বাংলারজমিন
মানবজমিন-এ সংবাদ প্রকাশের পর পাল্টে যাচ্ছে সরাইলের দাসপাড়া
সরাইল ((ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
৩১ জুলাই ২০২১, শনিবার, ৬:৫৫ অপরাহ্ন
দৈনিক মানবজমিন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর এখন পাল্টে যাচ্ছে সরাইলের দাসপাড়ার চালচিত্র। গত ২৮শে জুলাই দৈনিক মানবজমিন পত্রিকায় ‘প্রাণ গেল উষা রানীর, লাল পতাকায় সতর্কতা করোনা কি জানে না ওরা’- শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর পাল্টে যাচ্ছে দাসপাড়ার চিত্র। কাজে টানছেন জেলেদের। বন্ধ হয়ে গেছে প্রতিবেশী ও পাশের গ্রামের লোকজনের ধিক্কার ও তিরস্কার। একে-অপরের প্রতি দেখাচ্ছেন সহানুভূতি। বুঝতে পেরেছেন টিকার উপকারিতা। দত্তপাড়া সংলগ্ন ‘দাসপাড়ায় উষা রানীর মৃত্যু লাল পতাকা’- গ্রামবাসীর অসচেতনতার বিষয়ে দৈনিক মানবজমিন পত্রিকায় একটি সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এর পর পরই পাল্টাতে থাকে দাসপাড়া গ্রামের চালচিত্র। তারা আলোচনায় বলেন, লাল পতাকার গ্রামের লোকজনকে আর তিরস্কার বা ধিক্কার নয়। আসুন সকলে সহযোগিতা করি। করোনা কি? না জানা লোকগুলো করোনার টিকা নিতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেন। তারা বলছেন, আগে বুঝিনি। এখন বুঝলাম এটা কঠিন রোগ। মহামারি আকারে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। মানুষ মরছে। ঊষা রানী মারা গেছেন। এখন আবার মারা গেছে ফিরোজ ভূঁইয়া। আমরা যেকোনো সময় যে কেউ করোনায় আক্রান্ত হতে পারি। মারাও যেতে পারি। বাঁচতে হলে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। টিকাও নিতে হবে। করোনা নিয়ে একে-অপরের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। করোনার ভয়ে দাসপাড়ার জেলেদের কাজে নেয়া হতো না। অর্ধাহার-অনাহারে তাদের চোখে-মুখে ছিল বিষাদের ছাপ। তাদের এখন কাজে নেয়া হচ্ছে। আহার জুটছে। পরিবারগুলো মুখে হাঁসি ফুটে উঠেছে। দাসপাড়ার জেলে স্বদেশ দাস (৪৮), প্রদীপ দাস (৩৫), অর্জুন দাস (৬৫) ও বিনেন্দ্র দাস (৪৫) বলেন, পত্রিকার খবরে আমাদের অনেক উপকার হয়েছে। গত বুধবার থেকেই আমাদেরকে জেলের কাজে নিচ্ছেন তারা। টিকাটা কি? কোথায় কীভাবে দেয়? তা আমাদের জানা ছিল না। স্বাস্থ্যকর্মীরাও আমাদের এখানে খুব একটা আসেন না। এখন আমরা জেনেছি। তাড়াতাড়ি টিকা নেয়ার চেষ্টা করছি। শুনছি এখন নিবন্ধন করা লাগবে না। জাতীয় পরিচয়পত্র ও বয়স ১৮ বছর হলেই দেয়া যাবে টিকা। ইউপি সদস্য অরবিন্দ দত্ত বলেন, অনেক বলেছি। কেউ টিকা নিতে চায় না। অজপাড়াগাঁয়ে করোনা আক্রান্ত হবে। মানুষ মারা যাবে। এটা কাউকে বিশ্বাস করাতে পারিনি। বিধি-নিষেধও মানাতে পারিনি কাউকে। চায়ের দোকানে খোলা জায়গায় মাস্ক ছাড়া বসে ইচ্ছামতো আড্ডা দিয়েছে। কিছু বললে রাগ করেছেন। দাসপাড়ার ঊষা রানীর মৃত্যুর সংবাদ পত্রিকায় প্রকাশের পর লোকজন বিশ্বাস করছেন। আগের চিত্রটা এখন পাল্টে গেছে।