শেষের পাতা

বগুড়ায় করোনায় মৃত ও আক্রান্তের বেশির ভাগই গ্রামের

প্রতীক ওমর, বগুড়া থেকে

৩০ জুলাই ২০২১, শুক্রবার, ৯:৪২ অপরাহ্ন

অসাবধানতা, স্বাস্থ্যবিধি না মানায় বগুড়া শহরের তুলনায় গ্রামের মানুষ করোনায় বেশি আক্রান্ত ও মৃত্যুবরণ করছে। করোনা ডেডিকেটেড বগুড়ার মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, রোগীতে কানায় কানায় পূর্ণ। এখানে রোগী ভর্তির ব্যবস্থা আছে ২৫০ জনের। সেখানে ২৭শে জুলাই পর্যন্ত রোগী ভর্তি ছিল ২০৭ জন। এছাড়াও প্রতিদিন নতুন রোগী ভর্তি হচ্ছে। এসব রোগীর বেশিরভাগই প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে আসা। গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার বাটিগ্রামের মিজানুর রহমান জানান, তার মায়ের জ্বর-সর্দি দেখা দিলে ১৫ দিন আগে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। কোভিড পরীক্ষা করার পর পজেটিভ রিপোর্ট আসে। পরে ক্রমান্বয়ে শরীর খারাপ হতে থাকে।
নওগাঁ জেলার বদলগাছী উপজেলার তেঁতুলিয়া গ্রামের জোসনা বেগম ১৯ দিন আগে আক্রান্ত হয়ে বগুড়ার সরকারি মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তার মেয়ে শাম্মী আক্তার জানান, গ্রামের মানুষেরা আক্রান্ত হলেও হাসপাতালে আসতে চায় না। পরীক্ষাও করাতে চায় না। তার মা-ও অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে আসতে চায়নি। জোর করে হাসপাতালে আনতে হয়েছে। গাইবান্ধার ফুলছড়ির চরের গজারিয়া গ্রামের বাসিন্দা আমিনুল ইসলাম টুকুও এই হাসপাতালের বেডে কাতরাচ্ছেন। তার অক্সিজেন মাত্রা আশির নিচে আপডাউন করছে। তিনি বলেন, তার অবস্থা খুব খারাপ হলে তিনি হাসপাতালে ভর্তির জন্য আসেন। এদিকে কোভিড ডেডিকেটেড মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের মৃত রোগীর তালিকা পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে মৃতের প্রায় ৭০ শতাংশ গ্রামের মানুষ। চলতি জুলাই মাসের ১০ তারিখ এবং ২৫ তারিখের মৃত ১৬ জনের মধ্যে দেখা যায় ১২ জন প্রত্যন্ত গ্রামের। বগুড়ার আরও দুটি কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালের চিত্র একই। শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ এবং বেসরকারি টিএমএসএস মেডিকেল হাসপাতালের ভর্তি রোগীর বেশিরভাগ গ্রাম থেকে আসা।  
মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. শফিক আমিন কাজল মানবজমিনকে বলেন, বর্তমানে প্রায় ৬০ শতাংশ প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে আসা। মৃত্যুর পরিসংখ্যানে এই হার আরো বেশি। গ্রামের মানুষের মৃত্যুর হার বেশি, কারণ হিসেবে তিনি বলেন, গ্রামের মানুষ এখনো সচেতন নন। তারা পরীক্ষা এবং হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে সহজে আসতে চায়না। আক্রান্ত হয়ে যখন তীব্র শ্বাসকষ্ট শুরু হয় তখন বাধ্য হয়ে তারা হাসপাতালে আসছে। ফলে চিকিৎসা শুরুর আগেই অনেক রোগী মারা যাচ্ছে।
এদিকে বগুড়ার ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মোস্তাফিজুর রহমান তুহিন মানবজমিনকে জানান, গ্রামের মানুষ পরীক্ষার পর পজেটিভ হলে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে, এমন ভয় থেকেই পরীক্ষা বিমুখ হচ্ছে। ফলে অনেক মানুষ আক্রান্ত হয়ে সবার সঙ্গেই মিশছে এবং সংক্রমণ বৃদ্ধি করছে। এই মাত্রা এখন এতো বেশি হচ্ছে যার ফলে হাসপাতালগুলোতে গ্রামের রোগীতেই ঠাসা।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status