বাংলারজমিন

টানা বৃষ্টিতে বাগেরহাটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

বাগেরহাট প্রতিনিধি

৩০ জুলাই ২০২১, শুক্রবার, ৯:১৮ অপরাহ্ন

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে ৩ দিন ধরে অবিরাম বৃষ্টি ও জোয়ারের পানি বেড়ে উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ৫০টি ইউনিয়নের প্রায় ৬০ হাজার পরিবার। ভেসে গেছে ৯ হাজার চিংড়ি খামার ও সাড়ে ৭ হাজার পুকুরের মাছসহ ২৫০টি খামারের শিলা কাঁকড়া। তলিয়ে গেছে আমনের বীজতলা ও বর্ষাকালীন সবজিক্ষেত। চরম দুর্ভোগে পড়া শরণখোলা, মোংলা,  মোরেলগঞ্জ, রামপাল উপজেলার নিম্নআয়ের খেটে খাওয়া হাজারো মানুষ ১৬টি সাইক্লোন শেল্টারে আশ্রয় নিয়েছেন। এদিকে মোরেলগঞ্জের পানগুছি, শরণখোলার বলেশ্বর, মোংলার পশুর, বাগেরহাটের ভৈরব, দড়াটানাসহ সব নদীর পানি স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ২ থেকে ৩ ফুট বেড়েছে। শরণখোলা ও মোংলা উপজেলা প্রশাসন থেকে বলা হয়েছে, এই ২টি উপজেলায় বুধবার রাত থেকে পানিবন্দি হয়ে পড়া দুর্গতরা সাইক্লোন শেল্টারে আশ্রয় নিতে শুরু করেছেন। শরণখোলা ১৩টি ও মোংলায় ৩টি সাইক্লোন শেল্টারে নিম্নআয়ের খেটে খাওয়া হাজারো মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে পানিবন্দি ও সাইক্লোন শেল্টারে আশ্রয় নেয়া দুর্গতদের রান্না করা ও শুকনা খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সাইক্লোন শেল্টারে আসতে ইচ্ছুক পানিবন্দিদের সেখানে নিয়ে আসতে রেড ক্রিসেন্টসহ জনপ্রতিনিধিরা কাজ করছেন। অতিবৃষ্টিতে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। মানুষ ঘর থেকে বের হতে পারছেন না। গতকাল বৃহস্পতিবার দিনভর মোরেলগঞ্জ ও শরণখোলা উপজেলার দুর্গত এলাকা পরিদর্শন করেছেন বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুল ইসলাম। শরণখোলা উপজেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় ২৪৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। দু’দিনে অবিরাম বৃষ্টিপাতের ফলে প্রধানমন্ত্রীর উপহারে আশ্রয়ণ প্রকল্পের প্রায় অর্ধশত পরিবারসহ উপজেলার চারটি ইউনিয়নের কমপক্ষে ১৫ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। শরণখোলা ১৩টি সাইক্লোন শেল্টারে নিম্নআয়ের খেটে খাওয়া প্রায় ৭০০ মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। এছাড়া, বৃষ্টির পানিতে আউশ ও আমনের বীজতলার ৮০ ভাগই পানিতে ডুবে রয়েছে। শাক-সবজিসহ অন্যান্য মৌসুমি ফসলও তলিয়ে গেছে। মাছের খামার ও পুকুর তলিয়ে ভেসে গেছে কয়েক কোটি টাকার বিভিন্ন প্রজাতির চাষের মাছ। শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খাতুনে জান্নাত জানান, পানিবন্দি বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করে চরম দুর্ভোগে থাকা পরিবারের সদস্যদের বুধবার সন্ধ্যা থেকে আশ্রয় কেন্দ্রে আনার কাজ চলছে। তাদের শুকনো খাবার দেয়া হয়েছে। দ্রুত পানি নিষ্কাশনের চেষ্টা চলছে। সার্বিক বিষয় দেখতে বিকালে জেলা প্রশাসক শরণখোলার দুর্গত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। মোংলায় জলাবদ্ধতার শিকার প্রায় ১০ হাজার পরিবার। এদের মধ্যে বুধবার বিকাল পর্যন্ত ৩টি সাইক্লোন শেল্টারে তিন শতাধিক মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। আশ্রয় কেন্দ্রে ওঠা লোকজনের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করেছে উপজেলা প্রশাসন।
বাগেরহাট জেলা মৎস্য কর্মকর্তা রাসেল আহম্মেদ জানান, বাগেরহাট জেলায় দু’দিন ধরে অবিরাম বৃষ্টিপাতে ৪৭টি ইউনিয়নে পানির তোড়ে ভেসে গেছে ৯ হাজার চিংড়ি খামার ও সাড়ে ৭ হাজার পুকুরের মাছসহ ২৫০টি খামারের শিলা কাঁকড়া। প্রাথমিকভাবে ক্ষতির পরিমাণ সাড়ে ৮ কোটি টাকা।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status