায্য হাতে নিয়ে কারও ডাকের আশায়। পরে সন্ধ্যায় মেয়ের জামাই এসে তার বাড়ি নিয়ে যান।
জহুরার ঘরের পাশেই ঘর পেয়েছেন নহর আলী। প্যারালাইসিসে আক্রান্ত হয়ে তিন মাস ধরে ঘরে পড়ে আছেন। বৃদ্ধ স্ত্রী মানুষের বাড়িতে কাজ করে স্বামীর মুখে দু্থবেলা দু্থমুঠো খাবার তুলে দেন। নহর বলেন, ‘আমাগো এনুকার কেউ কোনো কিছু পায় নাই।’ তবে ঈদের মাংস নাকি খেয়েছেন, তার এলাকা থেকে কে যেন পাঠিয়েছিলেন। বিভিন্ন গ্রাম থেকে আসা নতুন একটি স্থানে এসে তাদের মধ্যে এখনো গড়ে ওঠেনি সমাজব্যবস্থা। আবার আগের স্থানের সমাজ থেকেও তারা বাদ পড়েছেন। কেউই তাদের খোঁজ নেননি। ঘাটাইলের ভারপ্রাপ্ত ইউএনও ফারজানা ইয়াসমিন বলেন, আশ্রয়ণের বাসিন্দারা আমাদের একটা অংশ। কিন্তু সরকারিভাবে তাদের জন্য এই ঈদে বিশেষ কোনো বরাদ্দ আসেনি। বিষয়টি জানতে পারলাম, পরে যেন এমনটা না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখা হবে।
জহুরার ঘরের পাশেই ঘর পেয়েছেন নহর আলী। প্যারালাইসিসে আক্রান্ত হয়ে তিন মাস ধরে ঘরে পড়ে আছেন। বৃদ্ধ স্ত্রী মানুষের বাড়িতে কাজ করে স্বামীর মুখে দু্থবেলা দু্থমুঠো খাবার তুলে দেন। নহর বলেন, ‘আমাগো এনুকার কেউ কোনো কিছু পায় নাই।’ তবে ঈদের মাংস নাকি খেয়েছেন, তার এলাকা থেকে কে যেন পাঠিয়েছিলেন। বিভিন্ন গ্রাম থেকে আসা নতুন একটি স্থানে এসে তাদের মধ্যে এখনো গড়ে ওঠেনি সমাজব্যবস্থা। আবার আগের স্থানের সমাজ থেকেও তারা বাদ পড়েছেন। কেউই তাদের খোঁজ নেননি। ঘাটাইলের ভারপ্রাপ্ত ইউএনও ফারজানা ইয়াসমিন বলেন, আশ্রয়ণের বাসিন্দারা আমাদের একটা অংশ। কিন্তু সরকারিভাবে তাদের জন্য এই ঈদে বিশেষ কোনো বরাদ্দ আসেনি। বিষয়টি জানতে পারলাম, পরে যেন এমনটা না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখা হবে।