প্রথম পাতা

শনাক্তে রেকর্ড মৃত্যু ২০ হাজার ছাড়ালো

স্টাফ রিপোর্টার

২৯ জুলাই ২০২১, বৃহস্পতিবার, ৯:৪০ অপরাহ্ন

দেশে করোনায় প্রতিদিনই নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হচ্ছে। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের শনাক্ত ও মৃত্যুর ঊর্ধ্বমুখী কোনোক্রমেই ঠেকানো যাচ্ছে না। একদিনে সর্বোচ্চ ১৬ হাজার ২৩০ জন শনাক্ত হয়েছেন। এর আগে ২৬শে জুলাই ১৫ হাজার ১৯২ জনের শনাক্তের রেকর্ড ছিল দেশে। সরকারি হিসাবে এ পর্যন্ত মোট শনাক্ত ১২ লাখ ১০ হাজার ৯৮২ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় ২৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ২০ হাজার ১৬ জনে। গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ৩০ দশমিক ১২ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৩ হাজার ৪৭০ জন এবং এখন পর্যন্ত ১০ লাখ ৩৫ হাজার ৮৮৪ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ৬৩৯টি পরীক্ষাগারে গত ২৪ ঘণ্টায় ৫৬ হাজার ১৫৭টি নমুনা সংগ্রহ এবং ৫৩ হাজার ৮৭৭টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৭৬ লাখ ১২ হাজার ৫৮৮টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ৩০ দশমিক ১২ শতাংশ এবং এ পর্যন্ত ১৫ দশমিক ৯১  শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৫ দশমিক ৫৪ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৬৫ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ২৩৭ জনের মধ্যে পুরুষ ১৪৯ জন আর নারী ৮৮ জন। দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত পুরুষ মারা গেলেন ১৩ হাজার ৬২৭ জন এবং নারী ৬ হাজার ৩৮৯ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়াদের বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণে ৯১ থেকে ১০০ বছরের মধ্যে ১ জন, ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে ১৫ জন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে ৪৫ জন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ৭৮ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৪৪ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৩৪ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ১১ জন এবং ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৯ জন। তাদের মধ্যে ঢাকা বিভাগের রয়েছেন ৭০ জন, চট্টগ্রাম বিভাগের ৬২ জন, রাজশাহী বিভাগের ২১ জন, খুলনা বিভাগের ৩৪ জন, বরিশাল বিভাগের ৯ জন, সিলেট বিভাগের ১৮ জন, রংপুর বিভাগের ১৬ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে মারা গেছেন ৭ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় সরকারি হাসপাতালে মারা গেছেন ১৬৭ জন, বেসরকারি হাসপাতালে ৫৭ জন এবং বাসায় ১৩ জন।
বিভাগভিত্তিক শনাক্তের হার বিশ্লেষণে দেখা যায়, একদিনে দেশের মোট শনাক্তের ৫২ দশমিক ১৯ শতাংশ রোগী রয়েছেন ঢাকা বিভাগে। গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা বিভাগে শনাক্ত হয়েছেন ৮ হাজার ২৭১ জন। এই বিভাগে শনাক্তের হার ৩০ দশমিক ২৯ শতাংশ। ঢাকা জেলায় (মহানগরসহ) শনাক্তের হার ২৮ দশমিক ৯৩ শতাংশ। ময়মনসিংহ বিভাগে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৬২৬ জন। শনাক্তের হার ৩১ দশমিক ২০ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিভাগে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৩ হাজার ৩০৩ জন। শনাক্তের হার ৩৩ দশমিক ৪১ শতাংশ। রাজশাহীতে শনাক্ত হয়েছে ৯১৭ জন। শনাক্তের  হার ১৭ দশমিক ৭২ শতাংশ। রংপুর বিভাগে শনাক্তের সংখ্যা ৬৫৭ জন। শনাক্তের হার ২৮ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ। খুলনা বিভাগে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৮৬৬ জন। শনাক্তের হার ২৬ দশমিক ৮৩ শতাংশ। বরিশাল বিভাগে শনাক্তের সংখ্যা ৮৫৪ জন। শনাক্তের হার ৪১ দশমিক ৩৫ শতাংশ। একই সময়ে সিলেট বিভাগে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৭৩৬ জন। শনাক্তের হার ৩৯ দশমিক ৩৫ শতাংশ।
করোনায় নারী মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে: গতকাল কোভিড-১৯ পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আয়োজিত ভার্চ্যুয়াল স্বাস্থ্য বুলেটিনে অধিদপ্তরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম  বলেছেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ও সংক্রমণের উপসর্গ নিয়ে নারীর মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে। তিনি বলেন, এটি আমাদের নজরে আছে এবং সংশ্লিষ্টরা কাজ করছেন। তথ্য-উপাত্তগুলো এক জায়গায় হওয়ার পরে আমরা নিশ্চিত তথ্য দিতে পারবো। ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, বিভাগওয়ারি তথ্যে করোনায় ঢাকায় সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে। তারপর চট্টগ্রাম বিভাগে, এরপর খুলনায়। সবচেয়ে কম সংখ্যক রোগী মারা গেছেন সিলেট বিভাগে।  তিনি বলেন, আমাদের মনে রাখতে হবে, হাসপাতালে শয্যা সংখ্যা বাড়ানো এই অতিমারি মোকাবিলার একমাত্র পথ নয়। সংক্রমণের শৃঙ্খল ভেঙে ফেলার চ্যালেঞ্জ আমাদের মোকাবিলা করতে হবে। মানুষের কাছ থেকে মানুষে যদি সংক্রমণ ছড়িয়ে না যায় তাহলে হাসপাতালে শয্যা সংখ্যার ওপর চাপ কমে আসবে। বিভিন্ন জেলায় বাসা থেকে নমুনা সংগ্রহ বন্ধ আছে। এই উদ্যোগটিকে আবারো চালু করতে পারবো বলে আমরা আশা করি। আমাদের প্রশিক্ষিত মেডিকেল টেকনোলজিস্টের স্বল্পতা আছে। সীমিত সংখ্যা নিয়েই আমরা চেষ্টা করছি সার্ভিসটি চালু রাখতে। অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, অক্সফোর্ডের টিকা কার্যক্রম আমরা শুরু করেছিলাম, কিন্তু মাঝে টিকা সরবরাহ না থাকার কারণে বন্ধ করে দেয়া হয়। বর্তমানে বন্ধুপ্রতিম জাপানের কাছ থেকে কিছু টিকা পেয়েছি। আশা করছি, শিগগিরই টিকা কার্যক্রম শুরু করতে পারবো। দীর্ঘদিন আগে টিকা এলেও এখনো কার্যক্রম শুরু না হওয়ার কারণ জানতে চাইলে নাজমুল ইসলাম বলেন, অভ্যন্তরীণ প্রক্রিয়া সংক্রান্ত কারণে আমরা এখনো শুরু করতে পারছি না। অপেক্ষা করছি আরও কিছু টিকা আসার জন্য। তবে আপনাদের আশ্বস্ত করতে পারি যে, অল্প সময়ের মধ্যেই এই কার্যক্রম শুরু হয়ে যাবে। তিনি আরও বলেন, সরকারের বহুমুখী পদক্ষেপের কারণে আমরা অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার আরও কিছু টিকা কিছুদিনের মধ্যেই পেয়ে যাবো। দ্বিতীয় ডোজের টিকা নিয়ে শঙ্কায় থাকাদের অপেক্ষা অল্পদিনের মধ্যেই শেষ হবে বলে আশা করছি। এই মুখপাত্র বলেন, করোনা সংক্রমণ থেকে প্রতিটি মানুষ যত দিন না সুরক্ষিত হবে, ততদিন আমরা কেউই শঙ্কামুক্ত নই। তাই সবাইকেই সংক্রমণ মোকাবিলায় এগিয়ে আসতে হবে। আর সুরক্ষার অন্যতম হাতিয়ার টিকা। এ ছাড়া মাস্ক পরা, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাসহ সব ধরনের চেষ্টা আমাদের চালিয়ে যেতে হবে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status