মত-মতান্তর

আমরা কি শুধু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের দিন গণনাই করলাম?

পিয়াস সরকার

২০২১-০৭-২৯

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে ২০২০ সালের ১৭ই মার্চ থেকে বন্ধ রয়েছে দেশের সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। স্বল্প পরিসরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু পরীক্ষা নেয়া হলে কার্যত তালা ঝুলছে শিক্ষা ব্যবস্থায়। আজ বন্ধের ৫০০ দিন পূর্ণ হলো।

দেশে আঘাত হেনেছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। কিন্তু প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউয়ের মাঝে অনেকটাই স্বাভাবিক হয়েছিল দেশের পরিস্থিতি। এমনকি একটা সময়ে সংক্রমণের হার প্রায় তিন শতাংশের কাছাকাছি নেমে এসেছিল। তবুও খোলেনি শিক্ষার তালা। ফলে ওলট-পালট হয়ে গেছে শিক্ষা ক্যালেন্ডার। সমস্যার তালিকাটাও নেহায়েত কম নয়। শিক্ষার্থীদের মাঝে বাড়ছে আত্মহত্যার প্রবণতা, জড়াচ্ছে মাদকে। অনলাইন গেমিং গ্রাস করেছে, আর তীর্যকমূখী কিশোর গ্যাং। গ্রামাঞ্চলে বাড়ছে বাল্য বিবাহ। আর আয়মুখি কাজে জড়িয়ে যাওয়ায় কমছে শিক্ষায় ফেরার সম্ভাবনা। বাড়ছে সেশনজট ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের হতাশা।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ব্লেন্ডেট পদ্ধতিতে খোলা রয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। পদ্ধতিটি হচ্ছে অধিক সংক্রমিত সময় ও এলাকায় বন্ধ রাখা হয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। অবস্থার উন্নতি হলে খুলে দেয়া হয় তা। এভাবেই চলছে বিশ্ব।

শিক্ষা ও শিশু রক্ষা আন্দোলন (শিশির) নামে একটি সংগঠন জানিয়েছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ধ্বংসপ্রায়। শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যা, হতাশা ও নেশা বাড়ছে। বন্ধের ক্ষেত্রে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে সবার শেষে এবং খোলার ক্ষেত্রে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে সবার আগে ইউনিসেফ ও ইউনেস্কো ঘোষিত এই নীতির ভিত্তিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা ও তারিখ ঘোষণার কথা জানায় তারা।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ৫০০ টি দিন হলো। আমরা সব কিছু খোলা রেখে বন্ধ রাখলাম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এই দীর্ঘ গণনার আশু ইতি চাই। ব্লেন্ডেট কিংবা দ্বিতীয় ঢেউয়ের আঘাতের পর খুলে দেয়া হোক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে টিকা প্রদান চলছে। কিছুদিন বাদে ১৮ বছর বয়সীরাও পাবেন টিকা। আর কালক্ষেপণ নয়। করোনা হয়তো বিশ্বে থেকে যাবে। টিকাই আমাদের রক্ষা কবচ। কিন্তু দীর্ঘ এই বিরতির ক্ষতি বয়ে বেড়াতে হবে দীর্ঘ দিন।
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status