বাংলারজমিন

দুশ্চিন্তায় ব্যবসায়ীরা, খুলনার চামড়াপট্টিতে চামড়ার দোকান নেই

স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা থেকে

২৫ জুলাই ২০২১, রবিবার, ৮:৫৭ অপরাহ্ন

চামড়াপট্টি হিসেবে পরিচিত খুলনার শেখপাড়ায় এখন কোনো চামড়ার দোকান নেই। গত বছর খুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি) কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে সড়কে কোরবানির পশুর চামড়া সংরক্ষণ করেছিলেন ব্যবসায়ীরা। এ বছর এখনো কেসিসি’র অনুমতি পাওয়া যায়নি। সংরক্ষণের জায়গা না থাকায় ঈদের চামড়া কেনা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ব্যবসায়ীরা। সড়কে চামড়া সংরক্ষণের অনুমতির আবেদন নিয়ে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে ঘুরছেন তারা। চামড়া ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, খুলনার শেখপাড়া চামড়াপট্টিকে ঘিরেই খুলনার কাঁচা চামড়া ব্যবসা গড়ে ওঠে। অব্যাহত লোকসান, ট্যানারি ও পাইকারদের কাছ থেকে বকেয়া পাওনা না পেয়ে ধীরে ধীরে ব্যবসায়ীর সংখ্যা কমতে থাকে। দোকানও কমতে থাকে। সেইসঙ্গে চামড়াপট্টির আশপাশে গড়ে উঠতে থাকে সরকারি-বেসরকারি ভবন ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান।
দুর্গন্ধের কারণে বাড়ির মালিকরা চামড়া ব্যবসায়ীদের কাছে দোকান ভাড়া দেন না। চামড়াপট্টির আশপাশে জেলা শিল্পকলা একাডেমি, জাতীয় মহিলা সংস্থা, মুক্তিযোদ্ধা পল্লী, কেসিসি’র গ্যারেজের পক্ষ থেকে বাড়ির মালিক ও ব্যবসায়ীদের চাপ দেয়া হয়। ফলে ধীরে ধীরে চামড়ার দোকানগুলো বন্ধ হয়ে যায়।
খুলনার শেখপাড়া চামড়াপট্টির শেষ দোকানটি বন্ধ হয়ে যায় ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে। বর্তমানে চামড়াপট্টিতে একটিও চামড়ার দোকান নেই। সারা বছর কসাইখানা থেকেই চামড়া বিক্রি করে দেয়া হয়। বিভিন্ন মাংসের দোকানে স্বল্প পরিসরে চামড়া সংরক্ষণ করা হয়। কিন্তু কোরবানির ঈদে যে বিপুল সংখ্যক চামড়া হয় তা সেখানে সংরক্ষণ করা সম্ভব নয়।
ব্যবসায়ীরা জানান, গত বছর সিটি মেয়র সড়কে চামড়া সংরক্ষণের অনুমতি দিয়েছিলেন। চামড়া কিনে সড়কেই সংরক্ষণ করেছিলেন তারা। এবার সিটি মেয়র খুলনায় নেই। কেসিসির সচিবসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে সড়ক ব্যবহারের অনুমতি পাওয়া যায়নি। গত রোববার সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল ব্যবসায়ীদের।
খুলনার কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুস সালাম ঢালী জানান, একযুগ আগেও শেখপাড়া মোড়ে ১০-১৫টি চামড়ার দোকান ছিল। কোরবানির ঈদ ছাড়াও সারা বছরই বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন চামড়া নিয়ে এখানে আসতো।
তার বাবাসহ প্রবীণ ব্যবসায়ীরা সবাই মারা গেছেন। ট্যানারি মালিক ও পাইকারি বিক্রেতাদের পাওনা টাকা না দেয়ায় ব্যবসায়ীরা পথে বসে গেছে। এজন্য সবাই দোকান ছেড়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, শেরে বাংলা সড়ককেন্দ্রিক শেখপাড়া এখন বাণিজ্যিক এলাকা। এখানে দোকান ভাড়া অনেক বেশি। সারা বছর চামড়া কেনাবেচা করে ঘর ভাড়া দেয়ার টাকা হয় না। এছাড়া বাড়ির মালিক ও স্থানীয়রা চামড়া বিক্রেতাদের কাছে ঘর ভাড়া দিতে নিষেধ করে।
যার কারণে চামড়া বিক্রেতাদের জন্য পৃথক একটি বাজারের দাবি আমাদের দীর্ঘদিন ধরে। সেই দাবি কেউ পূরণ করে না। এখন সড়কেও যদি চামড়া সংরক্ষণের অনুমতি
না দেয় তাহলে চামড়া কিনে আমরা রাখবো কোথায়?
আবদুস সালাম বলেন, অনুমতি না নিয়ে সড়কে চামড়া সংরক্ষণ করলে পুলিশ ঝামেলা করে। এজন্য আগে চামড়া সংরক্ষণের ব্যবস্থা করে তবেই কেনার প্রস্তুতি শুরু করতে হবে। অনুমতির আবেদন নিয়ে আমরা অফিসে অফিসে ঘুরছি। অনুমতি না পেলে এবার কোনো ব্যবসায়ী চামড়া কিনবে না।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status