মত-মতান্তর
১৬ বছরের উপরে প্রতিটি নাগরিককে সবার আগে টিকাদান সম্পন্ন করতে যাচ্ছে জাপান
হুমায়ুন কবির বুলবুল
১৭ জুলাই ২০২১, শনিবার, ১১:৪৬ পূর্বাহ্ন
প্রশান্ত মহাসাগরের বুকে অবস্থিত পূর্ব এশিয়ার একটি দ্বীপ রাষ্ট্র জাপান। জনসংখ্যা প্রায় ১৩ (তেরো) কোটি। করোনা মহামারীতে আক্রান্তের সংখ্যাও নেহায়েত কম নয়। তবে জাপানই একমাত্র দেশ যারা সর্বাগ্রে ১৬ (ষোল) বছরের উপরে প্রতিটি নাগরিককে করোনা ভ্যাকসিন প্রদান সম্পন্ন করতে যাচ্ছে।
কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন দেয়া শুরু করতে বেশ দেরি করেছে জাপান। এ নিয়ে সারা বিশ্বে যথেষ্ট সমালোচনাও হয়েছে। কিন্তু সবকিছু নীরবে সহ্য করেছে তারা। কোন সমালোচনারই জবাব দিতে যায়নি। মাঝে-মধ্যে বিচ্ছিন্নভাবে ৬৫ বছরের উপরে বয়স এমন কিছু সিনিয়র সিটিজেনকে টিকা দিয়েছে। আর তার মধ্যে গ্রহণ করেছে সর্বাত্মক প্রস্তুতি। গত ২১ শে জুন থেকে শুরু করেছে ১৬ বছরের উপরে বয়সীদের টিকাদানের মূল কার্যক্রম।
শুরু থেকেই ভ্যাকসিন বাণিজ্য ও কূটনীতি চলছে সারা বিশ্বব্যাপী। কিন্তু জনস্বার্থে কোন দেশের ভ্যাকসিন বাণিজ্যের কাছে মাথা নত করেনি জাপান। বিশ্বের অন্যতম ধনাঢ্য এই দেশটির যেহেতু সামর্থের কোন ঘাটতি নেই। তাই সবার জন্য দুই ডোজ হিসাবে সব ভ্যাকসিনই ক্রয় করে মজুদ করেছে তারা। এক বছর যাবত পর্যবেক্ষণ করেছে বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন ভ্যাকসিন ব্যবহারের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া। অবশেষে নিজ দেশের জনগণের জন্য বেছে নিয়েছে ফাইজারের টিকা। অন্যান্য যত ভ্যাকসিন তারা ক্রয় করেছে, তা পর্যায়ক্রমে বন্ধু রাষ্ট্রগুলোকে উপঢৌকন হিসাবে দিয়ে দিচ্ছে।
জাপানের ওসাকা প্রিফেকসর (বিভাগ) থেকে ৪৫ কিলোমিটার দূরে ‘নোসে টাউন’ নামক স্থানে বাস করে সহপাঠী বন্ধু মাহবুব। এটা স্থানীয় প্রশাসনের সর্বনিম্ন স্তর। এর চেয়ে প্রত্যন্ত এলাকা জাপানে খুব কম আছে। গত ১২ জুলাই সকাল ১০:৪০ থেকে ১১টা পর্যন্ত ২০ মিনিট সময় ধার্য ছিল মাহবুবের টিকা গ্রহণের জন্য। গ্রামের একটা থিয়েটার হলে নির্দিষ্ট সময়ে হাজির হয় মাহবুব। স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরা একদিক থেকে ৬০ জনকে ৬০টা বুথে ঢুকিয়ে দিল। ২০ মিনিটের মধ্যে ভ্যাকসিন দেয়া শেষ করে এই ৬০ জনকে আরেক দিক থেকে বের করে দিল। নতুন করে ৬০ জন এসে ঢুকে গেল ওই বুথগুলিতে। বুথের সামনের দিক থেকে এক গ্রুপ ঢুকল আর পেছন দিক থেকে টিকা নিয়ে এক গ্রুপ বেরিয়ে গেল। দুই গ্রুপের কারো সাথে কারো দেখা হল না। টিকাদান কেন্দ্রে যাতে সময় নষ্ট না হয়, তার জন্য গ্রহণ করা হয় এই বিশেষ ব্যবস্থা।
এভাবেই সুশৃঙ্খলভাবে চলছে জাপানের স্বাস্থ্য বিভাগের ভ্যাকসিন কার্যক্রম। ইতিপূর্বে সবার বাড়িতে বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছে তথ্য ফরম ও টিকাদান সময়সূচি। সূর্যোদয়ের দেশ জাপান। শিক্ষা, সংস্কৃতি ও শৃঙ্খলার দেশ জাপান। এদের কাছ থেকে সত্যিই অনেক কিছু শিক্ষণীয় আছে।
[লেখক দৈনিক ইত্তেফাক ও The New Nation পত্রিকার প্রাক্তন বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার, বর্তমানে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এবং সাবেক ডেপুটি এটর্নি জেনারেল।]
কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন দেয়া শুরু করতে বেশ দেরি করেছে জাপান। এ নিয়ে সারা বিশ্বে যথেষ্ট সমালোচনাও হয়েছে। কিন্তু সবকিছু নীরবে সহ্য করেছে তারা। কোন সমালোচনারই জবাব দিতে যায়নি। মাঝে-মধ্যে বিচ্ছিন্নভাবে ৬৫ বছরের উপরে বয়স এমন কিছু সিনিয়র সিটিজেনকে টিকা দিয়েছে। আর তার মধ্যে গ্রহণ করেছে সর্বাত্মক প্রস্তুতি। গত ২১ শে জুন থেকে শুরু করেছে ১৬ বছরের উপরে বয়সীদের টিকাদানের মূল কার্যক্রম।
শুরু থেকেই ভ্যাকসিন বাণিজ্য ও কূটনীতি চলছে সারা বিশ্বব্যাপী। কিন্তু জনস্বার্থে কোন দেশের ভ্যাকসিন বাণিজ্যের কাছে মাথা নত করেনি জাপান। বিশ্বের অন্যতম ধনাঢ্য এই দেশটির যেহেতু সামর্থের কোন ঘাটতি নেই। তাই সবার জন্য দুই ডোজ হিসাবে সব ভ্যাকসিনই ক্রয় করে মজুদ করেছে তারা। এক বছর যাবত পর্যবেক্ষণ করেছে বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন ভ্যাকসিন ব্যবহারের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া। অবশেষে নিজ দেশের জনগণের জন্য বেছে নিয়েছে ফাইজারের টিকা। অন্যান্য যত ভ্যাকসিন তারা ক্রয় করেছে, তা পর্যায়ক্রমে বন্ধু রাষ্ট্রগুলোকে উপঢৌকন হিসাবে দিয়ে দিচ্ছে।
জাপানের ওসাকা প্রিফেকসর (বিভাগ) থেকে ৪৫ কিলোমিটার দূরে ‘নোসে টাউন’ নামক স্থানে বাস করে সহপাঠী বন্ধু মাহবুব। এটা স্থানীয় প্রশাসনের সর্বনিম্ন স্তর। এর চেয়ে প্রত্যন্ত এলাকা জাপানে খুব কম আছে। গত ১২ জুলাই সকাল ১০:৪০ থেকে ১১টা পর্যন্ত ২০ মিনিট সময় ধার্য ছিল মাহবুবের টিকা গ্রহণের জন্য। গ্রামের একটা থিয়েটার হলে নির্দিষ্ট সময়ে হাজির হয় মাহবুব। স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরা একদিক থেকে ৬০ জনকে ৬০টা বুথে ঢুকিয়ে দিল। ২০ মিনিটের মধ্যে ভ্যাকসিন দেয়া শেষ করে এই ৬০ জনকে আরেক দিক থেকে বের করে দিল। নতুন করে ৬০ জন এসে ঢুকে গেল ওই বুথগুলিতে। বুথের সামনের দিক থেকে এক গ্রুপ ঢুকল আর পেছন দিক থেকে টিকা নিয়ে এক গ্রুপ বেরিয়ে গেল। দুই গ্রুপের কারো সাথে কারো দেখা হল না। টিকাদান কেন্দ্রে যাতে সময় নষ্ট না হয়, তার জন্য গ্রহণ করা হয় এই বিশেষ ব্যবস্থা।
এভাবেই সুশৃঙ্খলভাবে চলছে জাপানের স্বাস্থ্য বিভাগের ভ্যাকসিন কার্যক্রম। ইতিপূর্বে সবার বাড়িতে বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছে তথ্য ফরম ও টিকাদান সময়সূচি। সূর্যোদয়ের দেশ জাপান। শিক্ষা, সংস্কৃতি ও শৃঙ্খলার দেশ জাপান। এদের কাছ থেকে সত্যিই অনেক কিছু শিক্ষণীয় আছে।
[লেখক দৈনিক ইত্তেফাক ও The New Nation পত্রিকার প্রাক্তন বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার, বর্তমানে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এবং সাবেক ডেপুটি এটর্নি জেনারেল।]