বাংলারজমিন

হাটহাজারীতে উধাও ফিল্ড হাসপাতাল আইসোলেশন সেন্টার

হাটহাজারী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

৩১ জুলাই ২০২১, শনিবার, ৬:৩৫ অপরাহ্ন

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ যখন আগের চেয়ে দ্বিগুণ ঠিক এমন সময়ে চট্টগ্রামের হাটহাজারী থেকে উধাও শত বেডের একটি ফিল্ড হাসপাতাল ও পাঁচটি করোনা আইসোলেশন সেন্টার। হাটহাজারী উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে গত বছর ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠেছিল ফিল্ড হাসপাতাল ও আইসোলেশন সেন্টারগুলো।  সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হঠাৎ আলোচনায়ও এসেছিল এসব কর্মযজ্ঞ। কিন্তু এবার করোনায় আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দিতে একটি বেড কিংবা আইসিইউয়ের জন্য মানুষকে হন্যে হয়ে ঘুরতে হচ্ছে হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে। সরজমিন জানা গেছে, উপজেলার ধলই ইউনিয়নে গত বছর দু’টি আইসোলেশন সেন্টার খোলা হয়েছিল। ধলই ইউনিয়নের কাটিরহাট মহিলা ডিগ্রি কলেজে করোনা আইসোলেশন সেন্টার পরিচালনাকারী সদস্য হেলাল মাসুদ মজুমদারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এলাকাবাসীর যৌথ উদ্যোগে এই আইসোলেশন সেন্টারে প্রায় ১০ লাখ টাকার অধিক খরচ করা হয়েছে। ওই সময় এখানে ৬৫ জন রোগীকে চিকিৎসা সেবা দিয়ে সুস্থ করা হয়েছিল। বর্তমানে রোগী না থাকায় এটি বন্ধ রয়েছে।
ধলই ইউনিয়নের আরেকটি আইসোলেশন সেন্টার পরিচালনাকারী ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আবুল মুনসুর বলেন, আমাদের এটা মূলত আইসোলেশন সেন্টার ছিল না। এখানে চিকিৎসাসেবা দেয়া হতো। আগামীকাল আমরা আরেকটি বৈঠকের মাধ্যমে কী করা যায় তা আলোচনা করবো। নাঙ্গলমোড়া ইউনিয়নে মাদ্রাসা শ্রেণিকক্ষে আইসোলেশন সেন্টারের বিষয়ে জানতে ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক আলতাফ হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘নাঙ্গলমোড়া সচেতন নাগরিক’ এর ব্যানারে আইসোলেশন সেন্টারটি চালানো হতো। আমি নিজেও এই সংগঠনের সদস্য। আর্থিক লোকসানের কারণে বর্তমানে এটি বন্ধ রয়েছে।
গড়দুয়াড়া ইউনিয়ন, গড়দুয়াড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে আইসোলেশন সেন্টারের উদ্যোক্তা আওয়ামী লীগ নেতা রিয়াজ মোর্শেদ বলেন, গত বছর আমরা করোনা রোগীদের সেবা দিয়েছিলাম। ওইবার ব্যাপক হারে সাড়া পেয়েছিলাম। রোগী না থাকায় এটি বন্ধ রয়েছে।
হাটহাজারী পৌর সদরের ঢাকঢোল পিটিয়ে গত বছর একই সময়ে ‘ফিল্ড হাসপাতাল’ নামক একটি আইসোলেশন সেন্টার মেহেদী পার্ক কমিউনিটি সেন্টারে খোলা হয়েছিল। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হঠাৎ আলোচনায় এসেছিল এই ফিল্ড হাসপাতালের কর্মযজ্ঞ। এই বিশাল কর্মযজ্ঞ শেষে দেখা যায়, এই ফিল্ড হাসপাতালে কার্যত রোগীর সংখ্যা শূন্য। চক্ষুর আড়ালে এটিও বন্ধ হয়ে যায়। তবে হাসপাতালের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবরাহ অব্যাহত রয়েছে। এই ফিল্ড হাসপাতাল পরিচালনাকারী সদস্য সাহেদুল আজম সাহেদ বলেন, এখানে লেনদেনের হিসাব আমার কাছে নাই। আইসিইউ খুঁজতে খুঁজতে যখন এম্বুলেন্সে রোগীর মৃত্যু ঘটছে এমন একটি সময়ে আমরা রোগীদের এম্বুলেন্স সেবা দিয়েছি। জরুরি পরিস্থিতিতে সেবা দেয়ার জন্য তৈরি ফিল্ড হাসপাতাল আবারো চালু করা যেতে পারে।
হাটহাজারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাক্তার আবু সৈয়দ মোহাম্মদ ইমতিয়াজ বলেন, এই মহামারি করোনাকালীন সময়ে হাটহাজারী উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে করোনা আইসোলেশন সেন্টার গড়ে উঠেছিল। কী কারণে এসব বন্ধ হয়ে যায় আমার জানা নেই! দীর্ঘদিন অব্যবহৃত থাকার ফলে ঐখানে থাকা চিকিৎসা সরঞ্জামগুলো নষ্ট হয়ে যেতে পারে। পরে এগুলো আর কাজে আসবে না। আইসোলেশন সেন্টারগুলো আমাদের সঙ্গে সমন্বয় করে গড়ে ওঠেনি। তবে সেখানে শুধুমাত্র অক্সিজেন, সিলিন্ডার সেবা দেয়া হতো। তেমন কোনো উন্নত চিকিৎসাসেবা ও অন্য সেবাগুলো রোগীরা সেখানে পেতো না। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনা ওয়ার্ডে সার্বক্ষণিক দু’জন ডাক্তার, দু’জন নার্স চিকিৎসাসেবা দিয়ে আসছেন। ওয়ার্ড পরিষ্কার রাখার জন্য সার্বক্ষণিক দুইজন সুইপার নিয়োজিত আছেন। সেবা পেয়ে রোগীরাও সন্তুষ্ট।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status