শিক্ষাঙ্গন
যাদের গল্প প্রকাশ্যে অল্প
এম.বি রিয়াদ, ইবি প্রতিনিধি
১৯ জুলাই ২০২১, সোমবার, ৭:২৭ অপরাহ্ন
সম্প্রতি দেশে করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় কঠোর লকডাউন ঘোষণা করা হয়। এতে আটকে পড়ে ক্যাম্পাস পার্শ্ববর্তী ও কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহে অবস্থানরত ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৭'শ শিক্ষার্থী। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় ঈদে বাড়ি ফেরা নিয়ে শঙ্কায় পড়ে তারা। তবে শাখা ছাত্র মৈত্রীর দাবির প্রেক্ষিতে নিজস্ব বাসে তাদের বাড়ি পৌঁছে দেয় প্রশাসন। গত ১৬ ও ১৮ই জুলাই মোট ১১টি বাসে শিক্ষার্থীদের ঢাকা, খুলনা, রংপুর ও রাজশাহী বিভাগ পর্যন্ত পৌঁছে দেয়া হয়। শিক্ষার্থীদের গন্তব্যে পৌঁছাতে প্রশাসন ছাড়াও কিছু মানুষ রাতদিন নিরলস পরিশ্রম করে গেছেন। কিন্তু তাদের গল্পগুলো বরাবরের মতোই অপ্রকাশিত ডায়রিতে জমা হয়ে রয়েছে। একসময় এই পরিচয়গুলো আড়ালে হারিয়ে যায় না বলা গল্পের মতো। তেমনি কিছু আড়ালে পড়ে যাওয়া ব্যক্তি আব্দুল করিম, আব্দুর রাজ্জাক (হাসমত), জাহিদ, গিয়াসউদ্দীন, নজরুল ইসলাম এবং রিন্টু মোল্ল্যা। তারা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস চালক। করোনা মহামারির মধ্যেও তারা নানা বাঁধা উপেক্ষা করে হাসি ফুটিয়েছেন শিক্ষার্থীদের মুখে। শিক্ষার্থীদের নিরাপদে বাড়ি পৌঁছে দিতে তারা দিনরাত ছুটে গেছেন এক শহর থেকে অন্য শহরে। প্রশাসনের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে শিক্ষার্থীদের বাড়ি পৌঁছে দিতে পেরে তারাও আনন্দিত। দীর্ঘদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস চালান আব্দুর রাজ্জাক। সদা মিষ্টভাষী গোলগাল চেহারার এই লোকটিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সবাই হাসমত ভাই বলেই সম্বোধন করে থাকেন। তিনি মানবজমিনকে বলেন, ঝুঁকি সত্ত্বেও শিক্ষার্থীদের বাবা-মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিতে পেরে আমরা আনন্দিত। সকলেই পরিবারের সাথে সুস্থ্য ও সুন্দরভাবে ঈদ উদযাপন করুক এটাই কাম্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের আল-ফিকহ অ্যান্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী এস এ এইচ ওয়ালিউল্লাহ মানবজমিনকে বলেন, শিক্ষার্থীদের ঈদ যাত্রায় নিরাপদে পৌঁছে দিতে ‘ফুলের মাঝে মাটির মমতা রসের’ মতই ভূমিকা পালন করেছেন ক্যাম্পাসের ড্রাইভার মামারা। নিজেদের ঝুঁকিতে ফেলে, বিরক্তিকর যানজট ঠেলে, দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে গন্তব্যে পৌঁছিয়ে হাসি ফুটিয়েছেন আমাদের মুখে। শ্রদ্ধা এবং কৃতজ্ঞতা মানুষগুলোর প্রতি। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন প্রশাসক ড. আনোয়ার হোসেন মানবজমিনকে বলেন, যাত্রা পথে গাড়ি চালকরাও কষ্ট করেছে। বিশেষ করে ফেরার পথে ৭ থেকে ১০ ঘন্টা পর্যন্ত অনেক গাড়ি জ্যামে আটকা ছিল। যারা (চালক) গাড়ির ভিতরে থাকে তারা কষ্টটা বোঝে। এটা ভেবে ভালো লাগছে যে পরিবহন প্রশাসক হিসেবে শিক্ষার্থীদের জন্য কিছু করতে পেরেছি। এর পিছনে যারা সহযোগিতা করেছেন সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।