যুক্তরাষ্ট্রে গড় আয়ুষ্কাল কমেছে দেড় বছর

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রে গড় আয়ুষ্কাল সবচেয়ে কমে গিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) নতুন এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, গত বছর মার্কিনিদের কাঙ্খিত আয়ুষ্কাল কমে গেছে দেড় বছর। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এত বড় পতন হয়নি কখনো। করোনা মহামারি এক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রেখেছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিজনেস ইনসাইডার। মার্কিনিদের বর্তমান গড় কাঙ্খিত আয়ুষ্কাল প্রায় ৭৭ বছর। ২০১৯ সালে এই আয়ু ছিল প্রায় ৭৯ বছর। গবেষকরা বলেছেন, করোনা মহামারির আগের অবস্থায় আয়ুষ্কাল ফিরে যেতে কয়েক বছর লেগে যেতে পারে। ওই রিপোর্টে আরো বলা হয়েছে কৃষ্ণাঙ্গ এবং হিস্প্যানিক মার্কিনিদের গড় আয়ুষ্কাল আরো কমে গেছে। তাদের আয়ুুষ্কাল কমেছে প্রায় তিন বছর। ২০১৯ সালে কৃষ্ণাঙ্গ মার্কিনিদের কাঙ্খিত গড় আয়ুষ্কাল ছিল প্রায় ৭৫ বছর। কিন্তু ২০২০ সালে তা নেমে দাঁড়ায় ৭২ বছরের নিচে। ২০১৯ সালে হিস্প্যানিক মার্কিনিদের আয়ুষ্কাল ছিল প্রায় ৮২ বছর। কিন্তু ২০২০ সালে তা নেমে দাঁড়ায় ৭৯ বছরেরও নিচে। মহামন্দার সময়ে কৃষ্ণাঙ্গ মার্কিনিরা তাদের আয়ুষ্কালের এরকম দ্রুত পতন দেখেছিল। গত বছরেই হিস্প্যানিক মার্কিনিদের গড় আয়ু সবচেয়ে বেশি কমেছে। এখানে উল্লেখ্য, তাদের গড় আয়ু গণনার বিষয়টি সিডিসি আমলে নিয়েছে ২০০৬ সালে।
সিডিসির রিপোর্টের প্রধান লেখক এলিজাবেথ আরিয়াস বলেছেন, নাটকীয়ভাবে গড় আয়ুষ্কাল কমে যাওয়া আধুনিক মার্কিন ইতিহাসে খুবই অস্বাভাবিক। উন্নত দেশগুলোতে মানুষের মৃত্যুহার স্থিতিশীল এবং স্থির। এক বছরের সঙ্গে অন্য বছরের তুলনা করলে এক্ষেত্রে পরিবর্তন খুবই সামান্য। ২০০০এর দশকে সর্বশেষ যে অবস্থানে ছিল আয়ুষ্কাল, সেখানে নিয়ে গেছে মহামারি। ২০০০ সালে কৃষ্ণাঙ্গ মার্কিনিদের যে আয়ুষ্কাল ছিল, তারা এখন সেখানে পৌঁছে গেছে। ২০২০ সালের প্রথম অর্ধাংশে কৃষ্ণাঙ্গ মার্কিনিদের আয়ুষ্কালের সবচেয়ে বেশি অবনমন হয়। বছরের শেষে হিস্প্যানিক মার্কিনিদের আয়ুষ্কালেও উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন ঘটে।
সিডিসির গবেষকরা আরো দেখতে পেয়েছেন যে, করোনায় মোট যে পরিমাণ মানুষ মারা গেছেন, তার মধ্যে ২০২০ সালের দ্বিতীয় অর্ধেক অংশে মারা গেছেন শতকরা ৬৮ ভাগ হিস্প্যানিক জনগণ। অন্যদিকে করোনায় সারা বছরই মৃত্যুহার একই রকম ছিল কৃষ্ণাঙ্গ মার্কিনিদের মধ্যে।