বাংলারজমিন

সাটুরিয়ায় সেতুর অভাবে ভোগান্তির শিকার চার উপজেলার মানুষ

সাটুরিয়া (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি

২৬ জুলাই ২০২১, সোমবার, ৯:০৩ অপরাহ্ন

একটি সেতুর অভাবে চার উপজেলার মানুষের একমাত্র ভরসা খেয়া পারাপার। সাড়ে তিন বছর আগে ধলেশ্বরী নদী গর্ভের মাটির সয়েল টেস্ট করা হলেও এখনো আলোর মুখ দেখেনি এলাকাবাসী। সেতুটি না হওয়ায় নানা সমস্যায় কয়েক হাজার শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ। সাটুরিয়া উপজেলা এলজিইডি অধিদপ্তর অফিস সূত্রে জানা গেছে, গোপালপুরের রাজৈর খেয়াঘাটে ৩৪০ মিটার লম্বা সেতুটি নির্মাণ করার জন্য আনুমানিক ৩৭ কোটি টাকা চেয়ে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়। বিষয়টি প্ল্যানিং মিনিস্ট্রিতে রয়েছে। প্ল্যানিং মিনিস্ট্রির কাজ শেষ হলে একনেকে সভায় অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে। কিন্তু সাড়ে তিন বছরে কেন ফাইল ডিপ ফ্রিজে রয়েছে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের তা জানা নেই। বরাইদ ইউনিয়নের রাজৈর খেয়াঘাটে গিয়ে দেখা যায়, গোপালপুর বাজারে সকালে দুধ বিক্রি করতে ওপার থেকে প্রতিদিন প্রায় দেড়শ মণ দুধ নিয়ে খামারি ও কৃষকের উৎপাদিত ফসল নিয়ে খেয়া পারাপার হচ্ছে। এক ঘণ্টার বাজারে একবার খেয়া ফেল করলে প্রায় ১ ঘণ্টা বসে থাকতে হয়। ফলে বাজার ধরতে কৃষক ও দুধ বিক্রেতারা ভোরে এসে খেয়াঘাটে ভিড় জমায়। এপার থেকে খেয়া যাওয়ার পর গাদাগাদি করে খেয়ায় উঠতে লাগে পাল্লা। এ সময় অনেকের মাথায় ও হাতে থাকা দুধ ধলেশ্বরী নদীর পাড়েই পড়ে যায়। এমনকি নৌকার ভারসাম্য বেশি হলে নৌকা ডুবে যাওয়ার মতো ঘটনাও ঘটে। প্রতিদিন এ খেয়াঘাট দিয়ে ৫ উপজেলার প্রায় ১০ থেকে ১২ হাজার মানুষ পারাপার হয় বলে হারান মাঝি জানায়। হারান মাঝি জানায়, গোপালপুর রাজৈর খেয়াঘাট দিয়ে টাঙ্গাইলের নাগরপুর, সিরাজগঞ্জের চৌহালি, মানিকগঞ্জের দৌলতপুর ও ঘিওরের মানুষজন পারাপার হয়। ইঞ্জিনচালিত দুটি নৌকা দিয়ে প্রতিদিন ফজরের আজানের পর থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত মানুষ পারাপার করি। তিনি আরও জানান, এ খেয়াঘাট দিয়ে প্রতিদিন দুই থেকে তিন হাজার শিক্ষার্থী পারাপার হয়। শিক্ষার্থীদের পারাপারের সময় ভয় করে। তারা নৌকায় উঠে হই-হুল্লোড় করে। নৌকা এদিক ওদিক কাত করে দেয়। মনে হয় এই বুঝি নৌকা ডুবে গেল। খেয়া পারাপারকারী মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ধলেশ্বরী নদী ভাঙনের কবলে পড়ে আমরা সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েছি। নদী ভেঙে বড় হচ্ছে। আমাদের এপার-ওপারের জমির আবাদি ফসল ও গরু-ছাগল নিয়ে খেয়া পারাপার ছাড়া কোনো বিকল্প পথ নেই। কয়েকটি উপজেলার মানুষের পারাপার হওয়ায় অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। সময়মতো হাট বাজারে উৎপাদিত ফসল নিয়ে আসতে পারি না। গোপালপুর বাসিন্দা আপেল মাহমুদ চৌধুরী জানান, সেতুটি নির্মাণ করা হলে ছাত্র-ছাত্রী ও সাধারণ মানুষের কষ্ট লাঘবের পরিত্রাণ পেতো। আমার বাপ-দাদারা যেমন এ খেয়াঘাট দেখেছেন আমরাও দেখছি। সাটুরিয়া উপজেলা প্রকৌশলী এ এফ এম তৈয়বুর রহমান জানান, তিনশ’ ৪০ মিটার সেতুটি আনুমানিক নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৭ কোটি টাকা। এলজিইডি সেতুটি নির্মাণ করার জন্য প্রায় সাড়ে তিন বছর আগে নদীর ভূগর্ভের মাটির সয়েল টেস্ট করা হয়েছিল। কিন্তু প্ল্যানিং মিনিস্ট্রি কেন ছাড়ছেন না তা আমার জানা নেই। তবে বিষয়টি নিয়ে উচ্চ পর্যায়ে কথা বলে সমস্যার সমাধান করা হবে। সেতুটি হলে কয়েকটি উপজেলার সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হবে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status