প্রথম পাতা

ঝুঁকি নিয়েই ছুটছে মানুষ

স্টাফ রিপোর্টার

২০ জুলাই ২০২১, মঙ্গলবার, ৯:২৮ অপরাহ্ন

স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়ে বাড়ি ফিরছে মানুষ ছবি: শাহীন কাওসার

করোনাভাইরাস সংক্রমণসহ নানা ঝুঁকি নিয়েই ঈদে বাড়ি ফিরছে মানুষ। শেষ মুহূর্তে বাড়ি ফেরার তাড়া সর্বত্র। বাস, লঞ্চ, ট্রেনে করে সবাই যাচ্ছেন যার যার গন্তব্যে। কোথাও নেই স্বাস্থ্যবিধি মানার প্রবণতা। রাজধানীর গণপরিবহনেও দেখা গেছে গাদাগাদি করে মানুষ চলাচল করছেন। সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে দেশের দক্ষিণাঞ্চলগামী যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় ছিল সোমবার। প্রতিটি লঞ্চে গাদাগাদি করে উঠেছেন যাত্রীরা। তাদের অনেকেই মানেননি স্বাস্থ্যবিধি। তবে ঢাকা নদীবন্দর ও লঞ্চ মালিকদের দাবি, তারা স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে তদারকি করছেন। যাত্রীদের মাস্ক পরা নিশ্চিত করতে মাইকিং, ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়েছে। টার্মিনালে যাত্রীদের চাপ বাড়ায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কর্তৃপক্ষকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। সকাল থেকে বন্দরের প্রতিটি পন্টুনে ছিল যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড়। লঞ্চের শিডিউল না মানার অভিযোগ ছিল যাত্রীদের।
বরিশালগামী লঞ্চের যাত্রী আব্দুল্লাহ হারুন বলেন, লঞ্চ থেকে ফোন করে জানানো হয়েছে সন্ধ্যা ৬টার পরিবর্তে সকাল ৮টায় লঞ্চ ছেড়ে দেবে। এর মধ্যে যাত্রী এসে লঞ্চ ভরে গেছে। কিন্তু এরপরও লঞ্চ ছাড়েনি। সেই লঞ্চ ছেড়েছে সকাল ১০টায়। কোথাও পা রাখার জায়গা নেই। অনেক যাত্রী নিয়ে যাত্রা শুরু করেছে। এই চিত্র দেখা গেছে বরিশালগামী সব লঞ্চের। প্রতিটি লঞ্চই অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে যাত্রা করেছে। লঞ্চগুলোর সিঁড়ি থেকে শুরু করে ডেক ও ছাদসহ সব স্থানে ছিল যাত্রী।
লালকুঠি থেকে ওয়াইজঘাট পর্যন্ত সদরঘাট টার্মিনাল। সরজমিন দেখা যায়, পুরো টার্মিনালে যাত্রীদের ভিড়। হুড়োহুড়ি করে লঞ্চে উঠছেন যাত্রীরা। টার্মিনালে প্রবেশ পথ এবং লঞ্চে ওঠার সময় যাত্রীদের মুখে মাস্ক থাকলেও লঞ্চে ওঠার পর তারা তা খুলে ফেলছেন। লঞ্চের চালক ও স্টাফদেরও মাস্ক পরতে দেখা যায়নি। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে হুড়োহুড়ি করে পরিবার এমভি তাসরিফ লঞ্চে ওঠেন আব্দুর রহমান। কিন্তু তাদের কারো মুখেই মাস্ক ছিল না।
এদিকে, ঈদ?কে কেন্দ্র করে গতকালও ঢাকা-টাঙ্গাই?ল মহাসড়কের ১৩ কি?লো?মিটার অংশে যানজ?টের সৃ?ষ্টি হ?য়। এতে ভোগা?ন্তি?তে প?ড়ে?ন যাত্রী ও চালকরা। ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়?কের কা?লিহাতীর পুংলি থেকে বঙ্গবন্ধু সেতুপূর্ব টোলপ্লাজা পর্যন্ত অং?শে যানজটের এ চিত্র দেখা গেছে। ঢাকা থে?কে উত্তরবঙ্গগামী লে?নে প্রচুর গা?ড়ি আটকা থাক?লেও ঢাকামুখী লে?নে গাড়ির গতি ছিল স্বাভাবিক। বঙ্গবন্ধু সেতুপূর্ব থেকে এ?লেঙ্গা পর্যন্ত ঢাকামুখী লে?নে থে?মে থে?মে চল?ছে যানবাহন। মূলত মহাসড়কের পুং?লি, এলেঙ্গা, আনালিয়াবাড়ী, সল্লা ও জোকারচর এলাকায় যানজট বেশি। এ সময় ঈ?দে ঘ?রে ফেরা মানুষদের খোলা ট্রা?কে করে যেতেও দেখা গে?ছে। এ?লেঙ্গা হাইওয়ে পু?লিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইয়া?সির আরাফাত জানান, আসন্ন ঈদ?কে কেন্দ্র ক?রে মহাসড়?কে গাড়ির চাপ বাড়?ছে। এ?তে কোথাও কোথাও যানজ?টের সৃ?ষ্টি হচ্ছে। ত?বে যানজট নিরস?নে পুলিশ কাজ কর?ছে। সায়েদাবাদ, গাবতলী ও মহাখালী টার্মিনালে দেখা গেছে বড় বড় কোম্পানিগুলোর এসি বাসগুলোতে অর্ধেক আসন ফাঁকা রেখে যাত্রী পরিবহন করা হলেও অধিকাংশ বাসই তা মানেনি। সব আসনে যাত্রী নিয়ে তিনগুণ বেশি ভাড়া আদায় করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। গাবতলী টার্মিনালে দেখা গেছে সেলফি পরিবহনের একটি বাসে পাশাপাশি যাত্রী তুলতে। এছাড়া আরও বেশ কয়েকটি পরিবহন অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে গন্তব্যের উদ্দেশে যাত্রা করতে দেখা গেছে।
লঞ্চ ও বাসে স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে উদাসীনতা লক্ষ্য করা গেলেও ট্রেনের চিত্র কিছুটা ভিন্ন। গতকাল সকালে কমলাপুর রেল স্টেশনে দেখা গেছে নির্ধারিত সময়ে বেশ কয়েকটি ট্রেন ছেড়ে গেছে। প্রতিটি ট্রেনই অর্ধেক আসন ফাঁকা রেখে গন্তব্যে ছুটছে। স্টেশনের প্রবেশপথেও যাত্রীদের হাতে হ্যান্ড স্যানিটাইজার লাগানো হয়েছে, মাপা হয়েছে শরীরের তাপমাত্রা। আন্তঃনগরের কোনো ট্রেনেই টিকিট ছাড়া যাত্রী উঠতে দেয়া হয়নি। তবে বেসরকারিভাবে চলাচলরত কমিউটার ট্রেনগুলোতে অতিরিক্ত যাত্রী নেয়ার অভিযোগ ছিল। পাশাপাশি আসনেরও টিকিটি বিক্রি করা হয়েছে। এই ট্রেনগুলো সব স্টেশনে থামার কারণে অতিরিক্ত যাত্রী জোর করে ট্রেনগুলোতে উঠে যান বলে জানায় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status