অনলাইন

ঋণের টাকার মামলায় থানায় মা, বাইরে কাঁদছে ৬ মাসের শিশু

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি

২৭ জুলাই ২০২১, মঙ্গলবার, ১১:৩৬ পূর্বাহ্ন

গাজীপুরের শ্রীপুরের বারতোপা বাজারের একটি কাপড়ের দোকানি নুরুল আমীন। তার স্ত্রী শাহনাজ পারভীন স্বামীকে সহায়তার জন্য স্থানীয় টিএমএস নামের একটি এনজিও থেকে ১ লাখ ১০ হাজার টাকা ঋণ গ্রহণ করেছিলেন ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে। বিনিয়োগ করেছিলেন স্বামীর ব্যবসায়। প্রতিমাসে ৯৫০০ টাকা করে কিস্তিও পরিশোধ করতেন নিয়মিত। একসময় নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতায় ২টি কিস্তি দিতে পারছিলেন না। পরে এনজিও কর্মীর পীড়াপিঁড়িতে দু’মাস পরই তা পরিশোধ করে ঋণ পরিশোধের সনদও নেন শাহনাজ পারভীন।
২০১৭ সালে এমন ভাবে একটি ঋণ গ্রহণ ও পরিশোধ করার পরও এনজিওর মামলার ফাঁদে আটকে গেছেন শাহনাজ পারভীন। সোমবার বিকেলে তার ছ’মাসের দুগ্ধজাত শিশু রেখে পরোয়ানা মূলে শাহনাজ পারভীনকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসেন শ্রীপুর থানা পুলিশ। এর পর থেকেই মায়ের জন্য কাঁদছে এই শিশুটি।
শিশুটির বাবা নুরুল আমীন বলেন, আমরা ঋণ গ্রহণ করে পরে ২টি কিস্তি পরিশোধ করতে কিছুটা সময় লাগে। ২ মাস পরই ঋণের টাকা পরিশোধ করি। এসময় এনজিও আমাদের ঋণ পরিশোধের প্রত্যয়নও দেয়। যদিও পরে তারা আমার স্ত্রীর নামে মামলা করেন। এ মামলার বিষয়ে আমরা কেউ কিছু জানতাম না। হঠাৎ করে শ্রীপুর থানা পুলিশ গিয়ে আমার স্ত্রীকে আটক করে নিয়ে আসে।
তিনি আরো বলেন, সমস্যা হয়েছে আমার ছ’মাসের শিশু ফাতেমার জন্য। সে এখনও তার মায়ের দুধ ছাড়া কিছুই খায় না। বিকেল থেকেই তার মায়ের জন্য সে কান্নাকাটি করছে। করোনার এই মহামারীর সময় এমন অমানবিকতায় পড়বো তা ভাবতেই পারছি না।
এ বিষয়ে শ্রীপুর থানার পরিদর্শক অপারেশন গোলাম সারোয়ার বলেন, এনজিওর মামলায় আদালতের পরোয়ানা মূলে এই নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আগামীকাল তাকে আদালতে প্রেরণ করা হবে।
এ বিষয়ে টিএমএসএস শ্রীপুর শাখার ব্যবস্থাপক আব্দুল আলীম বলেন, শাহনাজ পারভীন নামের বর্তমানে আমাদের কোন সদস্য নেই, তবে পূর্বে ছিল। তার কাছে আমাদের কোন দেনা পাওনা নেই। তবে তার বিরুদ্ধে কেন মামলা হলো তা তিনি বলতে পারবেন না। তার পূর্বে যে দায়িত্বে ছিল বিষয়টি তার জানা থাকতে পারে।
টিএমএসএস এর গাজীপুর আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক আতাউর রহমান বলেন, মামলা ও নারীকে আটকের বিষয়ে তার কিছু জানা নেই। তবে তিনি জরুরিভাবে স্থানীয় ব্যবস্থাপকের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নিবেন।

এ বিষয়ে গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এসএম তরিকুল ইসলাম বলেন, এনজিও ঋনের টাকা পরিশোধের পরও মামলা ও শিশু রেখে একজন নারীকে আটক সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক। তিনি বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবেন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status